জুমবাংলা ডেস্ক : টেকনাফ–সেন্টমার্টিন নৌপথসহ এবার নাফ নদীর বাংলাদেশ অংশে সব নৌযান চলাচলে অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে টেকনাফ উপজেলা প্রশাসন। গতকাল বুধবার সকাল থেকে এ নৌপথ দিয়ে কোনো ট্রলার ও স্পিডবোট চলাচল করেনি। একই সঙ্গে নাফ নদীর বাংলাদেশের জলসীমায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। তবে নাফ নদী দিয়ে নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও কঙবাজার থেকে বঙ্গোপসাগর হয়ে পর্যটকবাহী জাহাজ সেন্টমার্টিন যেতে পারবে বলে জানা গেছে। খবর বিডিনিউজের।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে বুধবার টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নাফ নদীতে সব ধরনের নৌযান চলাচল পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি নৌযান নিয়ে কেউ যাতে নাফ নদীতে না নামে, এ বিষয়ে সতর্ক করতে মাইকিং করা হচ্ছে। পাশাপাশি সীমান্তে অনুপ্রবেশ রোধ ও যেকোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য নাফ নদীর জলপথ ও সীমান্তে বিজিবি এবং কোস্টগার্ডের টহল জোরদার করা হয়েছে।’
কঙবাজার থেকে বঙ্গোপসাগর হয়ে সেন্টমার্টিনগামী পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল অব্যাহত থাকবে। কেবল মাত্র নাফনদীতে নৌ যান চলাচল বন্ধ থাকবে বলে জানান ইউএনও। কয়েক মাস ধরে মিয়ানমারের জান্তার সঙ্গে লড়াইয়ের পর রোববার সকালে মংডু শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি করেছে আরাকান আর্মি। সোমবার আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এ খবর প্রকাশ হয়।
সেন্টমার্টিন সার্ভিস ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি রশিদ আহমদ বলেন, ‘বুধবার সকালে ইউএনও’র কার্যালয় থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এর আগে মঙ্গলবার রাতে কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে ট্রলার চলাচলে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে বুধবার সকাল থেকে সেন্টমার্টিন ও টেকনাফ থেকে কোনো ট্রলার ছাড়া যাবে না বলে জানানো হয়। এ নৌপথে ২৭টি সার্ভিস ট্রলার ও ৪৭টি স্পিডবোট রয়েছে।”
এদিকে টেকনাফ সীমান্তের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ–২ বিজিবি ব্যাটালিয়ানের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়কের দায়িত্বে থাকা উপ–অধিনায়ক মেজর সৈয়দ ইশতিয়াক মুর্শেদ। তিনি বলেন, ‘সীমান্ত নিরাপত্তায় বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণের বাংলাদেশ–মিয়ানমার সীমান্তে দায়িত্ব পালন করছে বিজিবি। সীমান্তের সুরক্ষা ছাড়াও চোরাচালান, মাদকদ্রব্য, অবৈধ অনুপ্রবেশ এবং আন্তঃরাষ্ট্রীয় সীমান্ত অপরাধ দমনে দায়িত্ব পালন করে আসছে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ–মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় নাফ নদীতে টহল তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। সীমান্তে নিছিদ্র নিরাপত্তায় দিন–রাত ২৪ ঘণ্টা জলে ও স্থলে টহল পরিচালনা করা হচ্ছে। এছাড়া সীমান্তের যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিজিবি সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।’
এদিকে গত শনিবার থেকে বূধবার পর্যন্ত পাঁচদিন ধরে মিয়ানমার থেকে পণ্যবাহী কোনো কার্গো ট্রলার ও জাহাজ টেকনাফ স্থলবন্দরে আসেনি এবং মালামাল খালাস করা কার্গো ট্রলার ও জাহাজ মিয়ানমারের ফেরত যেতে পারছে না বলে জানিয়েছেন টেকনাফ স্থল বন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড ল্যান্ড র্পোট লিমিটেডের ব্যবস্থাপক সৈয়দ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘গত শুক্রবার মিয়ানমারের আকিয়াব বন্দর থেকে মাছ ভর্তি একটি কার্গো ট্রলার টেকনাফ স্থলবন্দরের জেটিতে নোঙ্গর করেছে। বর্তমানে মালামাল নিয়ে আসা চারটি কার্গো ট্রলার স্থলবন্দরের জেটিতে নোঙ্গর করে রয়েছে। এর মধ্যে দুইটি কার্গো ট্রলার থেকে মালামাল খালাস করা হলেও মিয়ানমারে ফেরত যেতে পারছে না।’
টেকনাফে নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শিবিরের বাসিন্দা ও মংডুর সিকদারপাড়া এলাকার সাবেক বাসিন্দা আলী জোহার বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে জানতে পারলাম আরাকান আর্মি মংডু টাউনশিফ দখলে নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় পতাকা উত্তোলন করেছেন। এইজন্য সরকারি বাহিনী মংডু টাউনে কারফিউ জারি করেছে। লোকজন বাড়িঘর থেকে বের হতে পারছে না বলে নিকট আত্মীয়–স্বজনরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সেখানকার পরিস্থিতি জানিয়েছেন।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।