স্পোর্টস ডেস্ক: স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে দাপট দেখাচ্ছে বাংলাদেশ। যদিও নিউজিল্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশ দলের জয় নেই একটিতেও। ৯ টেস্টের সবগুলোতেই হার।
তবে এবার ভিন্ন এক বাংলাদেশকে দেখছে ক্রিকেটবিশ্ব। বে-ওভালে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে নিউজিল্যান্ডকে ৩২৮ রানে থামিয়ে দেন বাংলাদেশের পেসাররা।
দ্বিতীয় দিনে ব্যাট হাতে মাহমুদুল হাসান জয় ও নাজমুল হোসেন শান্তর রাজত্বের পর আজ দুর্দান্ত খেললেন লিটন দাস ও মুমিনুল হক।
মুমিনুল-লিটন জুটিতে ভর করে ৭৩ রানের লিড নিয়ে তৃতীয় দিন শেষ করল বাংলাদেশ।
দিনশেষে বাংলাদেশের রান ১৫৬ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ৪০১।
২০ রান নিয়ে মেহেদী হাসান মিরাজ ও ইয়াসির আলি রাব্বি ১১ রান নিয়ে ব্যাট শুরু করবেন আগামীকাল।
নিউজিল্যান্ডের মাটিতে এর আগেও লিড নিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে সেটি ছিল দ্বিতীয় ইনিংসে। এবারই প্রথমবারের মতো এশিয়ার বাইরে পরে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে লিডের দেখা পেলেন টাইগাররা।
অর্থাৎ এশিয়ার বাইরে পরে ব্যাট করে প্রথমবারের মতো প্রথম ইনিংসে লিড নেওয়ার রেকর্ড গড়েছেন টাইগাররা।
আজ বাংলাদেশ দারুণ ব্যাট করলেও সেঞ্চুরি না করার আক্ষেপে পুড়তে হয়েছে মুমিনুল ও লিটনকে। বাংলাদেশ অধিনায়ক থেমেছেন ৮৮ রানে। মুমিনুলের সাজঘরে ফেরার পর বেশিক্ষণ টেকেননি লিটনও। ৮৬ রানে বোল্টের বলে উইকেটকিপার ব্লান্ডেনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি।
সাধারণ খেলতে খেলতেই হঠাৎ করে একটি লুজ শট খেলে ফেললেন লিটন দাস। শরীরের অনেক বাইরের বল খেলতে গিয়ে ব্যাটের কানায় লাগালেন। উইকেটের পেছনে টম ব্লান্ডেল ক্যাচটি তালুবন্দি করলে বিদায় নিতে হয় লিটনকে।
এর আগে ১৪০তম ওভারে বোল্টের করা শেষ বলটি উঁচুতে ওঠে। ঠিকভাবে খেলতে পারেননি মুমিনুল। প্যাডে লাগলে আপিল করেন বোল্ট। আম্পায়ার আউট দিলেও রিভিউ নেন মুমিনুল। তবে রিভিউতে হেরে গেলে ৮৮ রানে থামে বাংলাদেশ অধিনায়কের প্রথম ইনিংস।
২৪৪ বলে ১২ চারের মারে ৮৮ রান করেছেন মুমিনুল। এতে পঞ্চম উইকেটে মুমিনুল-লিটন গড়েন ১৫৮ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি।
বাংলাদেশের ব্যাটিং ইনিংসে এখন পর্যন্ত নামের সুবিচার করতে পারেননি মুশফিকুর রহিম।
দিনের শুরুতে মাত্র ৮ রান ব্যক্তিগত ৭৮ রানে আউট হয়ে যান তরুণ ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। নেইল ওয়াগনারের বলে গালিতে হেনরি নিকোলসের তালুবন্দি হন এই তরুণ ওপেনার। ২২৮ বল খেলে ৭৮ রান করেন তিনি।
জয় আউট হতেই মাঠে নামেন মুশফিকুর রহিম। ৫৩ বল খেলে মাত্র ১২ রান করে ট্রেন্ট বোল্টের বলে বোল্ড হয়ে গেলেন মি. ডিপেন্ডেবল। মাত্র ১৯ রানের জুটি গড়েন মুমিনুলেন সঙ্গে।
গতকাল দুই ওপেনার সাদমান ও জয় মিলে এগিয়ে নিচ্ছিলেন স্কোরবোর্ড। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি সাদমান। নিল ওয়াগনারকে রিটার্ন ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন এই ওপেনার। তাতে ৪৩ রানে প্রথম উইকেট হারায় সফরকারীরা। ফেরার আগে ৫৫ বলে এক বাউন্ডারিতে ২২ রান করেন সাদমান।
তার পরেই দারুণ ব্যাটিংয়ে কিউই বোলারদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়েছেন শান্ত ও জয়। দু’জনের প্রতিরাধে এই জুটিতে যোগ হয় ১০৪ রান। পরে এই জুটি ভেঙে দেন ওয়াগনার। ফুল লেংথের বলে শান্তকে ক্যাচ বানান ইয়াংয়ের। শান্তর ৬৪ রানের ইনিংসে ছিল ৭টি চার ও ১টি ছয়। গতকালকের মূল প্রতিরোধটাই এই দু’জন।
এর আগে নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংসে ১০৮.১ ওভারে অলআউট হয়ে যায় ৩২৮ রানে। ৭০ রান যোগ করতে শেষ ৫ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। যার মধ্যে টানা তিনটিই ছিল মিরাজের শিকার। বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল বোলার শরিফুল। বাঁহাতি পেসার ২৬ ওভারে ৬৯ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট। মিরাজও পেয়েছেন ৩ উইকেট, ৩২ ওভারে তার খরচ ৮৬ রান। অন্যদিকে পার্টটাইম বোলার মুমিনুলও সাফল্যের সাগরে ভেসেছেন। ৪.১ ওভারে মাত্র ৬ রান দিয়ে তিনি নিয়েছেন কনওয়ে ও নিকোলসের গুরুত্বপূর্ণ উইকেট দুটি। এবাদত হোসেন পেয়েছেন ১ উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
নিউজিল্যান্ড ৩২৮/১০ (১০৮.১ ওভার)
কনওয়ে ১২২, নিকোলস ৭৫, ইয়ং ৫২, টেলর ৩১, লাথাম ১;
শরিফুল ২৬-৭-৬৯-৩, মিরাজ ৩২-৯-৮৬-৩, মুমিনুল ৪.১-০-৬-২।
বাংলাদেশ ৪০১/৬ (১৫৬ ওভার)
মুমিনুল ৮৮, লিটন ৮৬, জয় ৭৮, শান্ত ৬৪, সাদমান ২২, মিরাজ ২০*, মুশফিক ১২, ইয়াসির ১১*;
বোল্ট ৩০-১১-৬১-৩, ওয়াগনার ৩৮-৯-৯৮-৩।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।