জুমবাংলা ডেস্ক : সুযোগ সুবিধা পেলে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা সামর্থ্য ও সক্ষমতা অনুযায়ী কর্মক্ষেত্রে সম্পৃক্ত হতে পারেন। কারিগরী প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করে একজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি তার জীবনে পরিবর্তন আনতে সক্ষম। শ্রমবাজারে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সক্ষমতাকে কাজে লাগাতে হবে।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে ঢাকার মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টারের কনফারেন্স রুমে ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জীবনমান উন্নয়নে দক্ষতা বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি” শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ সব কথা বলেন। ডিজএ্যাবল্ড রিহ্যাবিলিটেশন অ্যান্ড রিসার্চ এসোসিয়েশন (ডিআরআরএ) এ সভার আয়োজন করে।
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিআরআরএর চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) রাবেয়া সুলতানা৷ তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সামাজিক অবস্থান যাচাই করতে গেলে এখনও দেখা যায় যে, মানব মর্যাদা ও অধিকার ভোগের ক্ষেত্রে তারা আজও বৈষম্যের শিকার। বিশেষত স্বাস্থ্য, শিক্ষা, জীবিকায়ন ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের ক্ষেত্রে তাদের যে ধরনের গমনযোগ্যতা প্রয়োজন, তা আশানুরূপভাবে দৃশ্যমান হয়ে ওঠেনি। অথচ সুযোগ ও সুবিধা পেলে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা সামর্থ ও সক্ষমতা অনুযায়ী জীবিকায়নে সম্পৃক্ত হতে পারেন। কর্মসংস্থানে নিজেকে নিয়োজিত করতে পারেন।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উন্নয়নে যত কাজ করেছে, অতীতে কেউ এত কাজ করে নাই। তারপরও আমি বলবো তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। যাদের সমাজে বোঝা মনে করা হচ্ছে, তাদের যদি সম্পদে পরিণত করতে পারি, তাহলেই সাফল্য আসবে।
প্রতিমন্ত্রী জানান, কর্মসংস্থান বিষয়ক নতুন দপ্তর গঠনের বিষয়ে ভাবা হচ্ছে। কর্মসংস্থান দপ্তর হয়ে গেলে তার মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কর্মসংস্থান বিষয়ে কাজ করা যাবে।
তিনি বলেন, ‘শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পর আমি দেখলাম, এর নাম শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কিন্তু এখানে কর্মসংস্থান নিয়ে কাজের কোনো সুযোগ নেই। কর্মসংস্থানের আলাদা একটি ডিপার্টমেন্ট অতিসত্ত্বর হয়ে যাবে।’
সভায় সভাপতিত্ব করেন ডিআরআরএর প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক ফরিদা ইয়াসমিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য মেহের আফরোজ চুমকি, সংসদ সদস্য শবনম জাহান শীলা, জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুহুল আমিন খান, এনডিডিপি ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ্ আলম এবং পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন এর সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার ও সীপ এর মূখ্য সমন্বয়কারী জিয়াউদ্দিন ইকবাল। মতবিনিময় সভায় অংশ নেওয়া প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা তাদের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন।
বক্তারা বলেন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা আসলে অক্ষম না, বিশেষভাবে সক্ষম। প্রতিবন্ধী ব্যক্তি সম্পর্কে নিয়োগদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তন দরকার ৷
সভায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কর্মসংস্থানে সম্পৃক্ত করতে কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে- শ্রম বাজারে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সক্ষমতা উপস্থাপনে সরকারিভাবে জোড়ালো প্রচেষ্টা চালানো, কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির দক্ষতাকে সবার আগে বিবেচনা করা, জাতীয়ভাবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা ভিত্তিক পরিসংখ্যান করা, সক্ষমতা, মেধা, ন্যূনতম শিক্ষা ভিত্তিক ট্রেড নির্ধারণ করা ও তাদেরকে প্রশিক্ষণে অন্তর্ভুক্ত করা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।