স্পোর্টস ডেস্ক : ক্রিকেটটা হয়ে গেছে যেন আলাদিনের আশ্চর্য চেরাগ। যদিও মানুষের জীবনের স্বাভাবিক গতি-প্রকৃতিতে হাসি-কান্না বিরাজমান। ভারতের উদীয়মান পেসার মোহাম্মদ সিরাজ অস্ট্রেলিয়া সফরের শুরুতেই সংবাদ শুনলেন, তার বাবা মৃত্যুবরণ করেছেন। কিন্তু সিরিজ ফেলে রেখে তিনি দেশে ফিরে আসেননি। সিরিজ বিজয়ী হয়েই দেশে ফিরেছেন এবং বাবার কবর জিয়ারত করেছেন।
মোহাম্মদ সিরাজের বাবা ছিলেন একজন অটোচালক। তাকে বলা হতো ‘অটো চালকের ছেলে’। হায়দরাবাদের উপকণ্ঠে মোহাম্মদ সিরাজের বসবাস পরিবার নিয়ে। খুব অভাবের সংসার। ছোট বেলা থেকেই অভাব ছিল যার নিত্যসঙ্গী। এরই মাঝে ক্রিকেটের প্রতি ছিল প্রচণ্ড ভালোবাসা। সেই ভালোবাসা থেকেই সব প্রতিবন্ধকতা পেছনে ফেলে দুর্বার গতিতে এগিয়ে গেছেন সামনে।
আইপিএলে দুর্দান্ত বোলিং করার কারণে মোহাম্মদ সিরাজ সুযোগ পেয়ে গেলেন অস্ট্রেলিয়া সিরিজে এবং সেখানেই অভিষেক ঘটলো টেস্ট ক্রিকেটে। তার আগেই বাবা মোহাম্মদ গাউসের মৃত্যু সংবাদ পেয়েছিলেন। কিন্তু সেই মৃত্যুশোকে কাতর না হয়ে, শোককে পরিণত করলেন শক্তিতে।
যার ফলে অভিষেকেই বাজিমাত করলেন। অস্ট্রেলিয়ার দুর্গে হামলে পড়েছিলেন তিনি। ঘরের মাঠে অসি বধ করেই দেশে ফিরেছেন। খেলেছেন ৩ টেস্ট। এই তিন টেস্টে নিয়েছেন ১৩ উইকেট। ভারতকে এনে দিয়েছেন গৌরবময় ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয়।
ক্রিকেটে নিজের উদয়ের লগ্নে যে আলোকচ্ছটা মেলবোর্ন-সিডনি আর গ্যাবা থেকে ছড়িয়েছেন, সেই আলোকচ্ছটার বদৌলতেই এখন বিএমডব্লিউর মালিক মোহাম্মদ সিরাজ। এবার মাহিন্দ্রা কাছ থেকেও গাড়ী উপহার পাচ্ছেন তিনি।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঐতিহাসিক সিরিজ শেষে নিজের দেশে ফিরেছেন দিন দুয়েক হল। এর মধ্যেই নিজেকে দামি গাড়ি উপহার দিলেন সিরাজ।
ভারতীয় অটোমোবাইল কোম্পানি মাহিন্দ্রা জানিয়েছে, অস্ট্রেলিয়ায় সিরিজ জয় করে আসা ৬ তরুণকে তারা গাড়ী উপহার দেবে। সেই ৬জন হলেন শুভমান গিল, টি নটরাজন, শার্দুল ঠাকুর, নভদিপ সাইনি, মোহাম্মদ সিরাজ এবং ওয়াশিংটন সুন্দর। এই ছয় জনকে মহিন্দ্রা থর এসইউভি উপহার দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন আনন্দ মহিন্দ্রা।
শুক্রবার তিনি ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে দুটি ভিডিও পোস্ট করেন। সেখানেই নতুন গাড়ি চড়তে দেখা গেছে এই পেসারকে। হায়দরাবাদের রাস্তায় সেই গাড়ি নিয়ে এরইমধ্যে ঘুরেও এসেছেন সিরাজ।
সিরাজ এখন একজন সফল ক্রিকেটার। বাবার স্বপ্ন পূরণ করেছেন। কিন্তু সেই বাবাই ছেলের সাফল্য দেখতে পেলেন না। যদিও অস্ট্রেলিয়া থেকে ফিরেই বাবার কবর জিয়ারত করেন তিনি। বৃহস্পতিবারই সিরাজ বলেছিলেন, ‘হায়দরাবাদ এসেই বিমানবন্দর থেকে সোজা কবরস্থানে চলে গিয়েছিলাম। বাবার কবর জিয়ারত করে বাড়ি আসি। মা আমাকে দেখেই কাঁদতে শুরু করে। আমি সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করি।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।