জুমবাংলা ডেস্ক : ১৩ বছর আগে পটুয়াখালীর দশমিনায় ৮ বছরের শিশুপুত্র শাকিল হোসেন হত্যা মামলায় পিতা ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত শহিদ রাড়ীর সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
একইসঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ছয় বিচারপতির বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) এ রায় দেন। এতে শহিদ রাড়ীকে অবিলম্বে কনডেম সেল থেকে বের করে সাধারণ সেলে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাকে সাজার ক্ষেত্রে রেয়াদ সংক্রান্ত আইনের সব সুবিধা দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নিহত শিশুর পিতা শহিদ রাড়ীর পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দিন মোল্লা। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ।
মামলার শুনানিকালে আদালত বলেন, একটি সন্তানের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ হাত হলো তার পিতা-মাতার হাত। অথচ এই আসামি অন্যকে ফাঁসানোর জন্য নিজের পুত্রকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। সে একজন পাষণ্ড পিতা। এরকম ব্যক্তি সমাজের জন্য হুমকি।
জানা যায়, প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় সিডরে নিজের বাড়ি-ঘর ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় শ্বশুরবাড়িতে আশ্রয় নেন শহিদ রাড়ী। পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার চরগুনি গ্রামের শশুরবাড়িতেই ঘরজামাই হিসেবে থাকতে থাকেন। এ অবস্থায় শশুরবাড়ি থেকে অন্য ভায়রার টাকা চুরির অভিযোগে শহিদ রাড়ীকে মারধর করা হয়। এর জের ধরে রাগে-ক্ষোভে নিজের ছেলেকে দুই কিলোমিটার দূরে নিয়ে ২০০৮ সালের ২২ মে রাতে হত্যা করেন শহিদ রাড়ী।
এরপর বাড়িতে ফিরে স্ত্রীকে চাপ দেন ছেলের জন্য। এ অবস্থায় পরদিন ছেলের লাশ উদ্ধার হওয়ায় শহিদ রাড়ীকে আটক করে পুলিশে দেওয়া হয়। ওইদিন ২৩ মে মামলা হয়। পরদিনই হত্যার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন শহিদ রাড়ী। এরপর পুলিশ ওই মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করে।
এ মামলায় পটুয়াখালীর আদালত ২০০৯ সালের ১৪ মে শহিদ রাড়ীকে মৃত্যুদণ্ড দেন। রায় অনুমোদনের জন্য হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স পাঠানো হয়। আর নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন আসামি। উভয় আবেদনের ওপর শুনানি শেষে ২০১৪ সালের ১৮ জুন হাইকোর্ট শহিদ রাড়ীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন শহিদ রাড়ী। আপিলের ওপর শুনানি শেষে শহিদ রাড়ীর সাজা কমিয়ে আজ মঙ্গলবার রায় দিলেন আপিল বিভাগ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।