আমরা সবাই বই পড়ি, তবে সেই বই পড়া যে আমাদের কতটা আনন্দ দিয়ে থাকে সেটাই প্রশ্ন। বই পড়ার কারণে প্রধান যে প্রভাব আমাদের মনে পড়া উচিৎ তা হচ্ছে ‘আনন্দ’ অনুভব করা। অনেক ক্ষেত্রে আমাদের আপন মনেই প্রশ্ন জাগে যে, বই পড়লে ঠিক কী কী বিষয়ে আমরা লাভবান হই? অথবা, বই পড়ার সঠিক অর্থে কী কী উপকারিতা রয়েছে? আশা করা যায় এই লেখাটি পড়ে আপনি এই ব্যাপারে চমৎকার একটি ধারণা পেয়ে যাবেন।
২০১৫ সালে পরিচালিত এক গবেষণায় এমআরআই স্ক্যানের মাধ্যমে দেখা যায়- বই পড়ার সময় মস্তিষ্কের খুব জটিল নিউরাল নেটওয়ার্ক এবং সিগনাল সক্রিয় থাকে। আর যতই আপনার বই পড়া বৃদ্ধি পায়, ততই সেই তা শক্তিশালী হয়ে ওঠে। এই গবেষণায় দেখা যায়, এই ৯ দিনের বই পড়ার পরের সময়ে অংশগ্রহণকারীদের মস্তিষ্কের কানেক্টিভিটি বৃদ্ধি পেয়েছে, বিশেষ করে Somatosensory Cortex অংশে, যে অংশের কাজ শারীরিক সংবেদনশীলতার প্রতি সাড়া দেয়া।
যদিও বছরে মাত্র একটি বই পড়লে এসবের কিছুই কারো মধ্যে গড়ে উঠবে না, কিন্তু যদি কেউ নিয়মিত বই পড়ে, তাহলে সেক্ষেত্রে অবশ্যই সে অন্যদের তুলনায় অধিক বিকশিত একটি মন পাবে। গবেষণায় দেখা গেছে, যে ছাত্র যত আগে থেকে বই পড়ে আসছে, তার শব্দকোষ ভবিষ্যতে ততই সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে। আর একজন ছাত্রের সমৃদ্ধ শব্দকোষ তাকে ছাত্রজীবন এবং কর্মজীবন উভয় ক্ষেত্রেই অনেক সাহায্য করে।
নিয়মিত বই পড়ার অভ্যাস স্নায়বিক রোগ (অ্যালঝেইমার্স , ডিমেনশিয়া ইত্যাদি) প্রতিরোধ করে। তবে দেখা গেছে, নিয়মিত বই পড়া এবং জটিল গাণিতিক সমস্যা নিয়ে চর্চাকারীদের স্নায়ু অন্যদের তুলনায় উন্নত অবস্থায় থাকে। ৩০ মিনিটের বই পড়া রক্তচাপ, হৃদস্পন্দন ইত্যাদি স্বাভাবিক রাখতে যোগব্যায়াম এবং হাস্যরসের মতোই কার্যকর প্রমাণিত হয়।
রাতে পর্যাপ্ত ঘুমের জন্য বই পড়া খুব কার্যকর একটি পন্থা। আপনি যদি কাগজের বই পড়েন, তাহলেও আপনার উচিৎ হবে খাটে বসে বই না পড়া। এই একবিংশ শতাব্দীতে প্রযুক্তিগত বিপ্লবের ফলে বই পড়ার অভ্যাস অনেকের মাঝে প্রায় উঠেই গিয়েছে বলা চলে। তবে, বই পড়ার চেয়ে সুখকর ও নির্মল আনন্দ যে হয় না, সেটা যারা বই পড়ে তারা অবশ্যই মানতে বাধ্য।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।