তিন বছরের ব্যবধানে টানা চতুর্থ ফাইনালে উঠেছে আর্জেন্টিনা। স্বাভাবিকভাবে এবারের কোপা আমেরিকায়ও তারা ফেবারিট হিসেবেই যাত্রা শুরু করেছিল। যদিও এখন পর্যন্ত খুব বড় কোনো পরীক্ষায় পড়তে হয়নি লিওনেল স্কালোনির দলটিকে। ফলে ফাইনালে তাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হতে পারে কলম্বিয়ার বিপক্ষে। তবে বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা বড় ম্যাচেই হয়তো নিজেদের পুরো ফর্ম ঢেলে দেবে। এ নিয়ে কোপার ৪৮ আসরে ৩০তম বার ফাইনাল খেলতে যাচ্ছে আলবিসেলেস্তেরা।
কোপায় সর্বোচ্চ সংখ্যক চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা, যদিও তাদের সেই শীর্ষস্থান ভাগাভাগি করতে হচ্ছে উরুগুয়ের সঙ্গে। কারণ দুই দলই সমান ১৫ বার করে মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। লিওনেল মেসিদের পূর্বসূরী ও বর্তমান প্রজন্ম মিলিয়ে আকাশী-সাদা জার্সিধারীরা যেমন সাফল্য পেয়েছে, তেমনি প্রায় সমান সংখ্যক বার হৃদয়-ও ভেঙেছে ফাইনালে। তবে এবার মেসি-আনহেল ডি মারিয়াদের সামনে কোপার সর্বাধিক শিরোপা জয়ের বড় সুযোগ হাতছানি দিচ্ছে।
লাতিন ফুটবলের সর্বোচ্চ প্রতিযোগিতা কোপা যাত্রা শুরু হয় ১৯১৬ সালে। যদিও তখন এটি ছিল ভিন্ন নামে– দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ। যেখানে রাউন্ড রবিন বা লিগ পদ্ধতিতে খেলা হতো এবং পয়েন্টের ভিত্তিতে শীর্ষ দলই শিরোপা জিততো। আনুষ্ঠানিক কোনো ফাইনাল ছিল না। এ নিয়ম ও নাম বদলে ১৯৭৫ সালে কোপা আমেরিকার নতুন পথচলা শুরু হয়। কনমেবল সে সময় থেকে গ্রুপ পর্ব শেষে চালু করে নকআউট পর্ব। যদিও মাঝে ১৯৮৯ ও ১৯৯১ সালের আসরে পুরনো সেই লিগ পদ্ধতিতে চ্যাম্পিয়ন নির্ধারণ করা হয়েছিল।
সবমিলিয়ে আর্জেন্টিনা এর আগে ফাইনাল খেলছে ২৯ বার। এর মধ্যে ১৫ বার চ্যাম্পিয়ন এবং বাকি ১৪ বার তাদের ফিরতে হয়েছিল রানারআপ হয়ে। এর মধ্যে অবশ্য তাদের ১৩টি শিরোপাই এসেছিল রাউন্ড রবিন নিয়মের অধীনে। অর্থাৎ ফাইনালের মধ্য দিয়ে শিরোপা নির্ধারণী নিয়ম চালুর পর আলবিসেলেস্তেরা ৬ বার চূড়ান্ত ম্যাচটি খেলেছে। যেখানে তাদের জয় মাত্র দুটিতেই, বাকি ৪ ফাইনালেই হেরেছে তারা।
ফাইনালের নিয়ম চালুর পর আর্জেন্টিনা প্রথম চূড়ান্ত পর্বে উঠেছিল ১৯৯৩ আসরে। প্রথমবার ফাইনালে উঠেই তারা শেষ হাসি হাসে, শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে মেক্সিকোর বিপক্ষে আকাশী-সাদা জার্সিধারীরা ২-১ গোলে জেতে। এরপর টানা ২৮ বছর তাদের শিরোপাখরায় ভুগতে হয়। তিনবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের সেই খরার অবসান ঘটে আরেকটি কোপা আমেরিকা দিয়েই। ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত সবশেষ আসরের ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলকে তাদের মাটিতেই ১-০ গোলে হারিয়ে উল্লাসে মাতে আর্জেন্টিনা। এর আগে মাঝে চারবার ফাইনালে উঠলেও তাদের শিরোপা জেতা হয়নি।
২০০৪ ও ২০০৭ সালে অনুষ্ঠিত কোপার দুই ফাইনালে পরপর ব্রাজিলের কাছে হেরে হৃদয় ভাঙে আর্জেন্টিনার। এরপর ২০১৫ ও ২০১৬ আসরেও আর্জেন্টিনাকে ভীষণ আক্ষেপে পুড়তে হয়েছে। দুবারই চিলির বিপক্ষে নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময় মিলিয়ে গোলশূন্য থাকার পর টাইব্রেকারে হারে তারা। এরপর তাদের শিরোপাখরা কাটে ব্রাজিলকে তাদেরই মাটিতে ২০২১ আসরে হারিয়ে। অবশ্য সেই দুই দলের কোনোটিই নেই এবারের ফাইনালে। তাদের সামনে দুর্দান্ত কলম্বিয়া, যারা টানা ২৮ ম্যাচ অপরাজিত থেকে চলতি কোপার ফাইনালে উঠেছে।
এর আগে অবশ্য হামেস রদ্রিগেজরা সবশেষ হেরেছিল এই আর্জেন্টাইনদেরই বিপক্ষে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ১-০ গোলে জেতেন মেসিরা। এরপর থেকে অপরাজেয় কলম্বিয়া। তাদের সেই অপ্রতিরোধ্য পারফরম্যান্স টিকে থাকে কি না সেটাই দেখা যাবে এবারের ফাইনালে। আগামী সোমবার বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টায় মায়ামির হার্ডরক স্টেডিয়ামে ফাইনালে মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা-কলম্বিয়া।
![](https://inews.zoombangla.com/wp-content/uploads/2024/03/34-5.jpg)
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।