জুমবাংলা ডেস্ক : নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় একটি দোকানের জায়গা দখলকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতা জসিম উদ্দিন ভূঞা এবং যুবদল নেতা নাসির খন্দকারের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত অর্ধশতাধিক লোকজন আহত হয়েছেন।
আহতরা কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, কেন্দুয়া মধ্য বাজারে থাকা সোহেল আমিন নামে এক ব্যক্তির একটি দোকান ঘরের জায়গা দখল করতে যান পৌরশহরের দিগদাইর গ্রামের বাসিন্দা উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নাসির খন্দকারের বড় ভাই আল আমিন খন্দকার ও পৌর যুবদলের আহ্বায়ক উজ্জ্বল খন্দকার।
একই সময় সোহেল আমিনের পক্ষ নিয়ে ওই দোকানে যান নেত্রকোনা জেলা উপজেলা বিএনপি সভাপতি জয়নাল ভূঞার বড় ভাই এবং উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি সাইফুল ভূঞার বাবা উপজেলার চকবাট্টা গ্রামের বাসিন্দা বিএনপি নেতা জসিম উদ্দিন ভূঞা।
একপর্যায়ে দুপক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে যুবদল নেতা নাসির খন্দকারের পক্ষে পৌরসভার দিগদাইর গ্রামের লোকজন এবং বিএনপি নেতা জসিম উদ্দিন ভূঞার পক্ষে উপজেলার চিরাং ইউনিয়নে চকবাট্টা গ্রামের লোকজন সংঘর্ষে জড়িত হয়। এতে উভয়পক্ষের অন্তত অর্ধশত লোকজন আহত হন।
এ দিকে সংঘর্ষের সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী ছুটে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন।
এ ব্যাপারে বিএনপি নেতা জসিম উদ্দিন ভূঞার মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
জসিম উদ্দিন ভূঞার ছোট ভাই উপজেলা বিএনপির সভাপতি জয়নাল আবেদীন ভূঞা জানান, যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নাসির খন্দকারের ভাই আল আমিন খন্দকার ও উজ্জ্বল খন্দকার লোকজন নিয়ে সোহেল আমিনের দোকানে তালা দিয়েছিল। পরে আমাদের লোকজন বাধা দিলে দোকানের তালা খুলে দেন। কিন্তু দোকানে ব্যবসা পরিচালনা করতে তাদেরকে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে বলে দাবি করে। এ বিষয় নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের একপর্যায়ে উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নাসির খন্দকার ও তার লোকজন আমাদের লোকজনের ওপর গুলি চালায়।
এ বিষয়ে জানতে উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নাসির খন্দকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে নাসির খন্দকারের চাচা পৌর যুবদলের আহ্বায়ক উজ্জ্বল খন্দকার জানান, মধ্য বাজারে থাকা সোহেল আমিন নামের দোকানের মালিক নাসির খন্দকারের ভাই আল আমিন খন্দকার। তিনি তার দোকানে তালা মেরে দেন। এ ঘটনায় উপজেলা বিএনপির সভাপতি জয়নাল আবেদীন ও তার ভাই জসিম উদ্দিন ভূঞা টাকার বিনিময়ে দোকানের তালা খুলে সোহেল আমিনকে বুঝিয়ে দেয়। এ নিয়ে তর্ক বিতর্কের পরই সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে।
উজ্জ্বল খন্দকার আরও জানান, সভাপতি জয়নাল আবেদীন আমাদের লোকজনের বিরুদ্ধে গুলির যে অভিযোগ করেছে তা মিথ্যা। এখানে গুলির কোনো ঘটনা ঘটেনি।
তিনি আরও বলেন, আমরা দুই গ্রুপই জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম হিলালী গ্রুপের লোকজন।
কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. অনুপ কুমার সরকার জনান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৫ জনের মতো চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় তাদেরকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে দুজন গুলিবিদ্ধ থাকার কথাও জানান তিনি।
কেন্দুয়া থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান আকন্দ জানান, কেন্দুয়া পৌর শহরের মধ্যবাজারে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। পুলিশ এবং সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।