জুমবাংলা ডেস্ক : সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় ইভটিজিংকে কেন্দ্র করে বখাটেদের ধারাল অস্ত্রের আঘাতে একটি হিন্দু পরিবারের নারী ও পুরুষসহ আটজন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে দুইজন স্কুলছাত্রী ও একজন স্কুলছাত্র রয়েছে।
বুধবার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে বড়দল দক্ষিণ ইউনিয়নের টাকাটুকিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, একই ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী টুকেরগাঁও গ্রামের মো. মুক্তারের ছেলে কাশেম মিয়া, বিল্লালের ছেলে মুসা মিয়া ও পাভেল দীর্ঘদিন ধরে হিন্দু সম্প্রদায়ের দুটি কিশোরীকে স্কুলে আসা যাওয়ার পথে তাদের গতিরোধ করে নানাভাবে কুপ্রস্তাব দিয়ে ইভটিজিং করে আসছিল। তাদের এমন কর্মকাণ্ডে কিশোরীদের পরিবার তাদের স্কুলে আসা যাওয়া বন্ধ করে দেয়। কিন্তু তাতেও রক্ষা হয়নি। বাড়িতে এসেেই ওই কিশোরীদের বিরক্ত করে আসছিল তারা। এ নিয়ে এলাকায় সালিশ বৈঠক হলেও কোনো ধরনের সুরাহা হয়নি। এ ইভটিজিংকে কেন্দ্র করে দুপুরে পার্শ্ববর্তী টুকেরগাঁও গ্রামের মো. মুক্তার হোসেন, তার ছেলে কাশেম মিয়া, বিল্লাল হোসেন, তার ছেলে মুসা মিয়া, পাভেল মিয়া, শহীদ মিয়া ও ফালু মিয়ার নেতৃত্বে ২০-৩০ জন দেশীয় ও ধারাল অস্ত্র নিয়ে বাছিন্দ্র বর্মণের বাড়িতে হামলা চালিয়ে একই পরিবারের আটজন সদস্যকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করেন।
আহতরা হলেন -টাকাটুকিয়া গ্রামের বাছিন্দ্র বর্মণ (৪৪), তার সহধর্মিণী বিউটি বর্মণ (৪০), তার সহোদর লজিন বর্মণ, তাদের ছেলে তাহিরপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র বাবলু বর্মণ (১৬), মেয়ে সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী পপি বর্মণ, একই বিদ্যালয়ের বাছিন্দ্র বর্মণের ভাতিজী পলি বর্মণ (১৪) ও সত্যন্দ্র বর্মণ।
আহতদের তাৎক্ষণিক তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হলে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। বাছিন্দ্র বর্মণ, তার সহধর্মিণী বিউটি বর্মণ ও ছেলে বাবলু বর্মণের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদেরকে সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে আহতরা সবাই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। খবর পেয়ে তাহিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আব্দুল লতিফ তরফদারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে যান।
এ দিকে খবর পেয়ে জেলা সদর হাসপাতালে ছুটে আসেন তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট বিমান কান্তি রায়।
এ ব্যাপারে তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, এ জেলায় সম্প্রীতির বন্ধন যুগ যুগ ধরে। এখানে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই। কিন্তু এ টুকেরগাঁও গ্রামের কিছু বখাটেরা টাকাটুকিয়া গ্রামের দুটি নিরীহ হিন্দু মেয়েদের ইভিটিজিং করার কারণে তাদের পড়াশুনা বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু তারপরেও ওই বখাটে যুবকরা মেয়েদের বাড়িতে এসেও বখাটেপনা করত। এর প্রতিবাদ করায় আজকে এসে হিন্দু পরিবারের বাড়িঘরে হামলা চালিয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক।
তিনি তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশনা দিয়েছেন তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।
এ ব্যাপারে তাহিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আব্দুল লতিফ তরফদার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, অভিযোগ পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।