নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: গাজীপুর জেলা শহরে প্রাণকেন্দ্রে জংদেবপুর জংশন। দিনরাত এ জংশনে থাকতো হাজারো যাত্রীর সমাগম। করোনার কারণে এ জংশনে এখন কোন ট্রেন থামে না। তাই জংশনে যাত্রীদের আনাগোনা নেই। করোনা জংশনটিকে করে দিয়েছে প্রাণহীন।
শিল্পশহর গাজীপুরে দেশের প্রায় সব জেলার লোক বাস করে। সড়ক পথের পাশাপাশি এ জেলার রেলপথগুলোও গুরুত্বপূর্ণ। রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দেশের উত্তর, উত্তর-পশ্চিমঞ্চলের, এমনকি ভারতগামী মৈত্রী ট্রেনও জয়দেবপুর জংশন হয়ে চলাচল করত। কম খরচে ও সময়ে ট্রেনে যাতায়ত করা যায় বলে এ জংশনে প্রায় সবসময় দেখা যেত হাজার হাজার যাত্রীর ভিড়। লোক সমাগম বেশি থাকায় জংশন ঘিরে দোকানপাট, রিকশাস্ট্যান্ড গড়ে উঠেছিল। কুলি, হকার, দিনমুজুরের কর্মচাঞ্চল্যে মুখর থাকতো ২৪ ঘণ্টা। থাকত রাত-দিন ব্যস্ততা। কিন্ত করোনা এ জংশনের সে ব্যস্ততা কেড়ে নিয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, জংশনের টিকিট কাউন্টার, বিশ্রামগার ফাঁকা। নেই কুলি বা হকার। জংশনের এখানে সেখানে স্থানীয় দু-চার জন গল্প করে বা আড্ডা দিয়ে সময় কাটাচ্ছেন। স্টেশনের দোকানপাট খোলা থাকলেও আগের মতো বিক্রি নেই বলে জানা গেছে।
জংশনের ভেতর উত্তর পাশে থাকা মান্নান স্টোরের কর্মচারী আরিফ জানায়, আগে সকাল ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত তার দোকান খোলা রাখা হতো। প্রতিদিন বিক্রি হতো ৫/৬ হাজার টাকা। করোনার কারণে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীরা জংশনে আসেন না। স্থানীয়রা এ পথে পাশ্ববর্তী জয়দেবপুর বাজারে যাওয়া আসা করে। এখন সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিক্রি হয় আটশ থেকে এক হাজর টাকার মতো আর ক্রেতা স্থানীয়রা।
গাজীপুর প্যাসেঞ্জারস কমিউনিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সিরাজ উদ দৌলা জানান, আগে জয়দেবপুর জংশন দিয়ে আন্তঃনগর, মেইল ও লোকাল এবং মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনসহ প্রতিদিন (২৪ ঘণ্টায়) গড়ে ৭০/৭২টি ট্রেন, অর্থাৎ প্রতি ঘণ্টায় গড়ে ৩টা ট্রেন চলাচল করত। জংশনে এলে অল্প সময়ের ব্যবধানে ট্রেন পাওয়া যেত, তাই সব সময়ই জংশনে যাত্রীদের ভিড় লেগে থাকত।
তিনি বলেন, জংশন দিয়ে আগে ১৫/১৬ হাজার যাত্রী যাতায়ত করতেন। এর মধ্যে মাসিক টিকিটধারী যাত্রী ছিল চার হাজারের বেশি।
জয়দেবপুর জংশনের সিনিয়র স্টেশন মাস্টার মো. শাহজাহান জানান, অন্যসময় প্রতিদিন এ জংশন দিয়ে আপ-ডাউন মিলিয়ে ৭০টি ট্রেন চলাচল করত। বর্তমানে এ জংশন দিয়ে ১১টি চলাচল করে। তবে কোন ট্রেনই এ স্টেশনের স্টপেজ দেয় না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।