নিজস্ব প্রতিবেদক: অতিরিক্ত দামে ডলার বিক্রি বন্ধে ব্যাংক চেয়ারম্যানদের কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।
বেসরকারি ব্যাংক উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের নেতৃত্বে ৮ সদস্যদের একটি প্রতিনিধি দল বুধবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে দেখা করতে গেলে ডলার কারসাজি রোধে সতর্কবার্তা দেন তিনি।
এর একদিন আগে ডলার কারসাজির দায়ে ১০ ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।
সাক্ষাতের সময় এমডিদের সঙ্গে চেয়ারম্যানদের দ্বন্দ্ব নিরসন, বাফেদারর নির্ধারিত দরেরে চেয়ে অতিরিক্ত দামে ডলার লেনদেন বন্ধ করা, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি রোধে মুদ্রানীতি অনুসরণ, ঋণপত্রের (এলসি) মাধ্যমে ডলার পাচার রোধ, ব্যাংকগুলোর কর্পোরেট কালচারে উন্নতিসহ যাবতীয় নীতিমালা মানার নির্দেশ দেন রউফ তালুকদার।
এসবের সত্যতা নিশ্চিত করে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক্ বলেছেন, ‘পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকে আসেন বিএবি নেতারা। এসময় নজরুল ইসলাম মজুমদারে সঙ্গে পদ্মা ব্যাংকের চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফত ও পূবালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মনজুরুর রহমানসহ ৮ জন চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন। তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতি বাস্তবায়নে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। কেউ নিয়ম ভঙ্গ করলে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংক কোম্পানী আইনের ১০৯ নং ধারা অনুযায়ী শাস্তি হবে।’
এমডি ছাড়া কেন ট্রজারি বিভাগের প্রধানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যিনি সরাসরি অপরাধ করেন নিয়ম অনুযায়ী তাকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। পেছনে কে কাজ করছে সে বিষয়ে পরে দেখা যাবে। এর আগেও কয়েকটি ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধান ও এমডিকে কারণ দর্শানোর নোটি দেওয়া হয়েছিল।’
জানা গেছে, ঘোষণার চেয়ে বেশি দামে আমদানিকারকের কাছে ডলার বিক্রি করায় বেসরকারি খাতের ১০ ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর অংশ হিসেবে এসব ব্যাংকের ট্রেজারি-প্রধানকে জরিমানা করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। বেশি দামে ডলার বিক্রির জন্য এসব ব্যাংকের ট্রেজারি-প্রধান দায় এড়াতে পারেন না বলে ব্যাংকগুলোর কাছে পাঠানো চিঠিতে জানায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ট্রেজারি বিভাগ ব্যাংকের টাকা ও ডলারের চাহিদা-জোগানের বিষয়টি নিশ্চিত করে থাকে। কোনো কোনো ব্যাংকে ট্রেজারি বিভাগের প্রধান পদে উপব্যবস্থাপনা পরিচালক পদমর্যাদার কর্মকর্তাও রয়েছেন।
সূত্র জানায়, নোটিশ প্রাপ্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রিমিয়ার ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, মধুমতি ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক। শাস্তির আওতায় আসা ব্যাংকের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানা গেছে ।
একই অভিযোগে গত বছরের আগস্টে একসঙ্গে দেশি-বিদেশি ছয়টি ব্যাংকের ট্রেজারি-প্রধানকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে শেষ পর্যন্ত সেই সিদ্ধান্ত বহাল রাখতে পারেনি নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, ‘এটা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে নিজ নিজ ব্যাংকের দ্বিপক্ষীয় বিষয়। এমন চিঠি নিয়মিত আসে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।