জুমবাংলা ডেস্ক : ফরিদপুর সদর উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নে বিয়ে উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শতাধিক মাদরাসাছাত্রের কোরআন খতম চলে। রাতে অনুষ্ঠিত হয় ওয়াজ মাহফিল ও দোয়া। এরপর শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে মসজিদে পড়ানো হয় বিয়ে।
উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের বাঘারকান্দী গ্রামের ওবায়দুর রহমানের বড় ছেলে মো. ইয়াছিন আল আরাফাত জিহাদের (২২) সঙ্গে মধুখালী উপজেলার রায়পুর ইউনিয়ন ব্রাহ্মণকান্দা গ্রামের শহিদুল ইসলামের মেয়ে জাকিয়া সুলতানার ইসলামের বিধান মেনে বিয়ে হয়।
সূত্র জানায়, বর ইয়াছিন আল আরাফাত চট্টগ্রাম বিএফ শাহীন কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। কনে জাকিয়া সুলতানা মধুখালী মহিলা মাদরাসার ছাত্রী।
বরের বাবা ওবায়দুর রহমান জানান, আমার বড় ছেলে ইয়াছিন চট্টগ্রাম বিএফ শাহীন কলেজে, ছোট ছেলে আশিকুর রহমান চট্টগ্রামের একটি মাদরাসায় এবং ছোট মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস ফরিদপুর শহরের ফাতেমাতুজ্জজোহরা মাদরাসায় পড়ে। আমার চাওয়া আমি নিজে এবং পরিবারের সদস্যরা কোরআন-সুন্নাহ মেনে চলবো। সে অনুযায়ী বড় ছেলের বিয়েতে পবিত্র কোরআন খতমের আয়োজন করা হয়। আমার অন্য ছেলে-মেয়েকেও একই পদ্ধতিতে বিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা আছে।
কনের বাবা শহিদুল ইসলাম বলেন, আমার বেয়াই ওবায়দুর রহমান একজন প্রকৃত ইসলামের আদর্শের মানুষ। তিনি বিয়ের অনুষ্ঠানটি কেমন হবে আগেই দিকনির্দেশনা দেন। সে অনুযায়ী শুক্রবার পাঁচটি মাইক্রোবাসে ৬০ জন বরযাত্রীসহ বর আসেন। পরে বাড়ির পাশে ব্রাহ্মণকান্দা জামে মসজিদে জুমার নামাজ আদায়ের পর বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়। বিয়ে পড়ানো শেষে দুপুরে ভোজের আগে সবাইকে দুধ ও খেজুর খেতে দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে বর ইয়াছিন আল আরাফাত জিহাদ জানান, বাবার অনুপ্রেরণায় বিয়েতে এমন আয়োজন। আমাদের পরিবারের সবাই চেষ্টা করি ইসলামের আদর্শ মেনে চলতে। তাই আমার বাবার এমন একটি মহতি উদ্যোগ সফল হয়েছে। আমার বাবার এমন উদ্যোগ দেখে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ইসলামি ঘরনায় ফিরে আসুক এটাই আমাদের চাওয়া।
মধুখালী মহিলা মাদরাসার সুপার মো. আলম মোল্লা বলেন, এমন বিয়ে আগে চোখে পড়েনি। বিয়েতে কোরআন তেলাওয়াত ও ওয়াজ মাহফিলসহ প্রতিটি আয়োজন ছিল ইসলামি চিন্তা-চেতনার, যা সত্যি প্রশংসার দাবি রাখে। এ বিয়ের উদ্যোগ এলাকায় এরই মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে। এই চর্চা মুসলমানদের ভেতরে এভাবেই ছড়িয়ে পড়ুক এটাই কামনা করি।
এ বিষয়ে চাঁদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুন্নাহার মুহিদ বলেন, বর্তমান সমাজে এমন বিয়ে দেখা যায় না। ওয়াজ মাহফিল ও কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে বিয়ের অনুষ্ঠান সত্যিই প্রশংসনীয়। ইসলাম ধর্মের মানুষ এমন বিয়ের আয়োজন দেখে শিক্ষা নেওয়ার পাশাপাশি সবার চর্চা করা উচিত।
এ প্রসঙ্গে মধুখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শহিদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, এমন ব্যতিক্রমধর্মী একটি বিয়ের আয়োজনের ঘটনা শুনেছি। আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাই। এ থেকে আমাদের ইসলাম ধর্মের মানুষদের শিক্ষা নেওয়ার পাশাপাশি ইসলামি শরিয়ত মোতাবেক বিয়ের আয়োজনের চর্চা করা উচিত।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।