জুমবাংলা ডেস্ক : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষার্থী সালাউদ্দিন জনি।
স্বপ্ন ছিল তার বৈমানিক হওয়া। বৈমানিক হতে না পারলেও বানিয়েছেন একটি ছোট বিমান।
সালাউদ্দিন ছোট থেকেই ভাবতো কীভাবে বিমানের পাইলট হতে পারবে। ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈলের বলিদ্বারা গ্রামের দরিদ্র কৃষক পরিবারে বেড়ে ওঠা জনির স্বপ্ন থেমে থাকেনি।
কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে ভর্তি হন গোপালগঞ্জের বশেমুরবিপ্রবির কৃষি বিভাগে। বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃষি বিভাগে পড়লেও তাকে বিমানের বিভিন্ন বিষয় প্রচুরভাবে টানত। বন্ধুদের নিয়ে প্রতিষ্ঠিত করেন বশেমুরবিপ্রবি বিজ্ঞান ক্লাব। সেখানে শুরু করেন ড্রোন বানানোর কাজ।
গবেষণার শুরুর দিকে তিনি একটি ড্রোন তৈরি করেন, যার ওজন ছিল পাঁচ কেজি ও লম্বায় ছিল পাঁচ ফুট। এটি সর্বোচ্চ চার কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এক হাজার ফুট উচ্চতায় ৩৫ মিনিট ধরে উঠতে সক্ষম হয়েছিল।
এর ধারাবাহিকতায় স্বপ্ন বাস্তবায়নের প্রচেষ্টায় বাঁশ, কাঠ, কর্কশিট, ফোমশিট ব্যবহার করে ছোট আকারের ড্রোন বানানোর চেষ্টা করতেন এবং আড়াই বছরের মাথায় সফলভাবে ড্রোনটি বানাতে পারেন। যার ওজন এক কেজি।
পরীক্ষামূলকভাবে এই ড্রোনটি পাঁচ কিলোমিটার নিয়ন্ত্রণ রেখার ভিতরে সর্বোচ্চ তিন হাজার ফুট উচ্চতায় এবং ১০০ কিলোমিটার গতিতে ২০ মিনিট উড্ডয়ন করতে পারে।
প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলের সালাউদ্দিন বিমান আবিষ্কার করেছেন, এমন খবরে খুশি তার জেলার মানুষ।
সালাউদ্দিন জনি বলেন, ‘আমি স্বপ্ন দেখি এমন একটি স্বপ্নের বাংলাদেশের যেখানে দেশেই ছেলেমেয়েরা অত্যাধুনিক বিমান তৈরি করবে এবং বৈশ্বিক বিমান শিল্পে নেতৃত্ব দেবে’।
আর্থিক সমস্যা থাকায় প্রজেক্ট নিয়ে তিনি ঠিকভাবে কাজ করতে পারছেন না। সহযোগিতা পেলে ভালো কিছু করতে পারবেন। এজন্য সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসককে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে, সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ও সম্প্রতি চালুকৃত বঙ্গবন্ধু অ্যারোস্পেস অ্যান্ড অ্যারোনোটিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে তরুণদের পড়ার সুযোগ করে দিলে আগামীতে যে বিমান তৈরি করা হবে সেগুলো দেশের তরুণরাই তৈরি করতে সক্ষম হবে বলে মনে করেন, বিমান আকৃতির ড্রোন আবিষ্কারক তরুণ সালাউদ্দীন জনি।
ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, কোনো সহযোগিতা ছাড়াই দৃঢ় ও বিস্ময়কর কাজ করতে সক্ষম হয়েছে সালাউদ্দিন। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে সহায়তা করা হয়েছে। এ বিষয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হবে। সেখান থেকে যদি সালাউদ্দিনকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করা হয় তাহলে দেশ ও জাতি তার কাছ থেকে অনেক ভালো কিছু পেতে পারে।
মনের ইচ্ছা থাকলে স্বপ্ন পূরণ করা কঠিন কিছু নয়। জনির মতো তরুণরা নিজেদের স্বপ্ন পূরণে আরও কঠোর পরিশ্রম করলে দেশ দেখবে এক সোনালি ভবিষ্যৎ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।