কাঁচা অবস্থায় সালাদে বা রান্না করে বিটের নানা সুস্বাদু পদ দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারলে, তা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য হতে পারে দারুণ উপকারী। আমাদের দেশে সব জায়গায়ই বিট পাওয়া যাচ্ছে এখন। বিটের গুণাগুণ বলে শেষ করা কঠিন। মূলত এতে উপস্থিত ফাইটোনিউট্রিয়েন্টগুলোই একে অনন্য করে তুলেছে। স্বাস্থ্যকর উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে পাওয়া এই ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস আমাদের দেহ-মনের বিকাশ, বৃদ্ধি আর সুস্থতায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
কাঁচা বিটের ৮৭ শতাংই জলীয় অংশ। সঙ্গে আছে ৮ শতাংশ শর্করা আর ২-৩ শতাংশ খাদ্য আঁশ। আবার এক কাপ বিটে আছে মাত্র ৬০ ক্যালোরি। এ থেকে প্রোটিন মিলবে ১.৬ গ্রাম, চিনি ৬.৮ গ্রাম আর ০.২ গ্রাম ফ্যাট। এ ছাড়া বিটে পর্যাপ্ত পরিমাণে আছে আমাদের দেহমনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফোলেট বা ভিটামিন বি-নাইন, ম্যাঙ্গানিজ, পটাশিয়াম, আয়রন আর ভিটামিন সি। ফোলেট ও আয়রনের প্রাচুর্যের কারণে এই শীতের সবজি রক্তের হিমোগ্লোবিন বাড়াতে অত্যন্ত কার্যকর।
বিট থেকে পাওয়া ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট বিটালাইন আমাদের জন্য অতি উপকারী। এর আছে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি–ইনফ্ল্যামেটরি বা প্রদাহরোধী এবং আমাদের শরীরকে ডিটক্স করা বা বিশুদ্ধীকরণের পরীক্ষিত ক্ষমতা। তবে এই বিটালাইন পর্যাপ্ত পরিমাণে পেতে আমাদের বিট যতটা সম্ভব কম সময় ধরে রান্না করতে হবে। কাঁচা খেলে এর গুণাগুণ পাওয়া যায় সবচেয়ে বেশি। আর বিট রান্না করতে মোটেই এর পানি ফেলা যাবে না।
বিটের আরেকটি খুব ভালো গুণ হলো, এতে ক্যালরি কম থাকে। অথচ এতে মানবদেহে প্রয়োজনীয় সব ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে। বিটে আছে প্রচুর ভিটামিন সি, ফোলেট, পটাশিয়াম, আয়রন ইত্যাদি। পানি ও আঁশের পরিমাণ যথেষ্ট হওয়ায় হজম ভালো রাখা এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে বিট কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও বিট খাওয়া অত্যন্ত ফলপ্রসূ হতে পারে।
তবে এ ক্ষেত্রে কাঁচা বিটের কার্যকারিতা বেশি পাওয়া গেছে। এতে থাকা নাইট্রেট লবণ রক্তনালিকে প্রসারিত করতে পারে বলেই এমন প্রভাব দেখা যায়। এ উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে হৃদ্রোগের আশঙ্কা অনেকটাই কমে আসে। তবে সে ক্ষেত্রে নিয়মিত কাঁচা বিটের রস পান করে ভালো ফল পাওয়া যায়।
বিট আমাদের প্রাণশক্তি ও কাজের উদ্যমকে বাড়িয়ে তোলে। দেহে অক্সিজেনের কার্যকর ব্যবহারে বিটের ভূমিকা আছে বলে দৌড়বিদ ও অন্য খেলোয়াড়েরা নিয়মিত বিট খেয়ে থাকেন। আবার এর বিটালাইন নামক ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট কিডনিসহ আরও অঙ্গ–প্রত্যঙ্গের প্রদাহকে কমাতে পারে বলে অনেক চিকিৎসাবিজ্ঞানী মনে করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।