আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনার তান্ডবে বিপর্যস্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। করোনায় আক্রান্তের শীর্ষে থাকা দেশটিতে কার্যত প্রতিদিন আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা, দীর্ঘ হচ্ছে লাশের সারি। দেশটিতে সবচে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে। সেখানে প্রতিদিন মারা যাচ্ছে শত শত মানুষ। আর তাদের দেয়া হচ্ছে গণকবর। ড্রোনে তোলা ছবিতে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
মুখ থেকে শুরু করে পা পর্যন্ত ঢাকা ‘হ্যাজমাট’ স্যুট পরা কর্মীদের কাজ করতে দেখা যাচ্ছে বিরাট এক গণকবরে। তারা মই দিয়ে সেই কবরে নামছে, একটার পর একটা কফিন সেখানে রাখছে।
বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, নিউইয়র্কে বিরাট গণকবরে এক সঙ্গে বহু মানুষকে কবর দেয়া হচ্ছে বলে দেখা যাচ্ছে ড্রোন দিয়ে তোলা ছবি এবং ভিডিওতে।
এই কবরস্থানটি হচ্ছে নিউইয়র্কের হার্ট আইল্যাণ্ডে। সেখানে গত দেড়শ বছর ধরেই গণকবরের জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ড্রোনে তোলা ছবিতে যেসব কফিন দেখা যাচ্ছে, তার বেশিরভাগই করোনাভাইরাসে মারা যাওয়া মানুষের, এমন সম্ভাবনাই বেশি বলে মনে করা হচ্ছে।
সাধারণত যেসব মৃত ব্যক্তির কোনো আত্মীয়-স্বজনের খোঁজ পাওয়া যায় না বা যাদের শেষকৃত্যানুষ্ঠানের খরচ দেওয়ার সাধ্য নেই, তাদেরকেই এখানে কবর দেওয়া হয়।
করোনাভাইরাসের মহামারি শুরু হওয়ার পর এই জায়গায় গণকবর খোঁড়া হচ্ছে। আগে যেখানে সপ্তাহে একদিন হয়তো পরিচয়বিহীন কোনো মরেদহ সৎকার করা হতো। এখন সেখানে সপ্তাহে পাঁচদিন খনন কাজ চলছে।
সাধারণত রিকার্স আইল্যান্ডের কারবন্দিদের দিয়ে কবর খোঁড়ানো হয়। কিন্তু এখন যেহেতু অনেক বেশি কবর খুঁড়তে হচ্ছে, তাই এই কাজ দেয়া হয়েছে ঠিকাদারদের।
নিউইয়র্কের মেয়র বিল ডে ব্ল্যাসিও ইঙ্গিত দিয়েছেন যে সংকট কেটে না যাওয়া পর্যন্ত হয়তো অনেককে ‘অস্থায়ী কবরে’ সমাহিত করতে হতে পারে।
তিনি বলেন, ঐতিহাসিকভাবে আমরা হার্ট আইল্যান্ডকেই এই কাজে ব্যবহার করেছি। এন্ড্রু কামো নিউইয়র্কে করোনাভাইরাসের মহামারির ভয়াবহতাকে নাইন-ইলেভেনের ভয়াবহতার সঙ্গে তুলনা করেছিলেন।
বৃহস্পতিবারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, নিউইয়র্কে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৫৯ হাজার ৯শ ৩৭। মারা গেছে সাত হাজার। গত ২৪ ঘণ্টায় ৭৯৯ জন করোনাভাইরাসে মারা গেছে। টানা তৃতীয় দিনের মতো সেখানে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড হলো।
অন্যদিকে স্পেনে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ১ লাখ ৫৩ এবং ইতালিতে ১ লাখ ৪৩ হাজার। আর চীনে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৮২ হাজার।
আর পুরো যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৪ লাখ ৬২ হাজার। মৃত্যু ঘটেছে ১৬ হাজার ৫শ মানুষের।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



