জুমবাংলা ডেস্ক : ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার চরযশোরদি ইউনিয়নের আশফোরদী গ্রামের ৮১ বছর বয়সী শারীরিক প্রতিবন্ধী জীবিত রুস্তম আলী মীরকে ২০১৯ সালে জাতীয় পরিচয়পত্রে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে জীবিত থেকেও জাতীয় পরিচয়পত্রে রুস্তম আলী মীর এখন মৃত।
জীবিত এই ব্যক্তিকে মৃত ঘোষণা করার পর, তার প্রতিবন্ধী ভাতা বাতিল করেছে সমাজ সেবা অফিস। ফলে চার বছর ধরে ভাতা বঞ্চিত শারীরিক প্রতিবন্ধী দরিদ্র অসহায় রুস্তম আলী মীর। এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভুগী রুস্তম আলীর মেয়ে রোখসানা।
জীবিত ব্যক্তিকে জাতীয় পরিচয়পত্রে মৃত ঘোষণা করায়, সকল নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত তো হচ্ছেনই উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরেও যেতে পারছেন না তিনি। ভোটার তালিকা থেকে তার নাম বাতিল করায়, ভোটাধিকার থেকেও বঞ্চিত হয়েছেন। তার প্রতিবন্ধী ভাতা বাতিল হওয়ায়, ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন আর্থিকভাবেও।
প্রতিবন্ধী রুস্তম আলী মীর ও তার পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, ২০১৯ সালে ভোটার তালিকা হাল-নাগাদ করার সময়, প্রতিবন্ধী ভাতা বাতিল করে অন্য কাউকে ভাতা পাইয়ে দিতেই, চরযশোরদী ইউনিয়নের মুকন্দপুট্টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সালাউদ্দিন মুন্সী আমার প্রতিবেশী কুদ্দুস আলী মীরের যোগসাজসে আমাকে জাতীয় পরিচয়পত্রে মৃত ঘোষণা করেছে। আমি জীবিত থাকতেই আমাকে মৃত ঘোষণা করায়, আমার প্রতিবন্ধী ভাতা বাতিল করে দিয়েছে সমাজ সেবা অফিস। আমি কোনো নির্বাচনে ভোট দিতে পারছিনা। মিথ্যা তথ্য দিয়ে আমাকে মৃত ঘোষণা করায়, আমি আর্থিক, সামাজিক ও মানসিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ। আমার ক্ষতি যারা করেছে, আমি তাদের বিচার চাই এবং আমার ক্ষতিপূরণ চাই।
রুস্তম আলীর মেয়ে রোখসানা আরো জানান, তার বাবা অসুস্থ, চিকিৎসার জন্য ভারতে নিয়ে যেতে চাইছিলাম। কিন্তু জাতীয় পরিচয় পত্র না থাকায় পাসপোর্ট করতে পারছি না।
জীবিত ব্যক্তিকে মৃত বানানোর বিষয়টি জানতে অভিযুক্ত স্কুল শিক্ষক সালাউদ্দিন মুন্সির কাছে গেলে তিনি বলেন, রুস্তম আলী মীরের প্রতিবেশী কুদ্দুস আলীর মীরের তথ্যের ভিত্তিতে রুস্তম আলী মীরকে মৃত ঘোষণা করে নগরকান্দা উপজেলা নির্বাচন অফিসে ফরম জমা দিয়েছি। এখানে আমার কোনো দোষ নেই। আমি সঠিক নিয়ম মেনেই কাজ করেছি।
এ ব্যাপারে অপর অভিযুক্ত মীর কুদ্দুস আলী মীর বলেন, স্কুল শিক্ষক সালাউদ্দিন মুন্সিকে আমি চিনিই না। শিক্ষক সালাউদ্দিন মুন্সি আমার কাছে তথ্য নিতে আসেনি। রুস্তম আলী মীরের সম্পর্কে আমি এ ধরনের কোনো তথ্য তাকে দেইনি।
জীবিত ব্যক্তিকে মৃত ঘোষণা করার ঘটনায় উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবু তালেব বলেন, মাঠ পর্যায়ের তথ্য সংগ্রহকারীদের গাফিলতির কারণেই এমনটি ঘটেছে।
নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাফী বিন কবির বলেন, এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের ভিত্তিতে বিষযটি খতিয়ে দেখা সহ দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইতিমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।