লাইফস্টাইল ডেস্ক : স্বাস্থ্য সকল সুখের মূল। কথাটি অনেকেই শুনেছেন। স্বাস্থ্য ভালো থাকলে দৈনন্দিন জীবনেও সবকিছু সহজ হয়ে যায়। শরীরে সহজে কোনো রোগ হয়না। আজকে আমরা জানবো এমন কিছু অভ্যাসের কথা যেখানে একজন সুপার-হেলদি অর্থাৎ ভালো স্বাস্থ্যের অধিকারী মানুষ নিয়মিত করেন।
সকালের নাস্তা

সকালের নাস্তা অনেক দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এর কারণে পরিপাক এবং পরে অতিরিক্ত খাওয়া থেকে আপনাকে বিরত রাখে সকালের খাবার। গবেষণা বলছে, যারা সকালে নাস্তা করেন তারা অন্যান্যদের তুলনায় ভালো কাজ করেন। যেসব শিশু সকালে নাস্তা করে তারা সাধারণত টেস্টে ভালো নাম্বার পায়। যদি সকাল সকাল প্লেটভর্তি ব্রেকফাস্টে আপনার অনীহা থেকে থাকে তবে একটা গ্রানোলা বার কিংবা কয়েকটি ফলের টুকরোয় আপনার ডায়েট সাজিয়ে নিন। তবে অবশ্যই সকালের নাস্তা বাদ দেবেন না।
ডায়েট প্ল্যান তৈরি করুন

একটি দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যকর ডায়েট প্ল্যান আপনার সময় এবং অর্থ দুটোই বাঁচিয়ে দেয়। সময় নিন, বসে ভাবুন আপনার লক্ষ্য এবং প্রয়োজনটা মূলত কি। আপনি কি ওজন কমাতে চাচ্ছেন? তাহলে চিনি বা চর্বি জাতীয় খাবার, কার্বোহাইড্রেট ইত্যাদি কমিয়ে ডায়েটে যুক্ত করুন প্রোটিন বা ভিটামিন জাতীয় খাবার।
মূলত স্বাস্থ্যকর ডায়েট প্ল্যান আপনাকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। আপনি জানেন কি এবং কখন খাচ্ছেন। এতে করে অফিসের ব্রেক টাইমে আর ভুলভাল ভাজাপোড়া কিংবা পেস্ট্রি, ডোনাট খাওয়ার সুযোগটা থাকেনা।
পর্যাপ্ত পানি পান করুন

পানির অপর নাম জীবন। পর্যাপ্ত পানি পান শুধু আপনার শরীরই সুস্থ রাখে না সেই সাথে যত্ন নেয় আপনার ত্বক ও চুলেরও। এছাড়া পর্যাপ্ত পানি পান কিন্তু আপনার ওজন হ্রাসেও সাহায্য করে। আরো একটি লোভনীয় কারণ বলবো যাতে করে আপনি পানি খেতে আগ্রহী হোন? চিনিযু্ক্ত যোকোন পানীয় স্থূলতা এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিসের কারণ হতে পারে। তাই প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করুন এবং সুস্থ থাকুন। যদি সাধারণ পানি পান করতে একেবারেই ভালো না লাগে সেক্ষেত্রে এক টুকরো কমলা, শসা, লেবু কিংবা তরমুজের টুকরো যুক্ত করতে পারেন।
অফলাইন থাকুন

আজকাল ইন্টারনেট ছাড়া দুটো মিনিট ভাবাই যায়না। দু মিনির পর পর মেইল কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ায় আপডেটেট থাকতে না পারলে যেন হাঁসফাঁস লাগতে থাকে। কিন্তু সত্যিই কি প্রয়োজন আছে কে কোথায় আছে কিংবা কোন কাজিন কখন কোথায় ডিনার করছে সে তথ্যের খোঁজ খবর প্রতিটা মুহূর্তে রাখবার। বরং ফোনটা রেখে দিন নির্দিষ্ট কিছু সময়। ইন্টারনেটের জগত থেকে কিছুক্ষণ মুক্ত রাখুন চোখ আর মগজকে। একটু হাঁটাহাঁটি করুন কিংবা বই পড়ুন বা করুন টুকটাক ঘরের কাজ। দেখবেন সতেজ লাগছে।
নতুন কিছু শিখুন

