জুমবাংলা ডেস্ক : সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা বেশি হলেও মশাবাহিত এই রোগে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে নারী বেশি।
আক্রান্ত কম হলেও মৃত্যুর হার বেশি হওয়ার জন্য নারীদের দেরিতে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার কথাই বলছেন গবেষকরা; সেই সঙ্গে বাংলাদেশের নারীদের দীর্ঘদিনের সমস্যা পুষ্টিহীনতাকেও তারা দায়ী করছেন।
দুই দশক আগে বাংলাদেশে ডেঙ্গু জ্বর প্রথম দেখা দিলেও এবছর আক্রান্তের সংখ্যা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, জানুয়ারি থেকে ১৯ অগাস্ট সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতাল ৫৪ হাজার ৭৯৭ জন ভর্তি হন। এর মধ্যে জুলাই-অগাস্ট মাসেই সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত হন এইডিস মশাবাহিত এই রোগে।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) গত ১ জুলাই থেকে ১৬ অগাস্ট পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ১৫ হাজার ৩১৬ রোগীর তথ্য বিশ্লেষণ করে পুরুষ রোগীর সংখ্যাই বেশি পেয়েছে।
তারা বলেছে, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তির রোগীর মধ্যে ৬৫ শতাংশ পুরুষ আর ৩৫ শতাংশ নারী।
সূত্র: আইইডিসিআর
ডেঙ্গুতে এই বছর ৮ অগাস্ট পর্যন্ত ৪০ জনের মৃত্যুর খবর সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর তাদের ‘ডেথ রিভিউ’ প্রক্রিয়া শেষ করে নিশ্চিত করেছে। ওই ৪০ জনের মধ্যে ২০ জন নারী ও ২০ জন পুরুষ।
তবে সারাদেশের হাসপাতালগুলোতে দেড় শতাধিক মৃত্যুর খবর এসেছে। একটি গণমাধ্যমকে ১৯ অগাস্ট দুপুর নাগাদ ১৬৯ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে।
এই ১৬৯ জনের মধ্যে ১৬৭ জনের লিঙ্গ পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে, এর মধ্যে ৯০ জন নারী এবং ৭৭ জন পুরুষ। অর্থাৎ ডেঙ্গুতে নারীদের মৃত্যুর হার ৫৩ দশমিক ৮৯ এবং পুরুষের ৪৬ দশমিক ১১ শতাংশ।
নারীদের মৃত্যুর হার বেশি হওয়ার কারণ কী?
এই প্রশ্নে আইইডিসিআরের পরিচালক ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, “আমার মনে হয় নারীরা দেরিতে হসপিটালে আসছে। পুরুষদের ট্রিটমেন্ট নেওয়ার প্রবণতাটা যত তাড়াতাড়ি, নারীদের বেলায় হয়ত একটু ডিলে হয়। এটা নারীদের মৃত্যু বেশি হওয়ার একটা কারণ বলে আমার কাছে কাছে মনে হয়।”
বাংলাদেশে নারীদের পুষ্টির বিষয়ে সমাজের উদাসীনতাকেও কারণ হিসেবে দেখালেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া।
তিনি বলেন, “নারীরা ঘরে থাকে, ওইটা এইডিসের সোর্স হওয়ায় নারীরা দুই বার বা তিন বার করে আক্রান্ত হচ্ছে।
“নারীদের হিমোগ্লোবিনের পার্সেন্টেজ কম থাকে, তাদের নিউট্রেশনের সমস্যা থাকে এবং এসব কারণে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কম থাকে। এজন্য আক্রান্ত হলে তারা বেশি মারা যাচ্ছে।”
ডেঙ্গুতে গর্ভবতী নারীদের ঝুঁকি বেশি হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে এই চিকিৎসক বলেন, “ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে তাদের মৃত্যু ঝুঁকি ৭০ থেকে ৮০ ভাগ। ”
ডেঙ্গুতে মৃত্যুর ক্ষেত্রে শিশুর সংখ্যাও কম নয়।
হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের অধ্যাপক ডা. এল ই ফাতমি বলেন, “বাচ্চারা বেশি ভালনারেবল। তাদের ফ্লুইড লস বেশি হলেই তারা শক সিনড্রোমে চলে যাচ্ছে বেশি।” সূত্র- বিডিনিউজ ২৪.কম
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।