আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পশ্চিমবঙ্গের এক পাড়াগাঁয়ের বছর ১২ বয়সের মেয়ে লিসা (ছদ্মনাম), দুরারোগ্য লিভার জটিলতায় ভুগছিলো বেশ কয়েক মাস হলো।
বাঁচার আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলো তিনি, ঘুরে ফিরে আশা জ্বর ও জন্ডিসে শরীর ফ্যাকাসে হয়ে গিয়েছিলো। তাদের নিম্নবিত্ত পরিবারের আর্থিক অবস্থাও ব্যয়বহুল চিকিৎসার জন্য সঙ্গতিপূর্ণ নয়। তবে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ ও প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় সে আশার আলো দেখে। সিদ্ধান্ত হয় লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করানোর।
কিন্তু এ এমন এক পদ্ধতি যেখানে প্রয়োজন পরে সুস্থ নিকটজনের লিভারে অংশ, যা অকেজো লিভারকে প্রতিস্থাপন করে। লিসার বাবা-মা’ দুজনের কেউই শারীরিক ও বয়সের কারণে লিভার দানের উপযোগী ছিলেন না। এ অবস্থায় অসুস্থ লিসার একমাত্র ভরসা ১৯ বছর বয়সী কলেজ পড়ুয়া বড়বোন মিসা।
মার্চের মাঝামাঝি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ে ভারতে লকডাউন শুরু হয়। এরই মধ্যে মিসার জ্বরসহ করোনার কয়েকটি উপসর্গ দেখা দেয়। পরীক্ষা করে তার শরীরে কোভিড ১৯ পজিটিভ পাওয়া যায়। এরপর তাকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়, তার বাবাও আইসোলেশনে চলে যান। দিল্লীর যে হাসপাতালে লিভার ট্রান্সপ্লান্টের প্রস্তুতি চলছিলো সেখানে মা ও অসুস্থ কিশোরী লিসা থেকে যান। এক পর্যায়ে শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় লিসাকে নেয়া হয় আইসিইউতে।
এদিকে টানা তিন সপ্তাহ কোয়ারেন্টাইনে থেকে দুইবার টেস্টের পর কোভিড নেগেটিভ হয় মিসা। এবার, লিসার শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয় মিসার ডোনেট করা লিভারের অংশ।
গল্পের মত মনে হলেও এটা দিল্লীর ম্যাক্স স্পেশালটি হাসপাতালে ঘটে যাওয়া সত্য ঘটনা। ড. সুভাস গুপ্তার তত্ত্বাবধানে সফল লিভার ট্রান্সপ্লান্টের পর এখন সুস্থতার পথে লিসা। আর এটাই করোনা মহামারিতে দক্ষিণ এশিয়া-তো বটেই বিশ্বের চিকিৎসা ব্যবস্থায় যুক্ত করলো নতুন মাত্রা।
পুরো ঘটনাটি সময় সংবাদকে জানিয়েছেন হাসপাতালটির লিভার ট্রান্সপ্লান্ট টিমের সদস্য ও লিভার সার্জন ড. রাজেশ দে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।