জুমবাংলা ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বড়ধূষিয়া মধ্যপাড়া গ্রামে মাইনুদ্দিন নামের এক চা-বিক্রেতার জন্য করা বাড়ি দেড় বছরেও দখলে নিতে পারেননি।
অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় জাকির নামের ইউপি সদস্য ঘুষের ৩০ হাজার টাকা না পেয়ে উল্টো নিজের দখলে রেখে ওই ঘরেই বসবাস করছেন পরিবার-পরিজন নিয়ে।
সরেজমিন ঘুরে স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার চান্দলা ইউনিয়নের বড়ধূষিয়া মধ্যপাড়া গ্রামের হতদরিদ্র মৃত আবু তাহেরের ছেলে মাইনুদ্দিন। পেশায় একজন চা-বিক্রেতা। অভাবের সংসারে চা বিক্রি করে চলে তার এক সন্তানসহ পরিবারের ভরণপোষণ।
পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ছোট্ট ভিটায় ছিল ছাপড়া ঘর। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ‘জমি আছে ঘর নাই’ প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় মাইনুদ্দিনের নামে একটি বাড়ি বরাদ্দ আসে।
যথারীতি ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস বাড়িটি নির্মাণ কাজ শেষ করে। এ সময় মাইনুদ্দিন ঘরটির দখল নিতে গেলে তাকে সেটা বুঝিয়ে দেয়া হয়নি।
দায়িত্বশীল সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়, প্রকল্প শেষ হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসন ঘরটি মাইনুদ্দিনকে বুঝিয়ে দেয়ার কথা থাকলেও তাকে বুঝিয়ে দেয়া হয়নি।
এ অবস্থায় চান্দলা ইউনিয়নের বড়ধূষিয়া গ্রামের ইউপি সদস্য জাকির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি মাইনুদ্দিনের কাছে ৩০ হাজার টাকা দাবি করেন। এতে তিনি রাজি না হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর উপহার বাড়িটির দখল তার কপালে জুটেনি। এক পর্যায়ে বাড়িটির দখল নিয়ে ইউপি সদস্য জাকির নিজেই বসবাস শুরু করেন। আর এভাবেই কেটে যায় প্রায় দেড় বছর।
সম্প্রতি বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় গ্রামবাসী নিরীহ মাইনুদ্দিনের পক্ষে অবস্থান নেন। এক পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর স্মারকলিপি পেশ করে মাইনুদ্দিনকে বাড়ি বুঝিয়ে দেয়ার দাবি জানান।
বিষয়টি জানতে চাইলে চান্দলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফাি আলী বলেন, এমন কোনো অভিযোগ আমার কাছে আসেনি। নিয়মিতই মাইনুদ্দিনের সঙ্গে আমার দেখা হয়। সেও এ ব্যাপারে কোনো অভিযোগ করেনি।
ইউপির ৭নং ওয়ার্ড সদস্য জাকির হোসেন বলেন, মাইনুদ্দিন আমার চাচাতো ভাই। সে ওই বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ায় আমি নিজেই বাড়িতে বসবাস করছি।
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এনামুল হক বলেন, কাজ শেষে উপসহকারী প্রকৌশলীর মাধ্যমে ঘরটি হস্তান্তর করা হয়েছে মাইনুদ্দিনের কাছে। মাইনুদ্দিন নিজেও আমার কাছে বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফৌজিয়া সিদ্দিকা বলেন, এই ঘর অসহায় গৃহহীনদের জন্য বরাদ্দ। অভিযুক্ত মেম্বারের বিরুদ্ধে ঘটনার সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।