লাইফস্টাইল ডেস্ক : ইউরিক অ্যাসিড ধরা পড়েছে? তা হলে সাবধান হয়ে যাওয়াই ভাল। এই রোগটি ধরা পড়লে সাধের অনেক খাবারই জীবন থেকে বর্জন করতে হয়। মুসুর ডাল তো বটেই, রবিবারের দুপুরে জমিয়ে পাঁঠার মাংস খাওয়াও বাদ হয়ের যায় জীবন থেকে। ওষুধ খেতেই হয় নিয়মমতো, না খেলেই অনিবার্য গাঁটের ব্যথা। বিশ্বের প্রায় সাড়ে ৪ কোটি মানুষ ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যায় ভুগছেন। গাঁটের ব্যথায় শয্যাশায়ী হয়ে দিনও কাটাচ্ছেন অনেকে। ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে না থাকলে কিডনিও বিকল হতে শুরু করবে।
অনেকেই জানেন না, ইউরিক অ্যাসিড বাড়তে থাকলে তার সঙ্গে আরও কিছু রোগও তলে তলে বাসা বাঁধতে শুরু করবে। কী কী সেই রোগ জেনে নিন।
আর্থ্রাইটিসের ব্যথা
আমেরিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ আর্থ্রারাইটিস অ্যান্ড মাস্কিউলোস্কেলিটাল ডিজ়িজ় থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গাউট বা গেঁটে বাত তখনই হয়, যখন শরীরের বিভিন্ন অংশে ইউরিক অ্যাসিড জমা হতে থাকে। এর থেকে অস্থিসন্ধিগুলিতে প্রদাহ শুরু হয়। গাঁটে গাঁটে ব্যথা হল, শরীরের গ্রন্থিগুলি ফুলে ওঠে। ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে না রাখলে, বাতের ব্যথা জীবন দুর্বিষহ করে দেবে।
কিডনিতে পাথর
ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে তা থেকে কিডনিতে পাথর জমতে পারে। তলপেটে ব্যথা, প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত আসতে পারে। প্রস্রাবের সময়ে জ্বালাযন্ত্রণা হবে। শরীরে এই রোগ ধরা পড়লে খেয়াল রাখতে হবে, এমন খাবার খাওয়া চলবে না, যাতে ওজন বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত জল তো খেতেই হয়। আর নিয়ম করে ওষুধ খেয়ে যেতে হয়।
হাইপারটেনশন
শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা অনেকটা বেড়ে গেল উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা হতে পারে। যা থেকে কিডনি অচল হয়ে যেতে পারে। শরীরের রক্তজালিকাগুলি নষ্ট হতে পারে। রক্ত চলাচলে বাধা আসতে পারে।
টাইপ ২ ডায়াবিটিস
ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়লে তা ইনসুলিন হরমোনের ক্ষরণে তারতম্য ঘটাতে পারে। ইউরিক অ্যাসিড যাঁদের অনিয়ন্ত্রিত, তাঁদের টাইপ ২ ডায়াবিটিসের ঝুঁকি বাড়ে।
ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখতে কী করবেন?
১. বেশি করে জল খান। এ ধরনের অসুখে শরীর আর্দ্র রাখা দরকার।
২. ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খান। এতে শরীর সুস্থ থাকবে।
৩. বেরিজাতীয় ফল বেশি করে খান। ব্লুবেরি, স্ট্রবেরির দিয়ে শরবত বানিয়ে নিতে পারেন। নিয়ন্ত্রণে থাকবে ‘হাইপারইউরিসেমিয়া’।
৪. অফিস হোক বা বাড়িতে, অনেকেই ক্লান্তি কাটাতে কফির কাপে চুমুক দেন। ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়লে কিন্তু কফি খাওয়ার উপর রাশ টানতে হবে।
৫. মদ্যপানের অভ্যাস আছে কি? ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখতে গেলে এই অভ্যাস ছাড়তেই হবে। নিয়মিত মদ্যপান করলে ইউরিক অ্যাসিড বাড়তে বাধ্য।
সারা দেশে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে খোস-পাঁচড়া, লক্ষণ ও চিকিৎসা
জেনে রাখুন:
১. ইউরিক অ্যাসিড বেশি হলে কী খাবার এড়ানো উচিত?
মুসুর ডাল, লাল মাংস, বেশি প্রোটিনযুক্ত খাবার ও অ্যালকোহল এড়ানো উচিত। এরা ইউরিক অ্যাসিড বাড়াতে সহায়ক।
২. ইউরিক অ্যাসিড কিডনিতে কী ধরনের প্রভাব ফেলে?
এটি কিডনিতে পাথর তৈরি করতে পারে, প্রস্রাবে জ্বালা ও রক্ত দেখা দিতে পারে এবং কিডনির কার্যক্ষমতা হ্রাস পায়।
৩. ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে ডায়াবিটিসের ঝুঁকি কেন বাড়ে?
ইউরিক অ্যাসিড ইনসুলিন সংবেদনশীলতা কমিয়ে দেয়, যা টাইপ ২ ডায়াবিটিসের সম্ভাবনা বাড়ায়।
৪. ইউরিক অ্যাসিড কমাতে ভিটামিন সি কীভাবে সাহায্য করে?
ভিটামিন সি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে ও শরীরে অতিরিক্ত অ্যাসিড নিঃসরণে সাহায্য করে।
৫. কি পরিমাণ পানি পান করা উচিত ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখতে?
দিনে অন্তত ৮–১০ গ্লাস পানি পান করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যাতে শরীর থেকে ইউরিক অ্যাসিড সহজে বেরিয়ে যায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।