বাইপোলার ডিসঅর্ডার এমন এক ধরণের তীব্র মানসিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতি যা আপনার মুড বা মেজাজকে প্রভাবিত করে।বাইপোলার ডিসঅর্ডার হওয়ার সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনেক শারীরিক ও মানসিক চাপের মধ্যে থাকলে যেমন: কর্মক্ষেত্রে নানা চাপ, সম্পর্কে টানাপোড়েন বা ভাঙ্গন, সেইসাথে ব্যক্তি বা সামাজিক জীবনে অনেক সমস্যা যেমন: অভাব, শারীরিক, যৌন বা মানসিক নির্যাতন এসব কারণে বাইপোলারে ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
এছাড়া জেনেটিক্সে অর্থাৎ পরিবারে কারও বাইপোলার ডিসঅর্ডার থাকলে সেটা পরবর্তী প্রজন্মে বর্তানোর আশঙ্কা বাড়ে।অনিয়মিত জীবনযাপন যেমন: খাওয়া দাওয়ায় নিয়ন্ত্রণ না থাকা, অপর্যাপ্ত ঘুম, মদ ও ধূমপানের অভ্যাস ইত্যাদি বাইপোলার ডিসঅর্ডার হওয়ার আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয়।
মস্তিষ্কের যে কেমিকেল বা রাসায়নিক মস্তিষ্কের কাজ নিয়ন্ত্রণের করে, সেগুলো হল: নরড্রেনালিন, সেরোটোনিন ও ডোপামিন-যাদের নিউরোট্রান্সমিটারও বলা হয়। যদি এক বা একাধিক কেমিকেল বা নিউরোট্রান্সমিটারের মাত্রায় ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়, তবে একজন ব্যক্তি বাইপোলার ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত বলে ধরা যেতে পারে।
যেমন: নরড্রেনালিনের মাত্রা খুব বেশি হলে ম্যানিয়ার এপিসোড বাড়ে এবং এটির মাত্রা খুব কম হওয়ার ফলে বিষণ্ণতার এপিসোড দেখা দিতে পারে। এছাড়া অন্যান্য মানসিক রোগ থাকলে যেমন: মনোযোগে ঘাটতি, অতিরিক্ত উদ্বেগ, হাইপারঅ্যাকটিভিটি ডিসঅর্ডার বা এডিএইচডি থাকলেও তাদের বাইপোলার ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
গবেষণা অনুযায়ী, প্রতি ১০০ জনের মধ্যে একজন তাদের জীবনের কোনো না কোনো সময়ে বাইপোলার ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত হয়েছেন। বাইপোলার ডিসঅর্ডার যেকোনো বয়সে হতে পারে, এরমধ্যে ১৫ থেকে ২৫ বছর বয়সের মধ্যে দেখা দেয়ার আশঙ্কা বেশি। তবে ৪০ এর পরে এতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তুলনামূলক কম।
পুরুষ ও নারীদের বাইপোলার ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও সমান। চিকিৎসক যদি জানান আপনার বাইপোলার ডিসঅর্ডার আছে, তাহলে আপনার উচিৎ হবে তার পরামর্শ মতো নিয়মিত চিকিৎসা নেয়া।
এতে একজন ব্যক্তি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন। চিকিৎসকরা ম্যানিয়া ও ডিপ্রেশন এপিসোডগুলো প্রতিরোধ করতে মেজাজ শিথিল করা ওষুধ দিয়ে থাকেন যা দীর্ঘমেয়াদে প্রতিদিন খেতে হয়। সেইসাথে কগনিটিভ বিহেভিয়েরাল থেরাপি ও পারিবারিক সম্পর্ক ভালো করার থেরাপির মাধ্যমে বিষণ্ণতা মোকাবেলা করতে বলা হয়।
এসব থেরাপি ছয় মাস থেকে ১২ মাস ধরে নিতে হতে পারে। এছাড়া নিয়মিত ব্যায়াম করা, নিজের পছন্দের কাজ করা, সুষম খাবার খাওয়া, ওজন নিয়ন্ত্রণ ও পর্যাপ্ত ঘুম বাইপোলার ডিসঅর্ডারের লক্ষণগুলি কমাতে সাহায্য করতে পারে। এজন্য চিকিৎসকরা একটি রুটিন দিয়ে থাকেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।