আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পাকিস্তানের এক সুন্দরী গুপ্তচরের খপ্পরে পড়ে তথ্য পাচারের অভিযোগে ৭ নাবিককে গ্রেপ্তারের পরই ভারতীয় নৌবাহিনীতে বাহিনীতে ফেসবুক নিষিদ্ধ করতে চলেছে কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া নৌবাহিনীর ঘাঁটি, ডক এবং যুদ্ধজাহাজে স্মার্টফোন ব্যবহারেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ভারতীয় নৌবাহিনী।
ভারতীয় সংবাদসংস্থা এএনআই জানিয়েছে, ‘সাতজন নৌকর্মী সোশাল মিডিয়া ব্যবহারের মাধ্যমে শত্রুপক্ষের গোয়েন্দা সংস্থাকে সংবেদনশীল কিছু তথ্য ফাঁস করে। সেই ঘটনা ধরা পড়ার পরই নৌবাহিনী কর্তৃক এই কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’
১৯ ডিসেম্বর অন্ধ্রপ্রদেশ গোয়েন্দা বিভাগ এই গুপ্তচর র্যাকেটটিকে হাতে নাতে ধরে। সেখানে তাঁরা দাবি করেছিল যে ২০১৭ সালে নিয়োগ করা নাবিকরা সুন্দরী নারীর মধুচক্রে জড়িয়ে নৌবাহিনীর জাহাজ ও সাবমেরিনের লোকেশনের তথ্য ফাঁস করছিল শত্রুপক্ষের হাতে।
নৌবাহিনীর কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রথমে এই নাবিকদের সঙ্গে সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ফেসবুকের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হয়। তিন থেকে চারজন নারী তাঁদের অনলাইনে সম্পর্কের জালে ফাঁসায়। পরবর্তীতে ওই নারীরা অনলাইনে এমন এক ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয় যিনি ব্যবসায়ী হিসাবে নিজেকে পরিচয় দিয়েছিল। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তিনি ছিলেন একজন পাকিস্তানী গুপ্তচর। যিনি নাবিকদের কাছ থেকে তথ্য বের করা শুরু করেছিলেন। নাবিকদের সঙ্গে কথাবার্তার মাধ্যমে নারীরা আমাদের যুদ্ধজাহাজ এবং সাবমেরিনগুলির অবস্থান এবং গতিবিধি খবর জানতে ব্ল্যাক মেল করতে শুরু করে। প্রতিমাসে হাওয়ালার মাধ্যমে ওই নাবিকদের টাকাও দেওয়া হত।’
সূত্রের খবর, এই সাতজন নাবিক জাহাজ এবং সাবমেরিন থেকে ফিরে এসে গত বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে তাঁদের অবস্থান এবং কাজ প্রকাশ করেছিলেন শত্রুপক্ষের হাতে। বিজয়ওয়ারাতে এই সাত নাবিকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়।
এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই সাত জনই ২০১৭ সালে নাবিক হিসাবে বাহিনীতে যোগ দেন। এখনও পর্যন্ত জানা গিয়েছে, এরা বাহিনীর নিয়ম ভেঙে ফেসবুকে অন্য নামে অ্যাকাউন্ট খোলেন। ২০১৮ সালে ফেসবুকের সূত্রেই ওই ৭ জনের সঙ্গেই আলাপ হয় এক নারীর। ফেসবুকের মাধ্যমে বাড়তে থাকে ঘনিষ্ঠতা। এর পরেই উল্টো দিকের নারী ভিডিও, অডিও এবং মেসেঞ্জারের সমস্ত চ্যাট প্রকাশ্যে আনার হুমকি দিয়ে ব্ল্যাকমেল করা শুরু করে ৭ জনকে। ৭ জনের ৩ জন ভাইজাগে কর্মরত, দু’জন মুম্বাই এবং বাকি দু’জন কারওয়ারে। পরবর্তী সময়ে জানা যায়, নারী এক জন নন; চারজন।
সূত্রের খবর, ওই সাত জনকেই ব্ল্যাকমেল করে ওই তিন নারী মূলত নৌবাহিনীর বিভিন্ন জাহাজের অবস্থান, সাবমেরিনের অবস্থান সংক্রান্ত খুঁটিনাটি তথ্য জেনে নিত। এর পর ওই নারীদের নির্দেশেই ওই ৭ জন যোগাযোগ করে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে। তদন্তকারীদের ধারণা ব্যবসায়ী পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তি আসলে আইএসআই-এর কোনও এজেন্ট। পরবর্তী সময়ে ওই এজেন্টকে যুদ্ধজাহাজের অবস্থান, গতিবিধি এবং সাবমেরিন সংক্রান্ত তথ্য দিত ওই ৭ জন।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।