আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ২০১৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দেয়ায় সাইফুল্লাহ সাফির ডান হাতের তর্জনী আঙুল কেটে ফেলে আফগানিস্তানের তালেবান জঙ্গিরা। আঙুল কাটলেও তালেবান জঙ্গিরা দেশটির এই ব্যবসায়ীকে ভোটদান থেকে বিরত রাখতে পারেনি।
তালেবানের হুমকি উড়িয়ে শনিবার আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দেয়ায় প্রশংসায় ভাসছেন সাফি। ৩৮ বছর বয়সী এই ব্যক্তির একটি ছবি শনিবার টুইটারে ভাইরাল হয়েছে। এতে দেখা যায়, তার ডান হাতের তর্জনী আঙুলের অর্ধেক অংশ নেই। কিন্তু বাম হাতের তর্জনী আঙুলে ভোটের কালি। এই ছবিতে তিনি ভোট দিয়েছেন বলে বোঝাতে চেয়েছেন।
ভোটকেন্দ্রে তালেবান জঙ্গিদের হামলার হুমকি উপেক্ষা করে রোববার আফগানরা দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন। পশ্চিমা বিশ্ব সমর্থিত দেশটির ক্ষমতাসীন সরকারের গণতন্ত্র রক্ষার সামর্থ্যের বড় পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে আফগানিস্তানের এই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে।
২০০১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট আফগানিস্তানে তালেবান শাসনের অবসান ঘটায়। পতনের পর অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়লেও বর্তমানে তালেবান জঙ্গিরা বেশ শক্তিশালী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর থেকেই দেশটির বিভিন্ন প্রান্তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর বেশ কয়েকটি বড়সড় হামলা চালিয়েছে তালেবান।
২০১৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় ভোট দেয়ায় দেশটিতে অন্তত ছয়জনের আঙুল কাটে তালেবান জঙ্গিরা। সাইফুল্লাহ তাদের একজন; তিনি বলেন, ‘আমি জানি, এটা বেদনাদায়ক এক অভিজ্ঞতা। কিন্তু এটা শুধুমাত্র একটি আঙুল। এটা যখন আমার সন্তান ও দেশের ভবিষ্যতের বিষয়; তখন আমি কখনোই পিছপা হব না। এমনকি যদি আমার পুরো হাত কেটে ফেলা হয়।’
২০১৪ সালে ভোটদানের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে সাইফুল্লাহ বলেন। ভোটদানের একদিন পর রাজধানী কাবুল থেকে পূর্বাঞ্চলের খোস্ত শহরে গিয়েছিলেন তিনি। সেসময়ও তার আঙুলে ভোটের কালির দাগ ছিল।
‘তালেবান জঙ্গিরা আমাকে গাড়ির ভেতর থেকে বের করে রাস্তার পাশে নিয়ে আসে। সেখানে তালেবান একটি আদালত বসিয়েছিল। তাদের সতর্কতা সত্ত্বেও কেন আমি নির্বাচনে ভোট দিয়েছি; সেটি জানিয়ে তারা আমার ডানহাতের তর্জনী আঙুলের অর্ধেক কেটে ফেলে।’
সাইফুল্লাহ বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে ভোট না দেয়ার জন্য আমাকে অনুরোধ করেছেন পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু আমি পরিবারের সবাইকে ভোট দেয়ার জন্য কেন্দ্রে নিয়ে গিয়েছি।’
প্রতিরোধের এই সাহসিকতা আফগানিস্তানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রশংসিত হচ্ছে; বিশেষ করে যারা গণতন্ত্রের শেষ দেখেছিলেন, তালেবানের শাসন ফিরে আসছে বলে ভীত ছিলেন তাদের কাছে। কাবুলের এক টুইটার ব্যবহারকারী টুইটে লিখেছেন, গণতন্ত্রের সমর্থনে এবং তালেবানি ব্যবস্থাকে নাকচ করতে সাইফুল্লাহ ভোট দিয়েছেন। সূত্র : রয়টার্স।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।