ব্যাটার দাঁড়িয়ে আছেন। চারপাশে ফিল্ডাররা প্রস্তুত। আম্পায়ার তীক্ষ্ম চোখে খেয়াল করছেন সবকিছু। ফাস্ট বোলার ছুটে আসছেন। বল বেরিয়ে গেল হাত থেকে, গড়পড়তা ঘণ্টায় ১৩২ কিমি বেগে ড্রপ খেল পিচের মাঝখান থেকে খানিকটা সামনে। শর্ট বল। বলে বাউন্স ছিল, লাফিয়ে উঠে পড়ল অনেকটা ওপরে।
ব্যাটার অনেক কষ্ট করে মারার চেষ্টা করলেন না। আলতো করে ব্যাট ছুঁইয়ে দিয়ে হালকা বদলে দিলেন বলের গতি। আপারকাট। উইকেটকিপারের কাঁধের ওপর দিয়ে বল ছুটে গেল, ড্রপ খেল বাউন্ডারির একটু সামনে, তারপর পেরিয়ে গেল বাউন্ডারি। আম্পায়ার ডানে-বাঁয়ে হাত নাড়িয়ে সংকেত দিলেন—চার।
এত বড় করে এই ঘটনা বর্ণনা করার কারণটা হয়তো বুঝতে পারছেন শিরোনাম থেকেই। হ্যাঁ, ঠিক এভাবেই কাজ করে গ্র্যাভিটি অ্যাসিস্ট, যার আরেকটু সুন্দর নাম স্লিংশট। ব্যবহারিকভাবে এর কোনো বাংলা নাম নেই। তবে আমরা একে ‘মহাকর্ষীয় সহায়তা’ বলতেই পারি। বিষয়টা তা-ই—কোনো গ্রহ বা উপগ্রহের মতো মহাজাগতিক বস্তুর সহায়তা নেয় নভোযানগুলো, সেই গতি ব্যবহার করে সামনে ছোট আরও দ্রুত গতিতে, অথবা দিক পাল্টায়, কিংবা গতি কমিয়ে নেয় প্রয়োজনমতো।
কাজটা করার পেছনে মূল লক্ষ্য একটাই—অল্প জ্বালানিতে অনেকটা পথ পাড়ি দেওয়া এবং সে জন্য প্রয়োজনীয় গতি তোলা। কথাটা আরও সঠিকভাবে বললে বলা উচিত, লক্ষ্যে পৌঁছাতে গতি বা দিক পাল্টে নেওয়া মহাজাগতিক কোনো বস্তুর সহায়তায়।
এ কাজ মানুষ অনেক আগে থেকেই করে আসছে। ইতিহাসে প্রথম গ্র্যাভিটি অ্যাসিস্ট বা মহাকর্ষীয় সহায়তা নেয় সোভিয়েত নভোযান লুনা ৩। চাঁদের মহাকর্ষ ব্যবহার করে এর উল্টো যে পাশটি কখনোই পৃথিবী থেকে দেখা যায় না, তার ছবি তোলে নভোযানটি। ইতিহাসখ্যাত মহাকর্ষীয় সহায়তা নিয়েছে ভয়েজার ১ ও ২।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।