জুমবাংলা ডেস্ক : অবিরাম বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের পাঁচ উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে।
রবিবার দিবাগত গভীর রাত থেকে আজ মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত টানা বৃষ্টিতে জেলার সদরসহ নকলা, নালিতাবাড়ী, শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতীর নিম্নাঞ্চলের শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়ে প্রায় লাখো মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। পাশাপাশি বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
এছাড়া বন্যার পানি প্রবেশ করায় ঝিনাইগাতী ও শেরপুর সদর উপজেলার ৪২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
ঝিনাইগাতী সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন বলেন, উপজেলার চারটি ইউনিয়নের প্রায় ২৫টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ফলে ঝিনাইগাতী সদর, ধানশাইল, মালিঝিকান্দা ও হাতিবান্ধা ইউনিয়নের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবন-যাপন করছে।
বাড়িতে পানি উঠায় চুলা জ্বালাতে পারছেন না প্লাবিত এলাকার মানুষ। শুকনো খাবার খেয়েই দিন পার করছেন তারা।
আর পাহাড়ি ঢলের পানির প্রবল তোড়ে মহারশি নদীর বাঁধের পূর্ব দিঘিরপাড় এলাকায় ১৫০ মিটার অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছে। যে কোন সময় এটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। তবে ভাঙনরোধে স্থানীয় এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কাজ করছে। বন্যায় তার ইউনিয়নের দিঘিরপাড়, সুরিহারা, কালিনগর, সারিকালিনগর, দড়িকালিনগর, বালিয়াগাঁও, কোনাগাঁও ও জরাকুড়া গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
ধানশাইল ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বলেন, সোমেশ্বরী নদীর পানির প্রবল তোড়ে তার ইউনিয়নের নয়াপাড়া, দাড়িয়ারপাড়, কান্দুলী, মাঝাপাড়া ও বাগেরভিটা গ্রামের অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
মালিঝিকান্দা ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, তার ইউনিয়নের আটটি গ্রামের অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। অনেক বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেছে। ফলে এলাকাবাসী নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য অন্যত্র সরে যাচ্ছে।
ঝিনাইগাতী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোফাখখারুল ইসলাম বলেন, পানি প্রবেশ করায় ৪২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখা হয়েছে।
নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবেল মাহমুদ বেশ কয়েকটি এলাকা পরিদর্শন করে বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ১০ মেট্রিক টন খয়রাতি (জিআর) চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া যাদের বাড়িঘর ক্ষতি হয়েছে তাদেরকে অর্থ সহায়তা প্রদান করা হবে।
এ ব্যাপারে শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেঁজুতি ধর বলেন, বন্যার্ত এলাকার মানুষের খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে ত্রাণের ব্যবস্থা করা হবে।
নকলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদুর রহমান বলেন, নদী ভাঙনে জানমাল রক্ষায় সতর্ক থাকার জন্য ভাঙন কবলিত এলাকার লোকজনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সম্ভব হলে অন্যত্র বাড়িঘর সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। সেই সাথে ভাঙনের বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তাসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।