জুমবাংলা ডেস্ক: আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে কীটনাশক ছাড়াই বিষমুক্তভাবে ‘পলিনেট হাউসে’ সবজি চাষ করছেন জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবির প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকরা। এ পদ্ধতিতে চাষাবাদ কৃষি উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখছে বলে জানিয়েছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা।
জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কৃষি বিজ্ঞানের নতুন উদ্ভাবন এই ‘পলিনেট হাউস’। পাঁচবিবি উপজেলার কুসুম্বা ইউনিয়নের পশ্চিম ধুরইল গ্রামের কৃষক রবিউল আলম ও আব্দুর রহমান পলিনেট হাউস পদ্ধতিতে সবজি চাষ করে সফলতার স্বপ্ন বুনছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, পলিনেট হাউসে শীতকালের সবজি যেমন গ্রীষ্মকালেও উৎপাদন করা যাবে, তেমনি গ্রীষ্মকালীন সবজিও শীতকালে উৎপাদন করা যাবে। যে কোনো আবহাওয়া এতে প্রভাব ফেলতে পারবে না। আধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি করা পলিনেট হাউসে ভারি বৃষ্টিপাত, তাপদাহ, পোকামাকড়, ভাইরাসজনিত রোগের মতো প্রতিকূল পরিবেশেও নিরাপদ থাকবে সবজি। কোনো কীটনাশক দিতে হবে না।
পশ্চিম ধুরইল গ্রামের কৃষক রবিউল আলম জানান, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ থেকে পলিনেট হাউস নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, পলিনেট হাউসে চাষ হচ্ছে মিন্টো সুপার ও বাহুবলী জাতের টমেটো, সানড্রপ জাতের কাঁচা মরিচ, বিটি জাতের বেগুন, কুইন অ্যানি জাতের আলু, ব্রকলি, ফুলকপি, হার্টবিট, গাজর, লেটুসসহ অন্যান্য সবজি। কৃষক আব্দুর রহমানের জমির পরিমাণ ১৫ শতক। লোহার এ্যাঙ্গেল ব্যবহার করে পলিনেট হাউস নেট দিয়ে ঘেরার জন্য পোকামাকড় ঢুকতে পারে না। সেখানে রয়েছে সেচ দেওয়ার আধুনিক প্রযুক্তি। পলিনেট তৈরি করতে পুরো খরচ দিয়েছে কৃষি বিভাগ। এই টাকা পরিশোধ করতে হবে না। আব্দুর রহমান ও রবিউল আলমের পলিনেট হাউসে তিনজন শ্রমিক কাজ করে তাদের জিবিকা নির্বাহ করছেন।
আব্দুর রহমান জানান, কৃষি বিভাগ থেকে গত অক্টোবর মাসে পলিনেট হাউস নির্মাণ করে দেওয়া হয়। বাজারে তুলনামূলকভাবে পলিনেট হাউসে উৎপাদিত সবজির চাহিদা অনেক বেশি। সে কারনে উন্নতমানের সবজি চাষ করে লাভবান হচ্ছেন।
রবিউল জানান, পলিনেট হাউসে সবজি চাষ ছাড়াও বাইরে ৮ শতাংশ জমিতে লেটুস ও ব্রকলি চাষ করেছেন। বাইরের জমিতে থাকা সবজিতে পোকামাকড় দেখা গেলেও পলিনেট হাউসে বিষমুক্তভাবে চাষ করা সবজি বেশ সতেজও রয়েছে।
পাঁচবিবি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ লুৎফর রহমান জানান, পলিনেট হাউসে সবজি চাষ ওই এলাকার কৃষকদের মাঝে বেশ সাড়া ফেলেছে। এই পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে প্রতিদিনই আশপাশের কৃষকরা আসছেন এবং উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। উচ্চমূল্যের সবজি চাষে ’পলিনেট হাউস’ কৃষি ক্ষেত্রে একটা রোল মডেল উল্লেখ করে পলিনেট হাউস থেকে সারা বছর নিরাপদ ও বিষমুক্ত সবজি পাওয়া সম্ভব বলে জানান জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ রাহেলা পারভীন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।