জুমবাংলা ডেস্ক : রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবিলায় বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কাছে বাংলাদেশ ঋণ চাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি বলছে, রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলার জন্য ঋণ নয়, সহায়তা অনুদান হিসেবে প্রদানের জন্য বিশ্বব্যাংক ও এডিবির সঙ্গে আলোচনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
সোমবার (৪ ডিসেম্বর) দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটি এই আহ্বান জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাংক ও এডিবির কাছ থেকে এক বিলিয়ন ডলার চেয়েছে বাংলাদেশ, যার ৫৩৫ মিলিয়ন ডলারই ঋণ এবং ৪৬৫ মিলিয়ন অনুদান। রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবিলায় এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাংলাদেশের বাধ্য হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে টিআইবি। রোহিঙ্গা সংকটের মতো বৈশ্বিক মানবিক সংকট মোকাবিলার জন্য ঋণ নয়, সহায়তা অনুদান হিসেবে প্রদানের জন্য বিশ্বব্যাংক ও এডিবির সঙ্গে আলোচনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে। পাশাপাশি, এই নিপীড়নমূলক মানবিক সংকট মোকাবিলায় নিজ নিজ অবস্থান থেকে ন্যায্য ও যথাযথভাবে এগিয়ে আসতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিও আহ্বান জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, টিআইবি মনে করে, রোহিঙ্গা সংকটের মতো এমন একটি মানবিক সংকট মোকাবিলার সব ভার শুধু বাংলাদেশের ওপর চাপিয়ে দেওয়া পুরোপুরি অন্যায্য এবং তা মোটেই কার্যকর ও টেকসই সমাধান নয়। এই সংকট সমাধানের জন্য প্রয়োজন সম্মিলিত পদক্ষেপ ও বৈশ্বিক সংহতি। মিয়ানমারে নিপীড়নের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়া ও বছরের পর বছর ভরণপোষণের দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে নিজেদের সামর্থ্যের সর্বোচ্চই করেছে বাংলাদেশ। এই বাড়তি অর্থনৈতিক বোঝা সম্মিলিতভাবেই বহন করার দায়িত্ব আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের। নির্যাতনে দেশ ছাড়তে বাধ্য হওয়া রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে বলে এই অর্থনৈতিক বোঝার পুরোটাই অনন্তকাল ধরে বাংলাদেশের কাঁধে চাপিয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই। বিশেষত, যখন বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে, সেই মুহূর্তে এই ঋণ চাওয়ার সিদ্ধান্ত দ্বিগুণ উদ্বেগজনক।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বিশ্বব্যাংক ও এডিবি থেকে ঋণ গ্রহণের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা এবং রোহিঙ্গা সংকটসংশ্লিষ্ট সব খরচের সুষ্ঠু ও ন্যায়সঙ্গত বণ্টন নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সংলাপের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই। ঋণ নয়, অনুদান হিসেবে সহায়তা প্রদানের জন্য বিশ্বব্যাংক ও এডিবির প্রতি আমরা আহ্বান জানাই। রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় সহায়তার হাত বাড়িয়ে বিশ্বব্যাংক ও এডিবি প্রমাণ করার একটি সুযোগও পাচ্ছে যে, তাদের লক্ষ্য শুধু নির্বিচার ঋণ ব্যবসাতে সীমাবদ্ধ নয়।’
সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গা শরণার্থীরা যাতে প্রয়োজনীয় সহায়তা পায়, তা নিশ্চিত করা জাতিসংঘের নৈতিক দায়িত্ব। মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগণের ওপর চলমান নিপীড়নসহ এই সংকটের মূল কারণগুলো মোকাবিলায় জাতিসংঘকেও কাজ করতে হবে। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী যথেষ্ট ভোগান্তির শিকার হয়েছে এবং মর্যাদাপূর্ণ ও নিরাপদ জীবনের অধিকার তাদের আছে। রোহিঙ্গা নিপীড়ন-গণহত্যা থেকে সৃষ্ট অর্থনৈতিক, সামাজিক, পরিবেশগত ও নিরাপত্তাসংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ বইতে গিয়ে বাংলাদেশ অনেক বেশি চাপে রয়েছে। এখন সেই চাপ মোকাবিলার জন্য বাংলাদেশকে ঋণ নিতে বাধ্য করার মতো নিন্দনীয় ও ঘৃণ্য কাজ আর কী হতে পারে!
ফিলিস্তিনিদের পক্ষে দাঁড়ানোয় শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করলেন রাষ্ট্রদূত
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।