নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: গাজীপুরের টঙ্গীতে একটি বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মালামাল লুটের অভিযোগ উঠেছে। লুট করা পণ্য দোকান থেকে ফেরত আনতে গেলে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষককে মারধরের চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেন।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বেলা ১টার দিকে টঙ্গীর টিঅ্যান্ডটি কলোনি আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা টঙ্গী-কালীগঞ্জ আঞ্চলিক শাখা সড়কে অবস্থান নেন। এতে আঞ্চলিক শাখা সড়কটিতে দীর্ঘ গাড়ির জটলা দেখা দেয়। পরে বেলা ২টার দিকে স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তিবর্গ ও পুলিশের দেওয়া আশ্বাসে তাঁরা সড়ক থেকে সরে যান।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয়টির নৈশপ্রহরীকে ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে শ্রেণিকক্ষের ফ্যান, চেয়ার–টেবিল, জানালা ও আলমারি ভেঙে বিদ্যালয়টি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লুট করে নিয়ে যায় একটি চক্র। গত চার দিনে এসব লুট করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতেও প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের অর্ধবার্ষিকীর প্রশ্নপত্র ও খাতা লুটে নিয়ে যায় চক্রটি। পরে লুট হওয়া মালামাল ওই বিদ্যালয়সংলগ্ন একটি দোকানে বিক্রি করে দেয় চক্রটি।
গতকাল লুট হওয়া মালামাল ফিরিয়ে দিতে বিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবু সাঈদ ওই দোকানে যান। পরে বিকেলে কয়েকজন যুবক ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁকে বিদ্যালয়টির ভেতরে মারধরের চেষ্টা করেন।
এর প্রতিবাদে বুধবার দুপুরে বিদ্যালয়টির কয়েক শ শিক্ষার্থী-শিক্ষক ও অভিভাবক টঙ্গী-কালীগঞ্জ আঞ্চলিক শাখা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলে, ‘কয়েক দিন ধরেই আমাদের বিদ্যালয়ের চেয়ার–টেবিল, ফ্যান, বেঞ্চ লুটে নিয়ে যায়। আজ সকালে এসে দেখি আমাদের পরীক্ষা প্রশ্নপত্র ও খাতাও নিয়ে গেছে। প্রধান শিক্ষককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কিছু যুবক মারতে এসেছিল। আমরা বাধ্য হয়েই বিক্ষোভে নেমেছি।’
বিদ্যালয়টির পরিচালনা পরিষদের সদস্য আয়শা সুলতানা শিরিন বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়টি ভবন ও মাঠটি সন্ধ্যার পর মাদকসেবীদের দখলে যায়। কয়েক দিন ধরে আমাদের বিদ্যালয়ের মালামাল নিয়ে যায়। শ্রেণিকক্ষে বসতে পারছি না। গতকঅর রাতে আলমারি ভেঙে সব প্রশ্নপত্র ও খাতা নিয়ে গেছে। শিক্ষার্থীরা আজকে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি।’
টিঅ্যান্ডটি কলোনি আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবু সাঈদ বলেন, ‘লুটের ঘটনায় আজ সকালে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছিলাম। গতকাল বিকেলে আমাকে মারধরের চেষ্টা করে কয়েকজন যুবক। আজ শিক্ষার্থীরা সড়কে বিক্ষোভ করেছে। লুট হওয়া মালামাল ফিরিয়ে আনতে পুলিশের সহায়তা চেয়েছি।’
বিদ্যালয়টির পরিচালনা পরিষদের সভাপতি হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করেছিলাম। পুলিশ ও স্থানীয়রা আমাদের কোনো সহযোগিতায় এগিয়ে আসেনি।’
গাজীপুর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. শাহজাহান বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার জানা ছিল না। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক আমাদের কিছু জানায়নি। এখন জানলাম। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’
টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মামুনুর রশীদ বলেন, ‘খবর পেয়ে বিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক লিখিত অভিযোগ করেছেন।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।