জুমবাংলা ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের প্রথম মেট্রোরেল সার্ভিসের উদ্বোধন করায় দেশের যাতায়াত ব্যবস্থা নতুন যুগে প্রবেশ করেছে। খবর ইউএনবি’র।
বুধবার সকাল ১১টায় তিনি উত্তরা সেক্টর-১৫ এর খেলার মাঠ থেকে প্রকল্পের প্রথম ধাপ উত্তরা-আগারগাঁও অংশের কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
দিবসটি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী একটি স্মারক ডাকটিকিট ও একটি নোট উন্মোচন করেন।
যেহেতু সরকার সীমিত পরিসরে কার্যক্রম শুরু করছে, তাই উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার দূরত্ব যেতে ২০ মিনিট সময় লাগবে, তবে শিগগিরই তা ১৬-১৭ মিনিটে নেমে আসবে।
ভারত ও পাকিস্তানের পর বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের তৃতীয় দেশ যেখানে মেট্রোরেল রয়েছে। ভারত ১৯৮৪ সালে কলকাতায় প্রথম ৩ দশমিক ৪ কিলোমিটার আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রোরেল চালু করে, অন্যদিকে পাকিস্তান ২০২০ সালের অক্টোবরে লাহোরে মেট্রোলাইন চালু করে।
প্রথম পর্যায়ে অল্প যাত্রী বহনকারী সীমিত সংখ্যক ট্রেন সকালে ও বিকালে স্বল্প সময়ের জন্য চলবে এবং অভ্যস্ত হওয়ার নির্ধারিত সময় হিসেবে তিন মাস গতি স্বাভাবিকের চেয়ে কম থাকবে।
যাত্রীদের নতুন আসন ও টিকিট ব্যবস্থার সঙ্গে অভ্যস্ত হওয়ার জন্য ট্রেনগুলো স্টেশনে স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি সময় অপেক্ষা করবে। ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে স্টেশনগুলোতে কম সময় অপেক্ষা করবে, যা ভ্রমণের সময় কমিয়ে আনবে।
শুরুতে সব স্টেশনে ট্রেন থামবে না। ট্রেনটি উত্তরা স্টেশন থেকে ছেড়ে পল্লবীতে থামবে, তারপর না থামিয়ে আগারগাঁও যাবে। মধ্যবর্তী স্টেশনগুলোতে ট্রেন থামানো শুরু হবে পরবর্তীতে।
প্রাথমিকভাবে ট্রেনটি ২০০ থেকে ২৫০ যাত্রী এবং পরে ৭০০ থেকে ৮০০ যাত্রী বহন করবে। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত যে ১২টি ট্রেন চলাচলের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে, তার মধ্যে ১০টি নিয়মিত চলবে এবং যেকোনো সমস্যার জন্য দুটিকে স্ট্যান্ডবাই রাখা হবে।
টিকিট সিস্টেম ও ভাড়া
ঢাকায় মেট্রোরেলে ভ্রমণ করতে চান এমন যাত্রীদের জন্য টিকিটের জন্য দুটি ব্যবস্থা রয়েছে: অটোমেটেড ও ম্যানুয়াল।
অটোমেটেড ব্যবস্থায় যাত্রীরা নিজেরাই তাদের টিকিট পেতে পারেন, তবে একজন যাত্রী একবারে সর্বোচ্চ পাঁচটি টিকিট পেতে পারবেন।
এছাড়াও, যারা অটোমেটেড ব্যবস্থাকে বিভ্রান্তিকর মনে করেন, তারা কাউন্টার থেকে নগদ অর্থ প্রদানের মাধ্যমে টিকিট কেনার প্রচলিত পদ্ধতি অনুসরণ করে ম্যানুয়ালি তাদের টিকিট পেতে পারেন।
টিকিট পাওয়ার পর সকল যাত্রীকে একটি স্মার্ট পাসকার্ড ব্যবহার করে গেট দিয়ে প্রবেশ করতে হবে এবং তারা তৃতীয় তলায় প্ল্যাটফর্মে যেতে এসকেলেটর ব্যবহার করতে পারবে।
ঢাকা মেট্রোরেলের সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ টাকা এবং উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত সর্বোচ্চ ভাড়া ১০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রথম ধাপে উত্তরা স্টেশন থেকে আগারগাঁও স্টেশন পর্যন্ত ভাড়া হবে ৬০ টাকা। উত্তরা (উত্তর) থেকে উত্তরা (সেন্ট্রাল) এবং উত্তরা-(দক্ষিণ) স্টেশনের ভাড়া ২০ টাকা।
এছাড়া উত্তরা উত্তরের প্রথম স্টেশন থেকে পল্লবী ও মিরপুর-১১ স্টেশন পর্যন্ত ভাড়া ৩০ টাকা, মিরপুর ১০ ও কাজীপাড়া স্টেশন পর্যন্ত ৪০ টাকা এবং শেওড়াপাড়া স্টেশন পর্যন্ত ভাড়া ৫০ টাকা।
ডিএমটিসিএল এর মতে, ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ মতিঝিল পর্যন্ত রেল চলাচল এবং ২০২৫ সালের মধ্যে কমলাপুর শুরু হতে পারে।
২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে আগারগাঁও থেকে কমলাপুর রুটে ২৪টি ট্রেন দিয়ে মেট্রোরেল চলাচল শুরু করবে।
ট্রেনটি ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার বেগে চলবে বলে ২১ দশমিক ১৬ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করে আগারগাঁও থেকে কমলাপুর পৌঁছতে ৩৮ থেকে ৪০ মিনিট সময় লাগবে।
মেট্রোরেল প্রকল্পটি ২০১২ সালে নেয়া হয়েছিল এবং পরের বছর জাপানের উন্নয়ন সহযোগিতা সংস্থা জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) সঙ্গে একটি ঋণ চুক্তি সই হয়।
২০১৭ সালে প্রকল্পের মূল নির্মাণ কাজ শুরু হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।