আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ধরি মাছ, না ছুঁই পানি! একইভাবে— বিয়ে করছি কিন্তু থাকছি না একসঙ্গে। এটিই এখন ‘লেটেস্ট ট্রেন্ড’ গুরু— বুঝতে হবে। হ্যাঁ, জাপানে ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে এই অভিনব প্রথা।
নামেও রয়েছে অভিনবত্ব। ‘সেপারেশন ম্যারেজ’। অর্থাৎ একাধারে ‘ম্যারেজ’, আবার ‘সেপারেশন’ও। সপ্তাহান্তে সাক্ষাৎ।
এটি হচ্ছে ‘সেপারেশন ম্যারেজ’। বিয়েটা হয় ঠিকই, কিন্তু তার পর স্বামী বা স্ত্রী একসঙ্গে থাকেন না। আগের মতোই আলাদা, ‘ব্যাচেলর’সম জীবনযাপন করেন। ‘বিবাহিত’ স্ট্যাটাস ফিরে আসে সপ্তাহান্তে।
মানে হচ্ছে— সাপ্তাহিক ছুটির দিনে আবার দুজনে মিলেমিশে যান, একসঙ্গে থাকেন, সময় কাটান এবং ঘুরতে ও বেড়াতে যান। ‘উইকএন্ড’ ফুরোলে আবার আগের মতো স্বাধীন— এককী জীবন। বিষয়টি অনেকটা বিয়ের ‘আপডেট’ হওয়ার মতো!
আমাদের জীবন গঠনে প্রযুক্তি যেমন উন্নত হয়েছে, ‘আপডেটেড’ হয়, আপনার সাধের ফোন-ল্যাপটপ যেমন আরও ভালো পরিষেবা দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে সময়ে সময়ে ‘আপডেট’ চায়, ঠিক তেমনি ‘সেপারেশন ম্যারেজ’ বিয়েটাও তাই।
বৈবাহিক সম্পর্কে সুখ-শান্তি-ভালোবাসা— সর্বোপরি সেই ‘স্পার্ক’টাকে জিইয়ে রাখতে নব্যযুগীয় এই দাওয়াইতেই এখন ভরসা রাখছেন জাপানের জেন-জেড। আর হবে নাইবা কেন! ভেবে দেখুন একবার! গোটা সপ্তাহজুড়ে স্বামী বা স্ত্রী— কেউ-ই কারও বাড়িতে আসবাবের মতো পড়ে থাকেন না। যে যার নিজের ‘হোম শান্তি হোম’-এ বসবাস করেন নিজের মেজাজে-আরামে। শুধু সপ্তাহান্তে মিলমিশ, দুদিনের একত্রযাপন। পরস্পরের সুবিধামতো ও পছন্দমতো।
তাই বলে গোটা সপ্তাহ যে কেউ কারও ভালো-মন্দের কোনো খোঁজখবর রাখেন না, তা কিন্তু নয়। সেসব চলে আগের মতোই। মানে বিয়েটা কেবলই আইনগত। তা বাদে দুজনের জীবন চলে আগের ছন্দেই। অনেকটা প্রাক-বিয়ের প্রেমপর্বের মতো। যখন গোটা ক্যানভাসটা রঙিন বোধ হয়! যতদূর চোখ যায়, কোথাও কোনো খুঁত, খামতি নেই। সবটাই স্বপ্নিল, সবটাই সুন্দর। অতএব ‘সাপ্তাহিক বিয়ে’ই এখন জাপান কাঁপাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা মাথা খাটিয়ে বলছেন— এই ট্রেন্ডের এত রমরমার কারণ কী— এর বেশ কয়েকটি ইতিবাচক দিক রয়েছে। প্রথমত বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রীর পরস্পরের প্রতি দায়িত্ববোধ বেড়ে যায়। সঙ্গে যোগ হয় আর্থিক কর্তব্যপালন। স্বাভাবিকভাবেই তখন নিজস্ব স্বার্থরক্ষা, পছন্দের অগ্রাধিকার দেওয়া সূদূর কোণে চলে যায়।
‘সেপারেশন ম্যারেজ’-এ সেই ঝক্কি নেই। দায়িত্ব পালনই বলুন বা পরস্পরের পছন্দকে গুরুত্ব দেওয়া— সব সেই ছুটির দিনে। বাকি দিনগুলোতে আগের মতোই ‘আমিই আমার রাজা’। দ্বিতীয়ত একসঙ্গে থাকলে কথায় কথায় মতের অমিল আর তা থেকে ঝগড়া-ঝামেলা-লংকাকাণ্ড অনিবার্য। এ ক্ষেত্রেও এই বিয়ে অনেক নিরাপদ। কারণ বিয়ের পর অনেকটা সময়ই স্বামী-স্ত্রী আলাদা থাকেন। ফলে শান্তির মেয়াদও হয় দীর্ঘস্থায়ী। এসব কারণেই বিশ্বায়নের এই সময়ে জাপানবাসী সানন্দে বেছে নিচ্ছেন ‘সাপ্তাহিক বিয়ে’র বিকল্প। আর বাংলাদেশ অনেক দূরদেশ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।