আন্তর্জাতিক ডেস্ক : করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তহবিল সংগ্রহে সাত মাসের বেতন দান করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান। করোনা মোকাবিলায় দেশজুড়ে ন্যাশনাল সলিডারিটি ক্যাম্পেইনেরও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। ৩০ মার্চ সোমবার এ ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবেই বেতন দান করলেন তিনি।
জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এরদোয়ান বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমার সাত মাসের বেতন দানের মাধ্যমে এই প্রচারণা শুরু করছি।
তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, এরদোয়ানের মন্ত্রিসভার সদস্য এবং দেশটির আইনপ্রণেতারাও ইতোমধ্যেই এ তহবিলে ৫ দশমিক ২ মিলিয়ন তার্কিশ লিরা দান করেছেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ দাঁড়ায় ছয় কোটি ৭৪ লাখ আট হাজার ৯২ টাকা।
এরদোয়ান বলেন, করোনা মোকাবিলায় নেওয়া পদক্ষেপের ফলে নিম্ন আয়ের মানুষ অর্থনৈতিকভাবে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের বাড়তি সহায়তা দেওয়াই এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য।
যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তুরস্কে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজার ৮২৭। এর মধ্যে ১৬৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসা নেওয়ার পর সুস্থ হয়েছে উঠেছে ১৬২ জন। ভাইরাসটির সংক্রমণ মোকাবিলায় রাজধানী আঙ্কারায় স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, ক্যাফে, বার ইত্যাদি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলো বাতিল করা হয়েছে।
এক শহর থেকে অন্য শহরে না যেতে নাগরিকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একান্ত প্রয়োজনে যেতে হলে স্থানীয় গভর্নরের অনুমতি নিতে হবে। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে দর্শনার্থীদের জন্য পিকনিক স্পট, বনাঞ্চল ও প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনাগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এসব বিধিনিষেধ ঠিক কতদিন পর্যন্ত কার্যকর থাকবে তার কোনও সময়সীমা ঘোষণা করা হয়নি।
তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান বলেছেন, এসব পদক্ষেপের সময়সীমা নির্ভর করবে আমাদের জনগণ কতটা দৃঢ়ভাবে এসব নির্দেশনা মেনে চলে তার ওপর। এ সময় নাগরিকদের ধৈর্য ধারণ ও ত্যাগ সাধনের পরামর্শ দেন এরদোয়ান।
তিনি বলেন, এসব নির্দেশনা (সরকারি নির্দেশনাবলি) কঠোরভাবে মেনে চললে আল্লাহ তাআলার ইচ্ছায় আমরা খুব কম সময়ে এই সংকট কাটিয়ে উঠবো।
তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, সামনে উজ্জ্বল দিন অপেক্ষা করছে যদি আমরা নির্দেশনা মেনে চলি, সতর্ক ও সাবধান থাকি। সব নাগরিক আমাদের কাছে সমান। তাই আমরা বলছি, ‘ঘরে থাকো, তুরস্ক।’
তুর্কি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, এখন থেকে বাজারে শুধু অপরিহার্য খাদ্যসামগ্রী বিক্রি করা হবে। ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ কমাতে খোলা অবস্থায় থাকা ফল ও শাকসবজি প্যাকেটজাত করে রাখতে হবে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত পোশাক, খেলনা, ব্যাগ ইত্যাদি বিক্রি বন্ধ থাকবে।
তুর্কি স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফাহরেটিন কোকা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস শনাক্তের জন্য তার দেশে ১০ লাখেরও বেশি কিট রয়েছে। তিনি জানান, আক্রান্তদের অবস্থান প্রকাশ করছে না তুরস্ক। কারণ, এতে সংক্রমণের হার বেড়ে যেতে পারে। উপদ্রুত এলাকার নাম প্রকাশ করলে লোকজন অন্য এলাকায় চলে যেতে পারে; যেখানে কোনও আক্রান্ত নেই। সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি, সিএনএন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।