জুমবাংলা ডেস্ক: প্রকৃতিতে এখন গ্রীষ্ম। ষড়ঋতুর এই দেশে ঋতু পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে প্রকৃতিতে চলতে থাকে রূপের পালাবদল। কাঠফাটা রোদ্দুর আর অসহ্য গরম নিয়ে গ্রীষ্মের প্রকৃতি হাজির হয়েছে আমাদের সামনে। গ্রীষ্মের খরতাপে প্রকৃতি যখন রুদ্রমূর্তি ধারণ করে ঠিক তখন লাল কৃষ্ণচূড়া এবং দুর্লভ হলুদ কৃষ্ণচূড়ার সঙ্গে মোজাইকের মতো মিলেমিশে থাকে হলুদ রঙের সোনালু, বেগুনি রঙের জারুল, লাল-হলুদ রাধাচূড়া। গ্রীষ্মের এমন সাজানো প্রাকৃতিক রূপ দেখে তার রুক্ষতা ভুলে যায় মানুষ। গ্রীষ্মের দৃষ্টিনন্দন ফুলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের প্রকৃতি রঙিন সাজে সেজে ওঠেছে। এক অপূর্ব রূপ ধারণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। দৈনিক ইত্তেফাকের প্রতিনিধি নেছার উদ্দিন-এর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বিস্তারিত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বৃক্ষ সংরক্ষণের দায়িত্ব পালন করে থাকে গবেষণা প্রতিষ্ঠান আরবরি কালচার। গতকাল আরবরি কালচারের পরিচালক ও উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহার সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের।
তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ৫০০ শতাধিক প্রজাতির ফুল গাছ পাওয়া যায়। গ্রীষ্মে অনেক প্রজাতির ফুল ফোটে। এখন জারুল, কৃষ্ণচূড়া কনকচূড়া ক্যাম্পাসে বেশি দেখা যায়। পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুটে থাকা বিচিত্র রঙের ফুল ক্যাম্পাসে এক মনোরম দৃশ্য তৈরি করেছে। এছাড়া ব্রিটিশ কাউন্সিলের ভিতরে একটি হলুদ কৃষ্ণচূড়া ফুলগাছ আছে। এটি আমাদের দেশে খুবই কম দেখা যায়। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বিশেষ করে মল চত্বরে এবং কার্জন হল এলাকায় বেশ কিছু কুরচি ফুল গাছের দেখাও মেলে। অসংখ্য সাদা ফুলে গাছগুলো যখন সুশোভিত হয় তখন দেখলে অনেকটা জাপানের চেরি ফুলের মতো মনে হয়।
গ্রীষ্মে বাহারি রঙের ফুল ফুটলেও রক্তিম কৃষ্ণচূড়ার ফুলে চোখ আটকায় পথিকের। গতকাল ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে ছোট বড় এক শতাধিক কৃষ্ণচূড়া গাছের দেখা মেলে। শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের মলচত্বর এলাকাতেই ১৫টি কৃষ্ণচূড়া গাছ দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়া টিএসসি, ফুলার রোড, কার্জন হল, আমতলা, ভাষা ইনস্টিটিউট, জগন্নাথ হলসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে এই গাছ দেখতে পাওয়া যায়। ঝরে পড়া কৃষ্ণচূড়ার লাল ফুলে রঙিন হয়ে আছে পথঘাট। কেউ সেই ফুল কুড়িয়ে নিচ্ছেন কেউ-বা সেই রাঙানো পথে বসে তুলছেন ছবি। কৃষ্ণচূড়া ছাড়াও ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় দেখা মেলে বাগানবিলাস, জারুলসহ বিচিত্র ফুলের।
আরবরি কালচার সেন্টারের তথ্যমতে, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিচিত্র ফুল গাছ রয়েছে তার মধ্যে শিমুল, ধুজা, ঝাউ, নাগচম্পা, পাম ( রয়্যাল পাম, এরেকা পাম, র্যাপিস পাম), বোতলব্রাশ, মিলেসিয়া, বিভিন্ন ধরনের বট, কুন্দ, কামিনী, কাঞ্চন, বিচিত্রা বা সুষমা, শিমুল, ধুজা, ঝাউ, নাগচম্পা, পাইনাস, ক্যাকটাস, ক্যানন শেল ট্রি প্লামবাগো, গ্লিরিসিডিয়া, ম্যাগনোলিয়া, উদয়পদ্ম বা হিমচাঁপা, স্বর্ণ চাঁপা, সিলভার ওক, কোলিয়াস, হলুদ ঘন্টা রক্ত করবী, জ্যাকারেন্ডা, অরোকেরিয়া, অশোক, নীলমণি লতা, মাধবী লতা, জুঁই, মধুমঞ্জুরী, মাধবীলতা, বিভিন্ন রঙের মর্নিং গ্লোরি, ভারননিয়া, ব্লিডিং হার্ট, ইউফোরবিয়া ইত্যাদি ফুল গাছ উল্লেখযোগ্য।
বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় শিক্ষকদের বাসা, শিক্ষার্থীদের হলসহ বিভিন্ন পয়েন্টে প্রায় দুই শতাধিক বাগান করা হয়। প্রতিটি হলেই কমপক্ষে একটি করে ফুলের বাগান করা হয়। মালিরা ব্যস্ত ক্যাম্পাসের বাগান পরিচর্যায়। মুহসিন হলের মালি আলমকে দেখা যায় বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত। আলমের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, গ্রীষ্ম মৌসুমেই সবচেয়ে বেশি ফুল হয়, যার কারণে বাগান পরিচর্যায় একটু বেশি মনোযোগী হতে হয়। ছুটির দিনেও কেউ না কেউ ফুলের বাগান দেখাশোনা করেন। মুহসিন হলের ফুলের বাগানে এখন ৮/১০ রকমের ফুলের দেখা মিলছে বলে তিনি জানান। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য সূর্যমুখী, জিনিয়া, গাঁদা, গোলাপ ও কসমস। মালিরা নিয়মিত এই ফুলবাগানের পরিচর্যা করছেন। শুধু মাঠে নয় হল গেটের আশপাশে খালি জায়গাতেও ফুলের চারা লাগানোর পরিকল্পনা করছেন তারা।
বিশ্ব বিখ্যাত অক্সফোর্ডে গবেষণার সুযোগ পেলেন বাংলাদেশের আতাউল
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।