পবিত্র ঈদুল আজহার বাকি আর মাত্র কয়েকটি দিন। কোরবানি ঈদ মানেই অন্যরকম ব্যস্ততা, পশু কোরবানি মাংস কাটাকাটি কাজের প্রচুর চাপ থাকে। ঈদে যেহেতু আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধব বেড়াতে আসেন। তাই ঈদের আগেই ঘর গুছিয়ে পরিপাটি করাটা জরুরি। ঈদের আগে ঘর সাজিয়ে-গুছিয়ে নেওয়া সম্পর্কে লিখেছেন তামিম হাসান
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা
সবার প্রথমে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করতে হবে। আপনি যেভাবেই সাজাতে চান না কেন প্রথমে ঘরকে পরিষ্কার করতে হবে। আর ঘর পরিষ্কার বলতে বোঝানো হচ্ছে ঘরের প্রতিটি জিনিস থেকে শুরু করে দেয়াল, জানালার গ্রিল, পর্দাসহ সাজসজ্জার বিভিন্ন জিনিসপত্র পরিষ্কার করতে হবে। ঘর পরিষ্কার না করে যেভাবেই ঘরকে সাজানো হোক না কেন ঘরের মধ্যে পরিপাটি বিষয়টা আসবে না এবং ঘরকে ফ্রেশ লাগবে না। প্রথমত ঘরের দেয়ালে জমে থাকা ময়লা ঝেড়ে নিন। বিছানায় পছন্দের চাদর বিছিয়ে নিন। সোফার কালারের সঙ্গে মিলিয়ে কভার পরাতে পারেন। বসার ঘরের কার্পেটটি হালকা রঙের হলে মানানসই হয়। এতে করে ঘর বেশ একটা অভিজাত চেহারা পাবে।
নতুন করে ঘর সাজানো
ঘরে তো সবই আছে তবু কীভাবে একটু ভিন্ন আঙ্গিকে নতুন করা যায়। কী কী কেনা যায়? যদি কেনার প্রসঙ্গে আসে সেই ক্ষেত্রে অবশ্যই তা নির্ভর করবে ঘরের আকার আয়তন এবং নিজেদের প্রয়োজন অনুযায়ী। এ ছাড়া ঘরের জিনিসপত্র ঘরের মধ্যেই অদল-বদল করে রাখা যায়। ঘরের জিনিসপত্র যদি অদল-বদল করা হয় এতে করে ঘরের আকার এবং আয়তন দেখতে অন্যরকম লাগে এবং ঘরকে বেশ নতুন মনে হয়।
ড্রয়িং রুম
সবার আগে সাজাতে হবে ড্রয়িং রুমকে। কারণ পরিবারের লোক থেকে শুরু করে আত্মীয়-স্বজন সবাই প্রথমে ভিড় জমাবে ড্রয়িং রুমের ভেতর। ঈদে টিভিতে বিশেষ অনুষ্ঠান দেখার জন্য সবাই একত্রিত হবে ড্রয়িং রুমেই। ড্রয়িং রুমকে অবশ্যই সুন্দর করে সাজাতে হবে। সে ক্ষেত্রে কুশন এবং পর্দার ব্যবহার ড্রইং রুমে বেশি দেখা যায়। দেয়ালে বিভিন্ন ধরনের পেইন্টিং, নিজেদের প্রিয় মুহূর্তের বাঁধাই করা ছবি ইত্যাদি দিয়ে আপনার সাধারণ ঘরকে দিতে পারেন নান্দনিকতার ছোঁয়া। তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের আঁকা ছবি (ফ্রেমসহ) এবং ওয়ালম্যাট লাগাতে পারেন। লম্বা ফুলদানি এবং দেয়ালে বিভিন্ন ধরনের স্ট্যান্ড ছাড়াও সাইড স্ট্যান্ড দিয়ে ড্রয়িং রুমকে সুন্দর করে সাজিয়ে তুলতে পারেন।
ডাইনিং টেবিল
