জুমবাংলা ডেস্ক : প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের ছয় কর্মকর্তার জন্য আইফোন ১৬ প্রো মাক্স কেনার জন্য অর্থ বিভাগকে অর্থ ছাড়ের নির্দেশনা সংক্রান্ত একটি পত্র সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। যা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। এবার আইফোন কেনার বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ।
দেশের বেসরকারি একটি টিভি চ্যানেলকে তিনি বলেন, ‘প্রথমত বলছি এটা গিফট নয়, এগুলো সরকার ক্রয় করেছে। আমরা সরকারের প্রেস উইংয়ে কাজ করি। আমাদের কাজের ধরণটা কি তা অনেকেই জানেন। প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে কাতার ভিজিট, সব শেষ ইতালি সফর এসব কিছুর ভিডিও ছবি কিন্তু আমরা সরবরাহ করেছি। এগুলো কিন্তু আমাদের এই ফোন দিয়েই তোলা। আমরা এই ফোনগুলো সেই কাজেই ব্যবহার করি।’
ফয়েজ আহম্মদ বলেন, ‘আমাদের কাজে যে ধরনের ক্যামেরা বা ভারী ইক্যুপমেন্টস থাকে, অনেক সময় দ্বিপাক্ষিক রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে বা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার কারণে সেগুলো অনুমোদন করা হয় না। তখন আমাদের এই ছোট ডিভাইজ ব্যবহার করতে হয়।’
‘এ ছাড়া আমরা ফোনে নানা ধরনের অপারেশন চালাই। আমাদের ফেসবুক পেজ, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে শুরু করে অনেক কিছু আমরা এখান থেকে অপারেট করি। এসব কিছুর সিকিউরিটি ইস্যু আছে। আর সিকিউরিটির জন্য আইফোন যে এখন পর্যন্ত সেরা তাতে কারও দ্বিমত নেই’, যোগ করেন প্রধান উপদেষ্টার এই প্রেস সচিব।
এ সময় প্রশ্ন রেখে ফয়েজ আহম্মদ বলেন, ‘আমাদের সরকার যে ফোনটি দিয়েছে এটা কার? এটা নাগরিকদের। এটা দিয়ে আমরা যে সেবাটা দেই সেটা নাগরিকদেরই দেই। আমরা সরকারের বিভিন্ন কাজের তথ্য এই ফোনের মাধ্যমে গণমাধ্যমকে দেই। আমরা রাত দিন এটা দিয়ে কাজ করি, গাড়িতে থাকা অবস্থাতে কাজ করি, পথে ঘাটে কাজ করি। ফোনে এ কাজগুলো করা খুবই সহজ। আমরা গণমাধ্যমকে দেই, গণমাধ্যমের মাধ্যমে তা নাগরিকরা জানে। অর্থাৎ নগরিকের টাকায় যে ফোনটা কেনা এটার সেবা একপ্রকার নাগরিকরাই পেয়ে থাকেন।’
তিনি বলেন, ‘এই ফোনটা কিন্তু আমাদের দিয়ে দেওয়া হয়নি। আমাদেরকে শুধু আইফোন না, সরকার আমাদের ব্যবহারের জন্য গাড়ি দেয়, কম্পিউটার দেয়, ল্যাপটপ দেয়। এগুলো আমাদের দিয়ে দিয়েছে বিষয়টা এমন নয়, এগুলো সরকারের কেনা জিনিস আমাদের যখন দায়িত্ব শেষ হবে, আমাদের চাকরির মেয়াদ শেষ হবে এগুলো আমরা রেখে যাব। যদিও আমাদের আগে যারা ছিলেন তাদের কিছুই আমরা পাইনি। কিন্তু আমরা এটা নিশ্চিত করতে পারি যে, আমরা সব রেখে যাব, পরে যারা আসবেন তারা এগুলো রাষ্ট্রের জিনিস, রাষ্ট্রের প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারবেন।’
ফয়েজ আহম্মদ বলেন, ‘রাষ্ট্রের কাজে যেটি লাগবে তা আমি নিজেরটাও ব্যবহার করব না, আবার অন্যের থেকে অন্যায়ভাবেও নেব না। এটা রাষ্ট্রকেই দিতে হবে। আর রাষ্ট্র যদি তার কাজের জন্য বাজারে থাকা সেরাটা দেয় তবে নাগরিক সেরা সেবাটাই পাবে। সরকার আমাদের সেটা দিয়েছে, আমরাও সেরা সেবা দেওয়ার চেষ্টা করব।’
উল্লেখ্য, গত ৭ এপ্রিল স্বাক্ষরিত ওই পত্রে লেখা রয়েছে ‘নীতিমালা অনুযায়ী ছয়জন কর্মকর্তার আইফোন সিক্সটিন প্রো ম্যাক্স সেট এর প্রাধিকার। তাদের কাজের গুরুত্ব বিবেচনা করে প্রধান উপদেষ্টার সানুগ্রহ অনুমোদন সাপেক্ষে ছয়জন কর্মকর্তা আইফোন সিক্সটিন প্রো ম্যাক্স সেট সরবরাহের আর্থিক অনুমোদন প্রদানের জন্য অনুরোধ করা হলো।’
যাদের জন্য কেনা হচ্ছে আইফোন ১৬ প্রো ম্যাক্স-
প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও অপূর্ব জাহাঙ্গীর, সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ, প্রেস সচিব আশরোভা ইমদাদ, সুচিস্মিতা তিথি ও নাঈম আলী।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।