আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সার্ভেইলেন্স ভিডিওতে দেখা গেছে, বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত নিহত আমেরিকান ফাহিম সালেহর সহকারি টাইরেজ হ্যাসপিল ইলেকট্রিক করাত কিনেছিলেন৷ এছাড়া ফ্লোর পরিষ্কার করার জিনিসপত্রও কেনেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের তদন্তকারীদের বরাত দিয়ে শনিবার খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এপি।
৩৩ বছর বয়সী বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত কোটিপতি ফাহিম সালেহকে গত সোমবার নিউইয়র্কের ম্যানহাটানের নিজস্ব বিলাসবহুল বাসভবনে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। তার মাথা ও শরীরের অংশগুলো কেটে আলাদা করে করা ছিল৷ ফাহিমের এক বোন তার লাশ উদ্ধার করেন।
আসামী হ্যাসপিলের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ডিগ্রি হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। হ্যাসপিল অবশ্য নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। তবে আদালত তাকে জামিন দেননি।
সোমবার বিকেলে তদন্তকারীরা সিকিউরিটি ক্যামেরার ভিডিও উদ্ধার করেন। সেখানে দেখা যায়, ফাহিমের পেছন পেছন হ্যাসপিল (পরে চিহ্নিত) লিফট দিয়ে ওঠেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, দুই বেডরুমের বিলাসবহুল ফ্ল্যাটটিতে এরপর ফাহিমকে একটি স্টানগান দিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়। মঙ্গলবার একটি হার্ডওয়্যার স্টোরের ফুটেজে দেখা যায়, সেদিন সকালে হ্যাসপিল একটি ইলেকট্রিক করাত ও ঘর পরিষ্কার করার পণ্য কিনছিলেন।
হ্যাসপিলের অ্যাটর্নির যুক্তি, যেহেতু এই ২১ বছর বয়সী যুবকের আগের কোনো অপরাধের রেকর্ড নেই, তাই অভিযোগের বাইরেও ঘটনা থাকতে পারে।
‘আমরা এখনো খুব প্রাথমিক পর্যায়ে আছি। এই মামলা দীর্ঘসূত্রী ও জটিল হবে,’ বিবৃতি দেন হ্যাসপিলের আইনজীবীদের সংগঠন লিগ্যাল এইড সোসাইটির দুই অ্যাটর্নি স্যাম রবার্টস ও নেভিল মিশেল।
ফাহিমের ঘাড় ও গলায় পাঁচটি কোপের দাগ পাওয়া গেছে। এছাড়া কাঁধে ও বাঁ হাতে আঘাতের চিহ্ন আছে। আদালতে জমা দেয়া প্রতিবেদন অনুযায়ী, তার হাঁটুর ঠিক নীচে থেকে, কাঁধ ও গলা থেকে কেটে ফেলা হয়েছে।
নিজের যোগ্যতা, নিষ্ঠা ও পরিশ্রম দিয়ে অতি অল্প বয়সে সাফল্য পান কোটিপতি ফাহিম। তিনি বাংলাদেশের জনপ্রিয় রাইড শেয়ারিং কোম্পানি পাঠাওয়ের একজন প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। পরবর্তীতে নাইজেরিয়ায় গোকাডা নামে একটি রাইড শেয়ারিং কোম্পানিও প্রতিষ্ঠা করেন। যুক্তরাষ্ট্রের বেন্টলি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে। ডিজিটাল স্টার্টআপ নিয়ে কাজ করতেন শুরু থেকেই। তিনি ছিলেন টেক মিলিওনেয়ার। যে বাড়িটিতে তিনি থাকতেন তার দাম কয়েক লাখ ডলার।
সহকারি হ্যাসপিল তার আর্থিক বিষয়গুলো দেখতেন। ধারণা করা হচ্ছে, ফাহিমের অনেকগুলো টাকা নয়ছয় করেছিলেন হ্যাসপিল। সেগুলো নিয়ে দ্বন্দ্ব থেকেই এই হত্যা করা হতে পারে।
ম্যানহাটানের তদন্ত পুলিশ বিভাগের প্রধান রডনি হ্যারিসন মঙ্গলবার প্রেস কনফারেন্সে বলেন, ‘মনে করা হচ্ছে, অপরাধের শিকার ব্যক্তির অভিযুক্তের কাছে বড় অঙ্কের অর্থ পাওনা ছিল।’ এই ঘটনায় আর কেউ জড়িত ছিল কি না তাও খুঁজে দেখা হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।