ঈদুল ফিতর হোক কিংবা ঈদুল আজহা হোক। ঈদের মূল আকর্ষণ হিসেবে সবসময়ই ডাইনিং টেবিল থাকে। অতিথি আপ্যায়ন থেকে শুরু করে ঘরের মানুষ সবার জন্য যেখানে খাবার পরিবেশন করা হয় সেখানে একটু ভিন্নভাবে সাজানোটা আবশ্যক। সেই ডাইনিং টেবিলকে কীভাবে আকর্ষণীয় করা যায় তা নিয়ে অনেক জল্পনা-কল্পনা থাকে গৃহিণীদের। আপনার ডাইনিং টেবিল সাজানোর মাধ্যমেও আপনার সুন্দর রুচির প্রমাণ পাওয়া যায়। অবশ্যই ঈদের দিন তুলে রাখা ডিনার সেট কিংবা নতুন কেনা ডিনার সেট দিয়ে আমরা টেবিল সাজাতে পারি। এ ছাড়া টেবিলের মাঝে বিভিন্ন ধরনের ফুলদানি রাখতে পারি, টেবিলের মাঝে একটা শতরঞ্জি রাখা যায়, ডিনার সেট একটু উজ্জ্বল রঙের হলে বেশ আকর্ষণীয় লাগবে।
অন্দরের সাজসজ্জা
চলতি বছর ঈদুল আজহা অনুষ্ঠিত হবে গরমের মধ্যেই। যদিও বৃষ্টির আভাস রয়েছে। রোদ আর বৃষ্টিময় ঈদে বেডরুম বা শোবার ঘর সাজানোর ক্ষেত্রে প্রাধান্য দিন হালকা রঙের বিছানার চাদরকে। এক্ষেত্রে খাদি, সুতি, ভয়েল ইত্যাদি কাপড় বেছে নিতে পারেন। বাইরের রোদ এড়াতে জানালায় ভারী পর্দা ব্যবহার করতে পারেন। উজ্জ্বল রঙের পিলো কভার পরান বালিশকে। খাটের পাশের ছোট টেবিলে একটি কাঁচের বাটি বা পাত্রে তাজা ফুল রাখতে পারেন। এ ছাড়া ঘরের কোণায়, জানালার কিনারায় রাখতে পারেন ইনডোর প্ল্যান্ট।
ঘরে সবুজের সমারোহ
ইনডোর প্ল্যান্ট দিয়েই এখন ঘরের ভেতরটা সাজিয়ে নেওয়া যায়। বসার ঘরে সবুজের ছোঁয়া থাকলে যে কারও মনই ভালো হয়ে যায়। এজন্য ঘরে নানান রকমের ইনডোর প্ল্যান্ট রাখুন। ঘরের সৌন্দর্যচর্চায় সবুজ লতানো গাছ সবার নজর কাড়ে। ঘর এবং ঘরের বাইরের উভয় অংশকে সাজানোর কাজে মানি প্ল্যান্ট গাছ লাগতে পারেন। স্পাইডার প্ল্যান্টের সবুজ রঙা পাতার মাঝে সাদার মিশেল, সরু এই পাতাগুলো চ্যাপ্টা ও বেশ খানিকটা লম্বা। সহজেই গাছটি বেড়ে উঠতে সক্ষম, তাই ঘরের জন্য এই স্পাইডার প্ল্যান্ট বেশ উপযোগী। ঘরকে ছিমছামভাবে সাজাতে কিংবা আভিজাত্যের ছোঁয়া দিতে এই গাছের জুড়ি নেই।
দৃষ্টিনন্দন ফার্নগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে এই ফিশটেইল ফার্ন। এই ফার্নটি সহজেই ঘরে বেড়ে উঠতে পারে এবং সারা বছর এর সবুজ সতেজতার দেখা মেলে। মৃদু সূর্যের আলো আর অল্প পানি দরকার ফিশটেইল ফার্ন বেড়ে ওঠার জন্য। ঘর সাজানোর জন্য গাছের তালিকায় এটি যুক্ত করতে পারেন। ছোটখাটো গাছগুলো ঘরের শোভা বাড়াবে। প্রশান্তিও দেবে।
সৌখিন শোপিসের ব্যবহার
বাসার কোণায়, জুতার র্যাক, বেসিনের ওপরে ছোট দু-একটা শোপিস আপনার বাসার চেহারায় ভিন্ন রূপ দিতে পারে। বড় অ্যাকুরিয়াম দেখাশোনা করতে বেশ ঝামেলা হয়, তাই ছোট গ্লাসের জারে দু-একটি মাছ রাখতে পারেন। তাছাড়া সুন্দর দেখতে কোনো জারে একটু পানি দিয়ে ভাসিয়ে রাখতে পারেন পদ্মফুল। ব্লক, হাতের কাজ এবং ঘর সাজানোর সুন্দর সুন্দর সব আইটেমের জন্য আপনি যেতে পারেন আপনার কাছের শোপিস মার্কেটে।
আর যদি আপনি যদি ঢাকাবাসী হয়ে থাকেন নিউমার্কেট, তালতলা মার্কেট ও মৌচাক মার্কেটে যেতে পারেন। অনলাইনেও কিছু কিছু পেজ আছে যারা ভালো মানের এবং ভিন্নধর্মী প্রোডাক্ট রাখে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।