পেটের মেদ কারই–বা পছন্দ! তবু হয়। সেটা হয়ে থাকে নানা কারণে। তবে সহজ সমাধান আছে। রান্নাঘরের সামান্য কয়েকটি উপকরণেই সম্ভব এই মেদ হ্রাস। সঙ্গে উপরি হিসেবে পাওয়া যাবে আরও কিছু সুফল। নানা উপায়ে ওজন কমানোর অনেক কিছুই করে ওজন হয়তো কমেছে, কিন্তু সেই অনুপাতে পেটের সাইজটা ঠিক কমেনি।
এমন মানুষের সংখ্যা নিতান্তই কম না। অথচ আমরা একগুঁয়ে হয়ে উঠলেও লাভ হয় না। কারণ, কিছুতেই কমে না পেটের মেদ। শরীরে মেদ কমানো আর পেটের মেদ কমানোর এক বিষয় নয়। পেটের মেদ কমাতে হলে আগে ঠিক করতে হবে হজমপ্রক্রিয়া।
সেটা কীভাবে করা যাবে, তা সেটা ভাবনার বিষয় বৈকি। আসলে হজমশক্তি বাড়াতে চাইলে আদা চা হতে পারে সবচেয়ে কার্যকর প্রাকৃতিক সমাধানগুলোর একটি। এতে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি যৌগ ও হজমশক্তি বৃদ্ধির বৈশিষ্ট্যে ভরপুর। আদা চা এ জন্য মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে পেটের চর্বি ঝরাতে সাহায্য করতে পারে। এটি সহজে তৈরি করা যায়। আদা চা কেবল ওজন কমাতেই সাহায্য করে না, বরং হজমের উন্নতি করে, ফোলাভাব কমায় এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যকে উন্নত করে।
এখানে আপনি কীভাবে আদা ব্যবহার করে এই শক্তিশালী ওজন কমানোর চা তৈরি করতে পারেন এবং কেন এটা পেটের মেদ কমাতে ভালো কাজ করে, সেটা জেনে নেওয়া যেতে পারে।
পেটের মেদ ঝরাতে যেভাবে কার্যকর আদা চা
হজমশক্তি বাড়ায়: আদা শরীরের থার্মোজেনেসিস বাড়াতে সাহায্য করে, অর্থাৎ এটি আপনার শরীরে তাপ তৈরি করে, যা ক্যালরি পোড়াতে সাহায্য করে।
প্রদাহ কমায়: দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ ওজন বাড়াতে পারে। এ জন্য মেদ কমানো কঠিন করে তোলে। আদার অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য প্রদাহ ও চর্বি কমাতে সাহায্য করে।
ক্ষুধা দমন করে: আদা দীর্ঘ সময়ের জন্য ক্ষুধা কমাতে সাহায্য করে, খাওয়ার তাগিদ কমায় এবং ক্যালরি গ্রহণ নিয়ন্ত্রণ করে।
হজমের উন্নতি করে: একটি স্বাস্থ্যকর পরিপাকতন্ত্র ওজন কমানোর চাবিকাঠি। আদা হজমের উন্নতি করে, ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে এবং সঠিকভাবে মলত্যাগকে সাহায্য করে।
ডিটক্সিফাই করে: আদা একটি প্রাকৃতিক ডিটক্সিফায়ার হিসেবে কাজ করে, যা শরীরকে বর্জ্য ও টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে।
আদা চা তৈরির উপকরণ
২ ইঞ্চি সমান তাজা আদার টুকরা কাটা বা গ্রেট করা
২ কাপ পানি
১ টেবিল চামচ লেবুর রস
আধা চা-চামচ দারুচিনি গুঁড়া
১ চা-চামচ মধু (ঐচ্ছিক, স্বাদের জন্য)
প্রণালি
ধাপ ১: একটি ছোট পাত্রে ২ কাপ পানি গরম করতে হবে। ফুটে উঠলে তাতে কাটা বা গ্রেট করা আদা দিয়ে তাপ কমিয়ে ১০-১৫ মিনিট সেদ্ধ করতে হবে, যাতে এর উপকারী যৌগগুলো পানিতে সম্পূর্ণভাবে মিশে যায়।
ধাপ ২: চায়ের মতো আদাপানি ছেঁকে নিয়ে এতে এক টেবিল চামচ লেবুর রস ও এক চা-চামচ মধু মিশিয়ে এতে দারুচিনিগুঁড়া ছড়িয়ে দিলেই তৈরি হয়ে যাবে এই আদা চা।
পানের নিয়ম
এবার এই আদা চা দিনে ২-৩ বার খেতে হবে। বিশেষ করে সকালে খালি পেটে এবং যেকোনো বেলায় খাওয়ার আগে। খাওয়ার আগে এই চা পান করলে ক্ষুধা কমায় এবং হজমশক্তি বাড়ায়।
প্রত্যাশিত ফল
৩ দিনে: ফোলাভাব কমে যাবে এবং হজমের উন্নতি লক্ষ করা যাবে। কারণ, আদা চা শরীরকে ডিটক্সিফাই করার কাজ করতে আরম্ভ করেছে।
৫ দিনে: হজমশক্তির মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে। পাশাপাশি কম ক্ষুধার্ত বোধ হতে পারে, যা ক্যালরি নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
৭ থেকে ১০ দিনে: সপ্তাহের শেষের দিকে, পেটের মেদ হ্রাসের বিষয়টা দৃশ্যমান হতে থাকবে।
আদা চা হলো একটি প্রাকৃতিক, নিরাপদ ও কার্যকর উপায়, যা পেটের মেদ ও ওজন কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত এই চা পান করা ও স্বাস্থ্যকর ডায়েট অনুসরণের পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়ামে মাত্র এক মাসের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ফল পাওয়া যাবে। পেটের মেদ কমানোর এই সুস্বাদু ও শক্তিশালী পানীয় দিয়ে আজই শুরু হোক আপনার সকাল।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।