জুমবাংলা ডেস্ক: নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘন করে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিজয় কামনা করে পক্ষপাতমূলক আচরণের কারণে চট্টগ্রামের আলোচিত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানকে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
রবিবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা। এ সংক্রান্ত সংশোধিত একটি প্রজ্ঞাপনও জারি করেছে ইসি।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিসি মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের বিরুদ্ধে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে গত শনিবার অনুরোধ জানিয়ে আইনি নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান।
নির্বাচন কমিশনের আদেশক্রমে নির্বাচন পরিচালনা-২ অধিশাখার উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত রোববার সেই প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে- নির্বাচন কমিশন জেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা ২০১৬ এর বিধি ৫ অনুযায়ী রিটার্নিং অফিসার জেলা প্রশাসক, চট্টগ্রাম এর পরিবর্তে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম অঞ্চল চট্টগ্রামকে রিটার্নিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ করছে।
সাংবাদিকদের নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেন, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমানকে রিটার্নিং কর্মকর্তার পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে অন্য কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া কঠিন। এ জন্য তদন্ত হতে হবে। এটা লঘু শাস্তি নয়। এ মুহূর্তে করণীয় একটাই, তাঁকে সরিয়ে দেওয়া।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য জেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিনে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী এটিএম পেয়ারুল ইসলাম নেতাকর্মীদের নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান। সে সময় রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ মমিনুর রহমান প্রার্থীর বিজয় কামনা করে দলীয় নেতাদের সঙ্গে মোনাজাতে অংশ নেন। একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে নিজের পাশে বসিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশ্যে বক্তব্যও রাখেন তিনি। সেই বক্তব্যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবার যেন আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়, সে জন্য বিএনপি-জামায়াতেরও দোয়া কামনা করেন তিনি। গত ১৬ সেপ্টেম্বর ‘আ’লীগের বিজয়ের জন্য বিএনপি-জামায়াতেরও দোয়া করা উচিত’- শিরোনামে সমকালের শেষ পৃষ্ঠায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। রিটার্নিং কর্মকর্তার এমন আচরণে চট্টগ্রামে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। তার এমন বক্তব্যে নির্বাচনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কায় পড়েছেন প্রার্থীসহ বিশিষ্টজনেরা।
গণমাধ্যমে আসা এমন সংবাদ দৃষ্টিগোচর হয় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খানের। নোটিশে তিনি উল্লেখ করেন- একজন রিটার্নিং কর্মকর্তার (ডিসি) মাধ্যমে ২০১৬ সালের জেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা ৭৯, ৮০ ও ৮১ বিধির লঙ্ঘন হওয়া সত্যেও দায়িত্বপ্রাপ্তরা সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন, যা আপনাদের অর্পিত দায়িত্ব ও কর্তব্যের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। নোটিশ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ডিসির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থ হলে নোটিশদাতা আদালতের শরণাপন্ন হতে বাধ্য হবেন।
১৫ সেপ্টেম্বর দেয়া বক্তব্যে মমিনুর রহমান বলেন, আমি মনে করি বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতা স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে যদি থাকে, তাহলে আমাদের দেশে আওয়ামী লীগ বলি, বিএনপি বলি, জামায়াত বলি, সবাই নিরাপদ থাকবে। শেখ হাসিনা যেন আবারও ক্ষমতায় আসেন সেজন্য বিএনপি-জামায়াতেরও এখন দোয়া করা উচিত।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।