জুমবাংলা ডেস্ক: মধ্যপ্রাচ্যে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জন, দীর্ঘমেয়াদি শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং ইসরাইল ও আমেরিকার সাথে আরববিশ্বের বিরোধ ও দ্বন্দ্বের চিরস্থায়ী অবসানের ক্ষেত্রে ইসরাইল-ফিলিস্তিন সমস্যার চিরস্থায়ী একটা সমাধান হওয়া সে খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তা বিশ্বের রাজনীতি সচেতন সব মানুষই বোধহয় কমবেশি জানেন। বিশেষ করে ‘ইসরাইল বনাম আরববিশ্ব’ মনোভাব বা দ্বন্দ্ব আরবি ভাষার ও আরব ভূখন্ডের গন্ডি পেরিয়ে সময়ের সাথে ক্রমে যেভাবে ‘ইসরাইল বনাম মুসলিম বিশ্ব’ মনোভাব বা দ্বন্দ্ব হিসেবে রূপ ধারণ করেছে, তা একজন বাংলাদেশি মুসলমান হিসেবে সেই রাজনৈতিক প্রাথমিক জ্ঞান হওয়ার পর থেকেই সবার কাছে বেশ কৌতূহলপূর্ণ একটা বিষয়।
ইসরাইল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্বের ইতিহাস এবং তাতে একদিকে আমেরিকার সম্পৃক্ততা ও অন্যদিকে মুসলিম বিশ্বের সম্পৃক্ততার বিষয়টা সংক্ষিপ্তভাবে এখানে তুলে ধরা হবে। তৌরাত বা পুরানো বাইবেল অনুসারে বর্তমান ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের অংশবিশেষ নিয়ে গঠিত ‘ইসরায়েলি ভূমি’ (যাকে ইংরেজিতে ‘The land of Israel’ ও হিব্রু ভাষায় ‘Eretzyisrael’ বলা হয়) আব্রাহামিক ধর্মের আবির্ভাবের প্রায় শুরু থেকেই ইহুদিদের কাছে পুণ্যভূমি হিসেবে বিবেচিত।
তৌরাত অনুযায়ী ‘ইসরায়েলি ভূমি’ ইহুদিদের প্রতি ঈশ্বরের প্রতিশ্রুত ভূমি এবং ইহুদি ধর্মের ইতিহাস অনুযায়ী মুসা নবীর (আ.) আগমনের আগে ও পরে ইহুদিরা বংশানুক্রমে উক্ত এলাকায় বসবাস করে আসছিল। এমনকি, খন্ডকালের জন্য কখনও কখনও উক্ত এলাকা তাদের শাসনাধীনও ছিল। সপ্তম শতাব্দিতে আরব মুসলিম বাহিনী উক্ত এলাকা বিজয় করার পূর্বে এসেরিয়ান, ব্যাবিলনিয়ান,পারসিয়ান, গ্রিক, রোমান, স্যাসানিয়ান ও বাইজেন্টিন শাসককুল কর্তৃক উক্ত এলাকা শাসিত হয়।
এর মধ্যে ব্যাবিলনিয়ান শাসনকালীন উক্ত এলাকায় ইহুদিদের উপস্থিতি উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পায়। এছাড়া রোমান সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে ইহুদিদের সংঘটিত বিদ্রোহ (ইতিহাসে যা ‘বার কোখবা বিদ্রোহ’ তথা Bar kokhba revolt নামে পরিচিত) বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। যে বিদ্রোহের পরিণতিতে অসংখ্য ইহুদিকে অত্যাচার ও হত্যা করা হয় যা উক্ত এলাকায় ইহুদিদের উপস্থিতিকে পুনরায় উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস করে। অসংখ্য ইহুদি সে সময় ইউরোপে মাইগ্রেট (পরিযায়ন) করে।
অতঃপর সপ্তম শতাব্দি থেকে ষোড়শ শতাব্দি পর্যন্ত উমাইয়া, আব্বাসিয়া, মামলুক সুলতানাতসহ বিভিন্ন মুসলিম শাসকদের হাত ঘুরে অবশেষে উক্ত এলাকা ‘অটোম্যান এম্পায়ার’ তথা তার্কিশ সাম্রাজ্যের শাসনাধীনে আসে যারা অধুনা বিংশ শতাব্দি পর্যন্ত উক্ত এলাকা শাসন করে। বলাবাহুল্য, আরব বংশোদ্ভূত শাসককুল কর্তৃক উক্ত এলাকা সুদীর্ঘ সময় ধরে শাসিত হওয়ার কারণে আরবি ভাষা ও আরব সংস্কৃতি সেখানে বসবাসরত ইহুদিদের মাঝেও বিস্তৃতি লাভ করে। যে কারণে বর্তমান ইসরায়েলে ও ইসরায়েল কর্তৃক দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূমিতে আজও সম্ভবত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আরবিভাষী ইহুদি খুঁজে পাওয়া যাবে।প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ‘অটোম্যান এম্পায়ার’ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের কাছে পরাজিত হলে আরব অধ্যুষিত ফিলিস্তিন ব্রিটিশ প্রশাসনের আওতায় চলে আসে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।