স্পোর্টস ডেস্ক: ওয়ানডে সিরিজ শেষে এবার দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টির লড়াইয়ে মাঠে নামলো বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করেছে টাইগাররা।
তবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে এই ফরম্যাটে কাজটা সহজ নয় মোটেও। তার উপর কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে নিজেদের শেষ ৮ ম্যাচে জয় বঞ্চিত টাইগাররা। টি-টোয়েন্টি ঘুরে দাঁড়াতে একটা জয়ের খোঁজে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। সেই লক্ষ্যে খেলতে নেমে আগে ব্যাট করে স্কোর বোর্ডে ১৫৫ রানের সংগ্রহ পেয়েছে স্বাগতিকরা। আফগানদের সামনে চ্যালেঞ্জটা এখন ১৫৬ রানের।
বাংলাদেশ-আফগানিস্তানের মধ্যকার এ ম্যাচ দিয়েই গ্যালারিতে শতভাগ দর্শক ফিরিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। সতীর্থরা ব্যর্থ হলেও ব্যাট হাতে সমর্থকদের কিছুটা আনন্দের উপলক্ষ এনে দেওয়ার চেষ্টা করেন লিটন দাস। তার অর্ধশতকের উপর ভর করেই নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৫৫ রান করেছে বাংলাদেশ দল।
মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস ভাগ্য হাসে বাংলাদেশের পক্ষে। উইকেটের মান বিচারে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। টাইগার একাদশে দুই অভিষেক, ওপেনিংয়ে আলোচিত মুনিম শহরিয়ার এবং মিডল অর্ডারে ইয়াসির আলি রাব্বি। তবে বিস্ময়কর ঠেকলেও একাদশে টিকে গেছেন নাঈম শেখ। সেই নাঈমের সঙ্গে ইনিংসের গোড়াপত্তন করতে নামেন লিটন দাসের হাত থেকে অভিষেক ক্যাপ পরা মুনিম।
মারকুটে ব্যাটিংয়ের জন্য বেশ আলোচিত মুনিম অভিষেক ম্যাচের প্রথম বল থেকেই চড়াও হন। যদিও ফজল হন ফারুকির করা লেগ স্টাম্পের বাইরের সেই বলটি ব্যাটে-বলে হয়নি, আম্পায়ার মাসুদুর রহমান মুকুল ওয়াইডের সংকেত দেন। মুনিম অবশ্য রানের খাতা খোলেন চার দিয়েই। ইনিংসের দ্বিতীয় বলে ফারুকিরকে কাভারের উপর দিয়ে মেরে ৪ রান বের করেন মুমিন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এটির তার প্রথম রান।
মুনিম সাবলীল শুরু করলেও প্রথম বল থেকে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতিতে ভুগতে দেখা যায় নাঈমকে। প্রশ্নবিদ্ধ ব্যাটিংয়ে ৫ বল খেলে ২ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন এই বাঁহাতি।
মুনিম শুরুটা ভালো পেলেও সেটি টানতে পারেননি। নিজের প্রথম ওভার হাত ঘোরাতে এসে মুনিমকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন রাশিদ খান। ১৮ বলে ৩ চারে ১৭ রানে ফেরেন মুনিম।
ওপেনিং ছেড়ে লিটন দাস নামেন তিনে। মুনিমের আউটের পর চারে ব্যাট করতে আসেন সাকিব আল হাসান। দলীয় ২৫ রানে ২ উইকেট হারানোর পর এই দুই জন চেষ্টা চালান দলীয় স্কোর বড় করার। তবে লিটনকে সঙ্গ দিতে পারেননি সাকিব। আরেক স্পিনার কাইস আহমেদকে সুইপ করতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন মুজিব উর রহমানের হাতে। ৬ বলে ৫ রান করে আউট সাকিব। তার ব্যাটে ছিল না কোনো বাউন্ডারির মার। এতে ভাঙে ২২ রানের পার্টনারশিপ।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ব্যর্থ মাহমুদউল্লাহ টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে বার্তা দেন, প্রথব বল থেকেই চার-ছয় মারার চেষ্টা করবেন তিনি। তবে ম্যাচের চাহিদা বুঝে নিজের খেলা প্রথম বলেটি শট ফাইন লেগে ঠেলে দিয়ে নেন ১ রান। যদিও পরে কাইসকে উড়িয়ে মেরে বার্তা দিয়েছিলেন বিধ্বংসী হওয়ার, তবে থিতু হতে পারেননি। ইনিংসের ১১তম ওভারে আজমতুল্লাহর বল তার পায়ে লাগলে আম্পায়ার আউটের সিদ্ধান্ত দেন।
মাহমুদউল্লাহ ১ ছয়ে ৭ বলে ১০ রান করে আউট হলেও অপর প্রান্তে রান তোলার গতি সচল রাখেন লিটন। ওয়ানডের ফর্ম টেনে নিয়ে আসেন টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটেও। আফগানদের স্পিন অ্যাটাক সুনিপুণভাবে সামলে কুড়ি ওভারের ফরম্যাটে নিজের ষষ্ঠ ফিফটি তুলে নেন তিনি। মাত্র ৩৪ বলে ৩টি চার ও ২টি ছয়ের মারে এই মাইলফলক ছুঁয়েছেন লিটন। যদিও সেই ইনিংসটি থামে ৬০ রানে। ফারুকির দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন ৪৪ বলে ৬০ রানে।
ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাট করতে নামা আফিফ ত্রিশ রানের গণ্ডি পার করতে পারেননি। ইনিংসের ১৮তম ওভারে আজমতউল্লাহকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে কাভারে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ২৪ বলে ২ চারে ২৫ রানে।
লিটন আউট হলে শেষ ৩ ওভারে ২৯ রান তুলতে পারে বাংলাদেশ দল। উইকেট হারায় আরো ৩টি। ইয়াসির আলি আর শেখ মেহেদী হাসান দুজনেই রান আউট হন। যেখানে ইয়াসির ৭ বলে ৮, সমান ৭ বল খেলে মেহেদী করেন ৫ রান। সঙ্গে নাসুম আহমদের ২ বলে ৩ এবং শরিফুল ইসলামের ১ বলে অপরাজিত ৪ রানের কল্যাণে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৫৫ রানের সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ দল।
আফগানিস্তানের হয়ে ফারুকি এবং আজমতউল্লাহ ২টি করে উইকেট নেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।