করোনা ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে উত্তাল সারাদেশ। প্রতিদিন রিসার্চের মাধ্যমে নতুন নতুন তথ্য বেরিয়ে আসছে এই ভাইরাস সম্পর্কে। ভাইরোলজিস্টরা এর আগেই জানিয়েছিলেন যে, এই করোনা ভাইরাস ধীরে ধীরে জিনের গঠন বদলাতে চলেছে। একটি গবেষণায় ধরা পড়েছে যে, আরএনএ সার্স-কভ-2 ভাইরাল স্ট্রেনের বিন্যাসের কারণে এই করোনা ভাইরাসের এই জিন গত পরিবর্তন দেখা দিচ্ছে। এর ফলে এই ভাইরাস আরো সংক্রামক হয়ে উঠছে মানবদেহে। এর ফলে এক মানব দেহ থেকে অন্য মানবদেহে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এই ভাইরাস।
জিনের এই গঠনকে নাম দেওয়া হয়েছে ‘D614G’।আমেরিকার লস আমামস ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির এক গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে। গবেষকরা জানিয়েছেন, করানো হয় রাসেলের জিনগত পরিবর্তন সামান্য অংশ হলেও এর পরিণাম মারাত্মক হতে পারে। জিনের এই গঠনগত বিন্যাস হচ্ছে মূলত স্পাইক গ্লাইকোপ্রোটিন এর জন্য। এই স্পাইক প্রোটিন এর মাধ্যমে মানুষের দেহকোষে ঢোকার একমাত্র রাস্তা। ফলে এই অংশে জিনের গঠন গত পরিবর্তন হওয়ার ফলে করোনা ভাইরাস কে আরো শক্তিশালী করে তুলছে স্পাইক প্রোটিন।
এ বিষয়ে গবেষকরা বলেছেন যে, স্পাইক প্রোটিনের 614 পজিশনে এই পরিবর্তনটা ঘটছে। এবং S-D614 আর S-G614 প্রোটিন এর মধ্যে এই পরিবর্তনটা খুব তাড়াতাড়ি ঘটছে। এবং এই পরিবর্তনের ফলে রিসেপ্টর প্রোটিনের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে অ্যাঞ্জিওটেনসিন- কনভার্টিং এনজাইম 2 কোষের ভিতরে ঢুকতে সক্ষম হচ্ছে। জার্নাল অব আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের তরফ থেকে একটি অনলাইন কনফারেন্সের আয়োজন করা হয়। আর এই কনফারেন্সে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশিয়াস ডিজিজের ডিরেক্টর এবং হোয়াইট হাউসের মুখ্য স্বাস্থ্য উপদেষ্টা অ্যান্থনি ফৌজি কর্নার জেনেটিক মিউটেশন পরিবর্তন নিয়ে একটি নতুন তথ্য দেন।
এই অনলাইন কনফারেন্সে তিনি জানিয়েছিলেন যে, সিঙ্গেল মিউটেশন হল জিনের গঠন। বারসাত ডিএনএর যেখানে সম্পূর্ণ বিন্যাস সেখানে একটা নির্দিষ্ট অ্যামাইনো অ্যাসিড এর কোড পরিবর্তন হচ্ছে। ফৌজি আরও জানিয়েছেন যে, এমনটা হতেই পারে যে এই অ্যামাইনো অ্যাসিড এর কোডগুলো পরিবর্তন করে দিচ্ছে এই ভাইরাস। কিন্তু সমস্যা হল কোড পরিবর্তন করে দিলেও আবার সে নতুন করে জিনের গঠন সাজিয়ে নিতে পারবে। এর ফলে এই ভাইরাসের হিউম্যান ট্রানস্মিশন অর্থাৎ এক মানব দেহ থেকে অন্য মানবদেহে সংক্রমনের সম্ভাবনা প্রবল বেগে বেড়ে যাবে। এ বিষয়ে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে, খুব দ্রুত গতির সঙ্গে এই ভাইরাস জিনের গঠন বদলাচ্ছে।
শুধু তাই নয় এই বদলটা পর পর হতেই থাকছে এবং একসঙ্গে হচ্ছে। আশ্চর্যের ব্যাপার হল একটা ভাইরাসের জিনোম থেকে তৈরি হচ্ছে আরেকটা। এইভাবে চলতে থাকছে প্রক্রিয়াটি। আরো অবাক করে দেওয়ার মতোন বিষয়টি হল, প্রত্যেকটি জিনোমেই একে অপরের থেকে ভিন্ন। এ বিষয়ে আরও গবেষণা করতে আরেকটি বিষয় ধরা পড়েছে বিজ্ঞানীদের হাতে।যেটি হল,এই ভাইরাসকে একসঙ্গে 200 বার জিনের গঠন বদল করতে লক্ষ্য করা গেছে। যেটি আরো চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রত্যেকটি দলের সঙ্গে সঙ্গে এই ভাইরাস আরো সংক্রামক এবং আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে। যদি এই ভাইরাসের জিনোম গুলি খুঁটিয়ে দেখা হয় তাহলে সে আগে কোথায় ছিল আর এখন কোথায় পৌঁছেছে সেই সম্পর্কে কোন কিছুই খুঁজে পাওয়া যাবে না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।