নতুন দক্ষতা অর্জন আপনার মস্তিষ্ককে সতেজ রাখতে সাহায্য করে। নাচের ক্লাস কিংবা সৃজনশীল লেখালেখির ওয়ার্কশপে অংশ নিতে পারেন। কিংবা শিখে নিন নতুন একটা ভাষা। এতে করে আপনার বার্ধক্যের লক্ষণগুলো ধীরে প্রকাশিত হবে বা আলঝেইমারের মতো রোগের প্রভাবও কমিয়ে দেয় এই মানসিক চর্চা।
ধূমপান থেকে বিরত থাকুন

আপনি যদি ধূমপায়ী হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে সুস্বাস্থ্যের দিকে এগিয়ে যেতে সব থেকে প্রথমে আপনি ধূমপান ছেড়ে দিন। এতে আপনি অত্যন্ত দ্রুত সুস্বাস্থ্যের দিকে এগিয়ে যাবেন। সিগারেট শেষ করার ২০ মিনিটের মাথায় আপনার হৃৎস্পন্দন এবং রক্তচাপ কমে যায়। তাহলে? আর কিসের অপেক্ষা। আজই ত্যাগ করুন এই অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস।
সঠিক সময়ে ঘুমাতে যান

সুস্থ থাকতে হলে পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করা ভীষণ জরুরি। ভালো ঘুম আপনাকে ভালো মেজাজ, স্মৃতিশক্তি এবং লক্ষ্যতে অটুট থাকতে সাহায্য করে। পর্যাপ্ত ঘুম আপনার হৃদরোগের ঝুঁকিও কমায়। সবথেকে ভালো হয়, একটি রুটিন তৈরি করুন। রুটিন অনুযায়ী ঘুমাতে যান এবং প্রতিদিন একি সময়ে ঘুম থেকে উঠুন।
মাসলসকে শক্তিশালী করুন

নিয়মিত শরীরচর্চায় আপনার মাসলস শক্তিশালী হয়ে উঠবে। এতে আপনার ক্যালরিও পুড়বে ফলশ্রুতিতে আপনি ফিট শরীরের অধিকারী হবেন সেইসাথে আপনার হার্ট থাকবে সুস্থ।
শরীরচর্চায় বিরতি নিন

মাঝে মাঝে বিরতি দিন নিজেকে শরীরচর্চা থেকে। এক কাপ কফি নিয়ে বসুন, কিছুক্ষণ প্রাণায়াম করুন। এটি আপনার শরীর এবং মন উভয়কেই ভালো রাখবে। চেষ্টা করুন সপ্তাহে পাঁচদিন হাঁটাহাঁটি করতে। এতে আপনি সতেজ অনুভব করবেন।
বাইরে ঘুরে আসুন

সারাদিন কাজে আটকে না থেকে একটু ঘুরে আসুন। রোদে কয়েক মিনিট হাঁটুন এতে করে আপনার শরীরে ভিটামিন-ডি এর চাহিদাও পূরণ হবে। এছাড়াও আপনার মনও ভালো থাকবে এতে সেইসাথে হার্টের সুস্থতাও বজায় থাকবে৷ সম্ভব হলে পার্কে বা সবুজে হাঁটবার চেষ্টা করুন এতে করে আপনার শান্ত ও সুন্দর থাকবে।
ভারসাম্য রাখুন

ভারসাম্য বজায় রাখুন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে। ভারসাম্য বজায় রাখতে আপনি যোগব্যায়াম করতে পারেন। এটি ভীষণভাবে সাহায্য রাখবে আপনাকে শারীরিক এবং মানসিকভাবে ভারসাম্য বজায় রাখতে।
মনোযোগী হোন

মেডিটেশন আপনাকে মনোযোগী হতে সাহায্য করতে পারে। গবেষণা বলে নিয়মিত চার সপ্তাহের ধ্যান আপনার মস্তিষ্কের আবেগ, শেখার এবং স্মৃতিশক্তি সম্পর্কিত অংশগুলো পরিবর্তন করে। যেকোনো কাজই আপনার মস্তিষ্কের জন্য ভালো হয় যদি সেটি আপনি সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে করেন। এটি আপনার মস্তিষ্ককে সচল এবং সুস্থ রাখে। তাই চেষ্টা করুন যেকোনো কাজ মনোযোগ দিয়ে করতে, এমনকি সেটি যদি থালাবাসন ধোয়াও হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।