প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) পড়ার স্বপ্ন দেখলেও নানান প্রতিবন্ধকতায় পেরে ওঠেননি বেলায়েত। সন্তানদের মধ্য দিয়েও চেষ্টা করেন স্বপ্ন পূরণের। কিন্তু তারাও তার স্বপ্ন পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েন গাজীপুরের মাওনার বাসিন্দা ৫৫ বয়সী বেলায়েত শেখ।
এবার তিনি আক্ষেপ গোছাতে ঢাবির ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় বসলেন। এফ এম মুজিবুর রহমান গণিত ভবনের অষ্টম তলার ৮০২ নম্বর কক্ষে পরীক্ষা দিচ্ছেন তিনি।
বেলায়েত ১৯৮৩ সালে প্রথমবার মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিলেও টাকার অভাবে সেবার নিবন্ধন করতে পারেননি। ১৯৮৮ সালে তিনি আবারও এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করেন, কিন্তু সে বছর বন্যার কারণে পরীক্ষা দিতে পারেননি।
কর্মজীবন শুরু করার পর বেলায়েত আর পড়ালেখা না করার সিদ্ধান্ত নেন। একসময় সন্তানদের মাধ্যমে স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতেও ব্যর্থ হন। তার মেয়ে রাজউক উত্তরা মডেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেলেও কলেজে যেতে আগ্রহী ছিলেন না। এমনকি তার বড় ছেলেও পড়ালেখা করতে আগ্রহী নন।
ছেলে-মেয়েরা তার স্বপ্ন পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েন বেলায়েত। অদম্য বেলায়েত অবশেষে ২০১৯ সালে এসএসসি এবং ২০২১ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তারই ধারাবাহিকতায় ৫৫ বছর বয়সে স্বপ্ন পূরণে অংশ নিলেন ঢাবির ভর্তি পরীক্ষায়।
বেলায়েত বলেন, ঢাবিতে পড়া আমার অনেক দিনের লালিত স্বপ্ন। নিজে পারিনি এবং সন্তানদের দিয়েও পারিনি। তাই এবার আরেকবার চেষ্টায় নামলাম, আল্লাহ ভরসা। ঢাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে পড়া তার স্বপ্ন বলে জানান বেলায়েত।
বাবার জন্য কেন্দ্রের বাইরে অবস্থান করছেন তার ছোট ছেলে সাদেক শেখ জীবন। তিনি জানান, আমার ভাইয়া, আপুকে ঢাবিতে পড়াশোনা করানোর স্বপ্ন ছিল বাবার। কিন্তু তারা তা পারেননি। তাই আক্ষেপ গোছাতে বাবা পরীক্ষা দিচ্ছেন। আমি বাবার সঙ্গে এসেছি, বাবা পরীক্ষার হলে প্রবেশ করেছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।