ঢাকাই সিনেমার একসময়ের তুমুল জনপ্রিয় নায়িকা শাবনূরের সংসার ভেঙে গেলো। গেল মাসেই বিচ্ছেদ হয়ে যায় শাবনূর ও অনিক মাহমুদ হৃদয়ের দাম্পত্যজীবন। গত বছরের শেষ দিকে ঢাকায় এসে এই সিদ্ধান্ত নেন শাবনূর। বিচ্ছেদের কারণ হিসেবে শাবনূর জানান, বনিবনা না হওয়ার কারণেই সংসারে বিচ্ছেদ চেয়েছেন তিনি।
তবে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে শাবনূরের স্বামী অনীক মাহমুদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তিনি কোনো ধরনের নোটিশ হাতে পাননি। অনীকের দাবি, আজ সকালেই শাবনূরের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। কিন্তু ডিভোর্সের ব্যাপারে তো কোনো কিছু বলেননি! উল্টো জানতে চেয়েছেন কে বা কারা এই ধরনের খবর ছড়িয়েছে।
২০১২ সালের ২৮ ডিসেম্বর ভালোবেসে দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে করেন শাবনূর ও অনীক মাহমুদ। বিয়ের পরের বছরই ২৯ ডিসেম্বর এই দম্পতির ঘর আলোকিত করে আসে ছেলেসন্তান। চলতি বছরের জানুয়ারিতে তার সংসার ভাঙনের দিকে একধাপ এগিয়ে যায়।
বেশ কিছুদিন ধরে বিনোদন অঙ্গনে গুঞ্জন, শাবনূর-অনীকের বিচ্ছেদ হয়ে গেছে। সে সময় অনীক বলেছিলেন, এমন কিছু হয়নি। তারা একসঙ্গেই আছেন, ভালো আছেন।
শাবনূরের পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, দুই পরিবার মিলে কয়েক দফা আলোচনা করে সংসার টিকিয়ে রাখতে চেয়েছে। কিন্তু দুজনের মতের অমিল এতটাই চূড়ান্ত রূপ ধারণ করে, তাই আলাদা হওয়া সিদ্ধান্ত নিতে হয়।
নোটিশের অনুলিপি অনিকের এলাকার আইন ও সালিশ কেন্দ্রের চেয়ারম্যান এবং কাজী অফিস বরাবরও পাঠানো হয়েছে। এই তালাক নোটিশে সাক্ষী রয়েছেন মো. নুরুল ইসলাম ও শামীম আহম্মদ নামে দুজন।
তবে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন তালাকের নোটিশ এবং হলফনামা প্রস্তুতকারী অ্যাডভোকেট কাওসার আহমেদ। তিনি এক গণমাধ্যমে বলেন, ‘গত ২৬ জানুয়ারি অনিকের সঙ্গে বিবাহ বন্ধন ছিন্ন করেছেন শাবনূর। গত ৪ ফেব্রুয়ারি অনিকের উত্তরা এবং গাজীপুরের বাসার ঠিকানায় সেই নোটিশ পাঠানো হয়।
উত্তরার নোটিশটি ফেরত এলেও গাজীপুরের ঠিকানায় পাঠানো নোটিশ এখনো ফেরত আসেনি। নোটিশটি অনিক গ্রহণ না করলে এর মধ্যেই ফেরত আসত। তবে আইনগতভাবে তাঁদের এই তালাক কার্যকর হবে ৯০ দিন পর।’
আরো পড়ুন: ভেঙে গেল শাবনূরের সংসার
২০১১ সালের ৬ ডিসেম্বর অনিকের সঙ্গে শাবনূরের আংটি বদল হলেও ২০১২ সালের ২৮ ডিসেম্বর বিয়ে করেন তারা। ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর তাদের কোলজুড়ে আসে আইজান নিহান নামে এক পুত্রসন্তান।
তালাক নোটিশে শাবনূর বলেছেন, ‘আমার স্বামী অনিক মাহমুদ হৃদয় সন্তান এবং আমার যথাযথ যত্ন ও রক্ষণাবেক্ষণ করেন না। সে মাদকাসক্ত। অনেকবার মধ্যরাতে মদ্যপ অবস্থায় বাসায় এসে আমার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়েছে। আমাদের ছেলের জন্মের পর থেকে সে আমার কাছ থেকে দূরে সরে থাকছে এবং অন্য একটি মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে আলাদা বসবাস করছে।
একজন মুসলিম স্ত্রীর সঙ্গে তার স্বামী যে ব্যবহার করেন অনিক সেটা করছেন না, উল্টো নানাভাবে আমাকে নির্যাতন করে। এসব কারণে আমার জীবনে অশান্তি নেমে এসেছে। চেষ্টা করেও এসব থেকে তাকে ফেরাতে পারিনি। বরং আমার সন্তান এবং আমার ওপর নির্যাতন আরো বাড়তে থাকে। উপরোক্ত কারণগুলোর জন্য মনে হয়ে তার সঙ্গে আমার আর বসবাস করা সম্ভব নয় এবং আমি কখনো সুখী হতে পারব না।
তাই নিজের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ এবং সুন্দর জীবনের জন্য তার সঙ্গে সব সম্পর্ক ছেদ করতে চাই। মুসলিম আইন এবং শরিয়ত মোতাবেক আমি তাকে তালাক দিতে চাই। আজ থেকে সে আমার বৈধ স্বামী নয়, আমিও তার বৈধ স্ত্রী নই।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।