জুমবাংলা ডেস্ক : দেশে খাদ্য, উৎপাদন ও স্যানিটেশন ব্যবস্থায় সরাসরি পানির ব্যবহার জড়িত থাকলেও ৬০ শতাংশ অর্থাৎ ৬ কোটি ৯৫ লাখ মানুষ নিরাপদ পানিপ্রাপ্তির বাইরে রয়েছে। ৫৯ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ দূষিত পানি ব্যবহারে বাধ্য হচ্ছে। শহরাঞ্চলে বসবাসকারীদেরও বিপুলসংখ্যক মানুষ নিরাপদ পানি পাচ্ছে না। একইভাবে চর ও দুর্গম অঞ্চলে বসবাসরত ৪০ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে দৈনন্দিন ব্যবহার্য পানি সংগ্রহে বাড়ি থেকে দূর-দূরান্তে যেতে হচ্ছে। নিরাপদ পানির অভাব ও পানি স্যানিটেশন এবং হাইজিন ব্যবস্থাপনা চ্যালেঞ্জ বাড়ছে।
শনিবার (২৩ মার্চ) রাজধানীর বাড্ডার সাতারকুলের ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। পানি, স্যানিটেশন এবং জলবায়ু পরিবর্তনে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ড্রপ এবং দ্য ইন্টারন্যাশনাল ওয়াটার অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্ট্রি বোর্ডের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী। সঞ্চালনা করেন ডরপ এর উপ-নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ যোবায়ের হাসান।
এ সময় প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রো ভাইস চ্যান্সেলর ড. গণেশ চন্দ্র সাহা। মূল আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) গবেষণা পরিচালক ড. মাহফুজ কবির।
প্যানেল আলোচক ছিলেন এসডিএস এর নির্বাহী পরিচালক এবং কানসা-বিডির চেয়ারপার্সন রাবেয়া বেগম, ওয়াটার এইড বাংলাদেশ প্রোগ্রাম এড পলিসি অ্যাডভোকেসির পরিচালক পার্থ হেফাজ সেখ, সিপিআরডি প্রধান নির্বাহী মো. শামসুদ্দোহা ও মো. মাসুদ হাসান, এসডাব্লিওএর সিএসও বাংলাদেশ ফোকাল প্রমুখ।
সভায় স্বাগত বক্তব্যে ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, দ্রুত জলবায়ু পরির্বতনে বৈশ্বিকভাবে যে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে তার প্রায় সবই ব্যর্থ হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের এই ক্ষতি মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত নই। এজন্য সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে কাজ করতে হবে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, কমিউনিটি বেইজ অর্গানাইজেশন ও এনজিও’র মতো বেসরকারি সংস্থাগুলোকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। নিরাপদ পানি নিশ্চিতে সরকারকে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো, মনিটরিং ও প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ করতে হবে।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) গবেষণা পরিচালক ড. মাহফুজ কবির বলেন, দেশে পানি ব্যবস্থাপনার ঘাটতি ও নিরাপদ পানির সংকট রয়েছে। পানির সঙ্গে খড়ার মতো দুর্যোগ, পরিবেশের ভারসম্য রক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তন জড়িত। কিন্তু নেত্রোকোনা সুনামগঞ্জ, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, গোপালগঞ্জ, লক্ষীপুর ও রাজবাড়ীর জেলায় ২০ শতাংশ এবং বাগের হার্ট ককক্রবাজার ছাড়া পাহাড় ও উপকূলীয় এলাকার ২০ থেকে ৪০ ভাগ মানুষ কম পরিমাণ নিরাপদ পানি সুবিধা পাচ্ছে। অথচ এই খাতে বরাদ্দ বাজেট ফেরত যাচ্ছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরেও ৫০ থেকে ৬০ ভাগ বাজেট ফেরত গেছে।
ওয়াটার এইড বাংলাদেশ প্রোগ্রাম এড পলিসি অ্যাডভোকেসির পরিচালক পার্থ হেফাজ সেখ বলেন, সরকার ২০১৩ সালে পানি আইন পাশ করেছে। আইনে সুপেয় পানি ও পরিচ্ছন্নতা ব্যবহারে অগ্রাধিকার দিতে বলা হয়েছে। জাতিসংঘ পানি স্যানিটেশন ও মানবাধিকার হিসেবে ঘোষণা করেছে। কিন্তু এখনো দুর্গম এলাকার জনগণের জন্য পানি প্রাপ্তির বাজেট এক শতাংশেরও কম।
সভায় বক্তারা সরকারকে দ্রুত নিরাপদ ও সুপেয় পানি নিশ্চিতে আহ্বান জানান। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিকক্ষ, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।