যে ৬ কারণে হতে পারে স্ট্রোক, সতর্ক হোন
লাইফস্টাইল ডেস্ক : সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য শরীরের প্রতিটি কোষে রক্ত সঞ্চালন প্রয়োজন। কারণ এই রক্তের মাধ্যমেই শরীরের কোষে কোষে অক্সিজেন পৌঁছায়। কোনো কারণে মস্তিষ্কের কোষে রক্ত সঞ্চালন বাধাগ্রস্ত হলে, রক্তনালী বন্ধ হয়ে গেলে বা ছিঁড়ে গেলে স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকির সৃষ্টি হয়। বিশেষজ্ঞরা এই রোগ প্রতিরোধের ওপর জোর দেন। তারা বলছেন, এ রোগের পেছনে কিছু কারণ রয়েছে। সেগুলো সম্পর্কে সচেতন হওয়া জরুরি।
স্ট্রোক মানুষের মস্তিষ্কে আঘাত হানে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দ্রুত লক্ষণ শনাক্ত করে চিকিৎসা না করলে রোগীর মৃত্যুও হতে পারে। স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং গবেষণা বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অলাভজনক প্রতিষ্ঠান মেয়ো ক্লিনিক জানাচ্ছে, এই রোগের কিছু লক্ষণ রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে-কথা বলতে সমস্যা, শরীরের একদিকে অসাড়ভাব, দেখতে সমস্যা, মাথা ব্যথা, হাঁটতে ও ভারসাম্য রাখতে সমস্যা ইত্যাদি। এই লক্ষণ দেখলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
চিকিৎসকরা বলছেন, মাথায় রক্ত সরবরাহ কমে গেলে বা বাধাগ্রস্ত হলে মস্তিষ্কের কোষের মৃত্যু হয়। তখন স্ট্রোক হয়। চলুন এ অসুখের বিভিন্ন ঝুঁকি সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় জনস্বাস্থ্য সংস্থা সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) থেকে জেনে নেয়া যাক।
উচ্চ রক্তচাপ
উচ্চ রক্তচাপের কারণে অনেক জটিলতা তৈরি হয়। এই অসুখে রক্তনালীর ভেতরের দেওয়ালে রক্তের চাপ থাকে বেশি। তাই সমস্যা হয়। অনেক ক্ষেত্রেই এ অসুখের উল্লেখযোগ্য কোনো লক্ষণ থাকে না। তাই মাঝেমাঝেই প্রেশার মাপা উচিত। যতটা সম্ভব এ অসুখকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করতে হবে। চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকলে এই রোগ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই।
কোলেস্টেরল
অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা, খারাপ খাদ্যাভ্যাসের কারণে শরীরে বাসা বাঁধছে কোলেস্টেরল। আসলে কোলেস্টেরল হলো একটি মোম জাতীয় উপাদান। এই উপাদান লিভার তৈরি করে। এ ছাড়া খাবারের মাধ্যমেও কোলেস্টেরল শরীরে ঢোকে। এই উপাদান দেহের প্রয়োজন। তবে এ কোলেস্টেরল রক্তে বেশি পরিমাণে থাকলে সমস্যা তৈরি হয়। সেক্ষেত্রে মস্তিষ্কের রক্তনালীতে এই উপাদান জমতে পারে। তখন রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে স্ট্রোক হয়। তাই সচেতন হওয়া দরকার।
হৃদরোগ
হৃদযন্ত্রের সুস্থ থাকা খুবই জরুরি। কারণ শরীরে অক্সিজেনসমৃদ্ধ রক্ত পৌঁছে দেয় অঙ্গটি। কিন্তু হার্ট ঠিক মতো কাজ না করলেমস্তিষ্কে পৌঁছাতে পারে না বিশুদ্ধ রক্ত। এক্ষেত্রে হার্টের ভাল্বের অসুখ, হার্টের চেম্বার বড় হয়ে যাওয়া ইত্যাদি রোগের কথা আলাদা করে বলতেই হয়। এই সমস্যাগুলোর কারণেই মূলত তৈরি হয় জটিলতা। তাই এই ধরনের হার্টের অসুখকে অবহেলা করা মোটেও ঠিক হবে না।
ডায়াবেটিস
নানাভাবে শরীরে সমস্যা তৈরি করে এই অসুখটি। রোগীর রক্তে সুগার বেড়ে যায়। এই সুগার কিন্তু অক্সিজেনকে গোটা দেহে পৌঁছে যেতে বাধা দেয়। মনে রাখবেন ডায়াবেটিসের পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপ থাকলে স্ট্রোকের ঝুঁকি কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এই দুই অসুখের যুগলবন্দি খুবই খারাপ। তাই চেষ্টা করুন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে। উন্নত ওষুধ থাকায় এই কাজটি করা কঠিন কিছু না।
ওজন ও সিকেল সেল ডিজিজ
ওজন বেশি থাকলে রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডস ও কোলেস্টেরল বেড়ে যায়। আর এই দুই উপাদান স্ট্রোকের কারণ। তাই সচেতন হওয়ার চেষ্টা করুন। ওজন কমান নিজের। এ ছাড়া সিকেল সেল ডিজিজ থাকলেও রোগীর স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে। তাই সচেতন হওয়া ছাড়া গতি নেই।
ধূমপান ও মদ্যপান
একজন ব্যক্তি যত বেশি ধূমপান ও মদ্যপান করেন, তার স্ট্রোকের ঝুঁকি তত বাড়ে। গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত অ্যালকোহল ও ধূমপান স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ার জন্য দায়ী।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।