জুমবাংলা ডেস্ক : নানা জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে পদত্যাগ করলেন গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক খোন্দকার নাসির উদ্দিন।
সোমবার শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ১২তম দিনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন ভিসি নাসির। দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবদুল্লাহ আল হাসান চৌধুরীর কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন ভিসি নাসির। পরে তার পদত্যাগপত্র শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির কাছে হস্তান্তর করেন অতিরিক্ত সচিব আবদুল্লাহ আল হাসান।
ভিসির পদত্যাগের খবর বিকেলে ক্যাম্পাসে এসে পৌঁছালে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। রঙের ছড়াছড়িতে মেতে উঠে শিক্ষার্থীরা। ভিসির পদত্যাগকে যৌক্তিক ও ন্যায়সঙ্গত দাবি আদায়ের আন্দোলনের চূড়ান্ত বিজয় বলে মনে করছেন তারা।
একই সঙ্গে ক্যাম্পাসের জয় বাংলা চত্বরে এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) ধন্যবাদ জানান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী আল গালিব।
লিখিত বক্তব্যে আল গালিব বলেন, ভিসি নাসির উদ্দিনকে বরখাস্ত করা ছাড়াও তার বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে ইউজিসির পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি। আশা করছি ভিসির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শিক্ষার্থীরা জানান, ভিসির অনিয়ম, অদক্ষতা ও অদূরদর্শিতার প্রমাণ পেয়েছে ইউজিসির পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি। এজন্য ভিসি নাসির উদ্দিনকে প্রত্যাহারের সুপারিশ করে তদন্ত কমিটি। সে আলোকে ভিসি পদত্যাগ করেছেন।
এর আগে রোববার রাত সোয়া ৯টার দিকে পুলিশি পাহারায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাসভবন ত্যাগ করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন ভিসি নাসির উদ্দিন।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ২৪ সেপ্টেম্বর পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, ভিসি নাসির উদ্দীন দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বৈরাচারী আচরণের মাধ্যমে জাতির পিতার নামে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়কে ব্যর্থ প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার যে ষড়যন্ত্র করেছেন ইউজিসির তদন্তে তা বেরিয়ে আসে। এসব কিছুর বিরুদ্ধে প্রতিবাদই ছিল শিক্ষার্থীদের ন্যায্য, যৌক্তিক ও প্রাণের দাবি। ভিসির পদত্যাগের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক বিজয় অর্জিত হয়েছে।
১৮ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি ও স্বৈরাচারী আচরণে অভিযোগে ভিসির অপসারণসহ ১৪ দফা দাবিতে মাঠে নামে শিক্ষার্থীরা। ভিসির নির্দেশে ২১ সেপ্টেম্বর তার বাহিনী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এতে অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হন।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে ইউজিসির তদন্ত দল বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে পৌঁছায়। সেই সঙ্গে তদন্তকাজ শুরু করে তারা। ২৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে তদন্ত শেষ করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয় তদন্ত দল।
২৯ সেপ্টেম্বর ভিসির প্রত্যাহারের সুপারিশসহ ইউজিসির চেয়ারম্যানের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত দল। আন্দোলনের ১২তম দিনে ভিসি নাসির উদ্দিনকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ডেকে পাঠানো হয়। সেখানে পদত্যাগপত্র জমা দেন ভিসি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।