জুমবাংলা ডেস্ক: বাংলাদেশের গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর বহিরাগতদের হামলার আদেশ সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছ থেকে এসেছে বলে অভিযোগ করছেন সদ্য পদত্যাগ করা সহকারী প্রোক্টর মোঃ হুমায়ুন কবির।
তিনি দাবি করছেন, যে বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে সেখানে তিনি নিজে উপস্থিত ছিলেন। খবর বিবিসি বাংলার।
অন্যদিকে এটি আন্দোলনকে উস্কে দেয়ার চেষ্টা বলে দাবি করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য খোন্দকার মোঃ নাসিরউদ্দীন।
মোঃ হুমায়ুন কবির বলছেন, “উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেয়ার পর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা যাতে ভেতরে আসতে না পারে সেজন্য প্রশাসন থেকে সিদ্ধান্ত হয় যে যারাই ভেতরে আসবে, তাদের যে কোন মূল্যে ফেরাতে হবে। সেটা করতে গিয়ে দা, লাঠি, যত ধরনের দেশি অস্ত্র আছে সেগুলো দিয়ে আমাদের স্টুডেন্টদের মেরে বিলের মধ্যে, রাস্তায় ফেলে রাখা হয়। আপনারা নিশ্চয়ই পত্রিকায় ছবি দেখেছেন।”
তিনি বলেন, “আমিতো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনেই ছিলাম। যখন বৈঠকটা হয় তখন আমি তার প্রতিবাদ করেছি যে এরকম সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে না। তারা আমার কথা মানে নাই। যে কারণে আমার পদত্যাগ।”
গোপালগঞ্জের এই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে এখন উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ চলছে।
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী এবং একই সাথে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি দৈনিকের সাংবাদিক ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে ফেসবুকে একটি পোষ্ট দেয়ার জন্য বহিষ্কারের জের ধরে শুরু হওয়া আন্দোলন গত দুদিনে আরও জোরালো হয়েছে।
এখন যুক্ত হয়েছে নানা ধরনের পুরনো ক্ষোভ নিয়ে দাবিদাওয়া ও উপাচার্যের বিরুদ্ধে আড়াই কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ।
শনিবারই আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর বহিরাগতদের হামলার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রোক্টর তার প্রতিবাদে পদত্যাগ করলে বিষয়টি নতুন মোড় নেয়।
মোঃ হুমায়ুন কবির বলছেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোক্টরের কাজ হল শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেয়া। সেই নিরাপত্তা দিতে আমি ব্যর্থ হয়েছি। আমার শিক্ষার্থীরা আমার সন্তান সমতুল্য। এই অবস্থায় আমি নৈতিকভাবে এই পদে থাকতে পারি না।”
সহকারী প্রোক্টরের পদ থেকে পদত্যাগ করলেও মি. কবির বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক হিসেবে বহাল আছেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একজন, ভেটেরিনারি মেডিসিনের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী সুমাইয়ার রশীদ বলছেন, “শুরু থেকে আমাদের একটাই দাবি যে আমরা ভিসির পদত্যাগ চাই। তিনি শিক্ষার্থীদের সাথে যে অন্যায় আচরণ করে এসেছেন, এছাড়া বিভিন্ন সময়ে উনি ফেসবুকে লেখালেখি বা তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের অন্যায়ভাবে বহিষ্কার করেছেন। তার প্রতিবাদে আমরা এই দাবিটা নিয়ে এসেছি।”
বাংলা বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্রী তন্বী সাহা বলছেন, “শুধু যে জিনিয়াকে বহিষ্কারের জন্য এই আন্দোলন হচ্ছে সেটা নয়। বহিষ্কার এর আগেও হয়েছে যেগুলো ধামাচাপা পরে গেছে। অনেকের বাবা মাকে অপমান করা হয়েছে। আমরা সবার জন্য আন্দোলন করছি। আন্দোলন দমানোর জন্য আমাদের সহপাঠীদের বাইরের সন্ত্রাসীদের দ্বারা পেটানো হয়েছে।”
শিক্ষার্থীদের উপর হামলার আদেশ দিয়েছেন এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক খোন্দকার মোঃ নাসিরউদ্দীন। তিনি বলেছেন, “এটার প্রশ্নই আসে না। এর কোন ডকুমেন্ট, প্রমাণ সে (মোঃ. হুমায়ুন কবির) কী দেখাতে পারবে?”
তিনি আরও বলছেন, “দুই কিলোমিটার দূরে হয়েছে ঘটনা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরেও না। কোনভাবে আমার উপর দোষ চাপানো অন্যায়। কারা যে করেছে সেটা আমার জানার কোন প্রশ্নই আসে না।”
এটি আন্দোলনকে উস্কে দেয়ার চেষ্টা হতে পারে বলে উল্লেখ করে তিনি বলছেন, “এটা হয়তো স্যাবোটাজ। কারণ ওই সময় কিন্তু দ্বিতীয় দিনে আন্দোলনটা অনেকটা স্তিমিত-ভাব পরিলক্ষিত হয়েছে। এটা করাতে তারপর দেখা গেলো আবার ওরা চাঙ্গা হয়ে গেছে।”
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।