পৃথিবী তো সবকিছু নিজের দিকে একই শক্তিতে বা সমান শক্তিতে টানে। তাহলে একেক জিনিসের একেক রকম ওজন হয় কেন? পৃথিবী সবকিছুকে নিজের দিকে একই শক্তিতে টানে, এটা ঠিক। একে শক্তি না বলে বলব মাধ্যাকর্ষণজনিত ত্বরণ। বস্তুর ওজন শুধু এই টানের ওপর নির্ভর করে না।
ওজনের পার্থক্য হয় বস্তুর ভরের পার্থক্যের জন্য। ভর হলো কোনো বস্তুর ভেতরের পদার্থের পরিমাণ। ওজন হলো বস্তুর ভর ও পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণজনিত ত্বরণের গুণফল। ভর বেশি হলে তার ওজন বেশি হবে। কম হলে কম। এখন ধরা যাক, একটা ৫ টনের ট্রাক আর একটা ১ কেজি ওজনের বাটখারা।
এই দুই বস্তুর ওজনের পার্থক্য বেশি, কারণ ট্রাকের ভর বাটখারার ভরের চেয়ে অনেক বেশি। যদি মহাশূন্যের কোনো এলাকায় মহাকর্ষ বল কাজ না করে তাহলে তাদের ওজন শূন্য হয়ে যাবে, কারণ আমরা আগেই বলেছি, ওজন হলো বস্তুর ভর ও পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণজনিত ত্বরণের গুণফল। ত্বরণ শূন্য হলে তাদের গুণফলও শূন্য হয়ে যাবে এবং সে কারণে এক অর্থে সেই ট্রাক ও বাটখারার ওজন সমান হয়ে যাবে।
এখানে বিশেষভাবে বোঝার ব্যাপার হলো, বেশি ওজনের বস্তু ওপর থেকে বেশি দ্রুত নিচের দিকে পড়বে আর কম ওজনের বস্তু ধীরে পড়বে, এটা ভাবা ঠিক নয়। কোনো বস্তু ওপর থেকে দ্রুত না ধীরে পড়বে, তার সঙ্গে ওজনের কোনো সম্পর্ক নেই। এটা ইতালীয় বিজ্ঞানী গ্যালিলিও ১৫৮৯–১৫৯২ সালে প্রমাণ করেন।
কথিত আছে, পিসার হেলানো টাওয়ারের ওপর থেকে তিনি দুই ভিন্ন ভরের বস্তুকে নিচে ফেলে দেখিয়েছেন হালকা ও ভারী দুই বস্তুই সমান ত্বরণে নিচে পড়ছে। গ্যালিলিও এ রকম পরীক্ষা সত্যি সত্যি করেছিলেন কি না, তা নিয়ে দ্বিমত আছে। আসলে মূল কথা হলো বাতাসের বাধা না থাকলে হালকা–ভারী সব বস্তুই সমান ত্বরণে নিচে পড়বে। এটা গ্যালিলিও প্রমাণ করে গেছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।