আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জন কিরবি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, সৌদি আরবের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের জোরালো সমর্থন বজায় থাকবে। ওয়াশিংটন-রিয়াদ সহযোগিতা অব্যাহত থাকার কথা উল্লেখ করে তিনি আরো বলেছেন, সৌদি আরবের প্রতিরক্ষা নীতির প্রতি সমর্থনের যে প্রতিশ্রুতি আমরা দিয়েছি তা বহাল থাকবে এবং তারা যদি হামলার শিকার হয় তাহলে তাদের পাশে আমরা আছি। খবর পার্সটুডে’র।
মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জন কিরবি সম্প্রতি সৌদি আরবের বিভিন্ন স্থাপনায় ইয়েমেনি যোদ্ধাদের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার কথা উল্লেখ করে এসব হামলা মোকাবেলায় রিয়াদের প্রতি ওয়াশিংটনের সমর্থনের কথা জানালেন। তার এ বক্তব্য থেকে সৌদি আরবের ব্যাপারে বাইডেন প্রশাসনের দৃষ্টিভঙ্গি ফুটে উঠেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন ক্ষমতায় আসার পর তিনি ও তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিংকেন বেশ কিছু বিষয়ে মার্কিন নীতিতে পরিবর্তন আনার কথা বলেছিলেন। বিশেষ করে ওয়াশিংটন-রিয়াদ সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়নের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তারা। কিন্তু এখন তাদের কথাবার্তায় বোঝা যায় মধ্যপ্রাচ্যে তাদের অন্যতম মিত্র সৌদি আরব ইয়েমেনে ব্যাপক আগ্রাসন চালালেও এ দেশটির ব্যাপারে তাদের নীতিতে কোনো পরিবর্তন হয়নি।
এ ছাড়া, প্রেসিডেন্ট বাইডেন প্রথম থেকেই সৌদি সরকার বিরোধী সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ঘটনার তীব্র নিন্দা করলেও এখন তিনি ভিন্ন সুরে কথা বলছেন। সৌদি আরবের সঙ্গে আর্থ-রাজনৈতিক ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ব্যাপক সহযোগিতা জোরদারের উদ্যোগ থেকে বোঝা যায় ওই হত্যাকাণ্ডের মূল নায়ক বর্তমান যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা তিনি নিতে চান না। বাইডেনের এ নীতি থেকে মানবাধিকারের ব্যাপারে তার দ্বিমুখী চরিত্রের বিষয়টি ফুটে উঠেছে। তিনি একটি সাক্ষাতকারে বলেছেন, খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তিনি সৌদি যুবরাজ সালমানকে দায়ী বলে মনে করেন না কারণ সৌদি আরব হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র। বাইডেন আরো বলেন, রিয়াদ বর্তমানে ওয়াশিংটনের পছন্দের কিছু কাজের তালিকা তৈরি করছে। মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক বিশ্লেষক পিয়ার স্প্রে বলেছেন, আমি নিশ্চিত রিয়াদের এ তালিকায় ওয়াশিংটনের কাছ থেকে অস্ত্র কেনার বিষয়টি সর্বাগ্রে স্থান পাবে।
এটা ঠিক যে ইয়েমেনে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের আগ্রাসনের কারণে বাইডেন প্রশাসন আপাতত সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র রপ্তানি বন্ধ রেখেছে কিন্তু সৌদি অব্যাহত আগ্রাসনের জবাবে ইয়েমেনিদের পাল্টা হামলার অজুহাতে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ফের সৌদি আরবে অস্ত্র পাঠানোর কথা বলছেন। ইয়েমেনিরা সৌদি আরবের তেল স্থাপনা ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগুলোতে হামলা চালানোয় রিয়াদ ওয়াশিংটনের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে। মার্কিন দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে লিখেছে, সরকার এমন একটি কমিটি গঠন করেছে যাদের কাজ হবে ইয়েমেনিদের হামলা থেকে সৌদি আরবকে রক্ষা করা। এ লক্ষ্যে আরো বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ও অন্যান্য অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে, গোয়েন্দা তথ্য দিয়ে এবং সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে সৌদি আরবকে সহায়তা করা হবে তাদের কাজ। যদিও সম্প্রতি মার্কিন সরকার সৌদি আরব থেকে তিনটি পেট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা সরিয়ে নেয়ার কথা বলছে কিন্তু এ দেশটিকে সামরিক সহায়তা দেয়া অব্যাহত থাকবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।