জুমবাংলা ডেস্ক: চলনবিলের বুক চিরে বয়ে গেছে বড়াল, নন্দকুজা, আত্রাই, গুমানি, বেশানি, তুলসিগঙ্গাসহ অন্তত ১০টি নদী ও নদীর শাখা প্রশাখা। প্রাকৃতিকভাবেই সেখানে উৎপাদিত হতো, মাগুর, শিং, বোয়াল, রুই, কালিবাউস, মৃগেল, টাকি, পাবদা, কৈ, ভেদা, ফাঁসা, সরপুঁটি, গুচি, বাতাশীসহ নানা দেশীয় প্রজাতির সুস্বাদু মাছ। আশির দশকের পর থেকে আশঙ্কাজনক হারে কমতে থাকে এসব প্রাকৃতিক মাছের উৎপাদন। আর মাছের সংকট কাটাতে এ অঞ্চলের মাছ চাষিরা বাণিজ্যিকভাবে পুকুরে বিদেশি প্রজাতির মাছ চাষ শুরু করে এবং উৎপাদনেও বিপ্লব ঘটে। বর্তমানে ৪ হাজার ৫০০ টন মাছের চাহিদার বিপরিতে উৎপাদন হচ্ছে ১৫ হাজার টন। যার মূল্য ৩০০ কোটি টাকার ওপরে। কিন্তু হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় প্রজাতির মাছ।
গুরুদাসপুর উপজেলা মৎস্য অফিসের তথ্যানুযায়ী, চলনবিল অধ্যুষিত এ উপজেলায় ২০২০-২১ সালে পুকুরের সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার। জলায়তন প্রায় ৬ হাজার হেক্টর। এছাড়াও ৯টি নদী, ৩টি খাল এবং ৬টি বিল থেকে প্রায় ১০০ টন, ৩০টি প্লাবন ভূমি থেকে ১ হাজার ১৬ টন ও অন্যান্য জলাশয় থেকে ২০০ টনসহ ১০ হাজার টনেরও বেশি মাছ উৎপাদন হচ্ছে। মাছের উৎপাদনও বেড়েছে তিন গুণ অর্থাৎ প্রায় ১৫ হাজার টন। উপজেলায় মাছের চাহিদা মেটানোর পরও সাড়ে ১০ হাজার টন মাছ দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে বাজারজাত করা হচ্ছে। যার আর্থিক মূল্য (গড়ে প্রতি কেজি ৩০০ টাকা) ৩০০ কোটি টাকারও বেশি।
গুরুদাসপুর উপজলো মৎস্য দপ্তর থেকে গৃহীত পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় ২০১৭-১৮ সাল থেকে ২০২১-২২ নাগাদ মাছের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০৬৭২ দশমিক ৩০ টন। কিন্তু বেসরকারি হিসেবে ২০২১-২২ সাল নাগাদ প্রকৃত উৎপাদন ২০ হাজার টনেরও বেশি হয়েছে বলে মাঠ জরিপে পাওয়া যায়।
গুরুদাসপুরের চাষিরা মাছ উৎপাদনে বিপ্লব ঘটিয়ে নাটোর জেলায় শীর্ষস্থান দখল করেছে। উদ্বৃত্ত ১০ হাজার টন মাছ ব্যবসায়ীদের উদ্ভাবিত চৌবাচ্চা পদ্ধতির ট্রাকের পানিতে জীবন্ত মাছ দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা রতন চন্দ্র সাহা বলেন, মৎস্য বিভাগ প্রতিনিয়ত চাষিদের মাছ চাষে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান করে আসছে। মা ও পোনা মাছ নিধন বন্ধে অভিযান চলমান রেখেছে। নিষিদ্ধ কারেন্ট, চায়না দুয়ারি, বাদাই জালে মাছ শিকার বন্ধে অভিযান চালিয়ে আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চলমান রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্রাবনী রায় জানান, গুরুদাসপুর উপজেলা মৎস্য সেক্টরে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। এখানে স্থানীয় চাহিদার তিন গুণ মাছ উৎপাদিত হচ্ছে। উদ্বৃত্ত মাছ বিক্রি করে চাষি ও ব্যবসায়ীরা হচ্ছেন লাভবান। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাছ চাষি ও ব্যবসায়ীদের সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে।
ছাদে রঙিন মাছ ও মুক্তা চাষ করে ঘরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছে রহমান
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।